Page 12

বুখারী শরীফ

পরিচ্ছদঃ ৬৬/ হাত ও মাথার ইশারায় মাসয়ালার জবাব দান

৮৪। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, হাজ্জের (হজ্জ) সময় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে (নানা বিষয়ে) জিজ্ঞাসা করা হল। কোন একজন বললঃ আমি কঙ্কর নিক্ষেপের পূর্বেই যবেহ করে ফেলেছি। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাত দিয়ে ইশারা করে বললেনঃ কোন অসুবিধা নেই। আর এক ব্যাক্তি বললঃ আমি যবেহ করার পূর্বে মাথা মুড়িয়ে ফেলেছি। তিনি হাত দিয়ে ইশারা করলেনঃ কোন অসুবিধা নেই (যেহেতু ভুলবশতঃ করা হয়েছে)।

পরিচ্ছদঃ ৬৬/ হাত ও মাথার ইশারায় মাসয়ালার জবাব দান

৮৫। মাক্বী ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ (শেষ যামানায়) ইল্‌ম তুলে নেওয়া হবে, অজ্ঞতা ও ফিতনার প্রসার ঘটবে এবং হারাজ বেড়ে যাবে। জিজ্ঞাসা করা হল, ইয়া রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! হারাজ কি? তিনি হাত দিয়ে ইশারা করে বললেনঃ এ রকম। যেন তিনি এর দ্বারা হত্যা বুঝিয়েছিলেন।

পরিচ্ছদঃ ৬৬/ হাত ও মাথার ইশারায় মাসয়ালার জবাব দান

৮৬। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) আসমা (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি আয়িশা (রাঃ) এর কাছে এলাম, তিনি তখন সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করছিলেন। আমি বললাম, মানুষের কি হয়েছে? তিনি আকাশের দিকে ইঙ্গিত করলেন (দেখ, সূর্য গ্রহণ লেগেছে)। তখন সকল লোক (সালাত (নামায/নামাজ) কুসূফ আদায়ের জন্য) দাঁড়িয়ে রয়েছে। আয়িশা (রাঃ) বললেন, সুবহানাল্লাহ্! আমি বললাম, এটা কি কোন নিদর্শন? তিনি মাথা ইশারা করলেন, হ্যাঁ। এরপর আমি (সালাত (নামায/নামাজ)) দাঁড়িয়ে গেলাম। এমনকি (সালাত (নামায/নামাজ) এত দীর্ঘ ছিল যে,)আমার বেহুঁশ হয়ে পড়ার উপক্রম হল। তাই আমি মাথায় পানি ঢালতে লাগলাম। পরে (সালাত (নামায/নামাজ) শেষে) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর হাম্‌দ ও সানা বর্ণনা করলেন। এরপর বললেনঃ যা কিছু আমাকে ইতিপূর্বে দেখানো হয়নি, তা আমি আমার এ স্থানেই দেখতে পেয়েছি। এমনকি জান্নাত এবং জাহান্নামও দেখেছি। এরপর আল্লাহ্ তাআলা আমার কাছে ওহী প্রেরণ করলেন, তোমাদেরকে কবরের মধ্যে পরীক্ষা করা হবে দাজ্জালের ন্যায় (কঠিন) পরীক্ষা অথবা তার কাছাকাছি। ফাতিমা (রাঃ) বলেন, আসমা (রাঃ) (অনুরূপ) শব্দ বলেছিলেন, না - (কাছাকাছি) শব্দ, তা ঠিক আমার মনে নেই। (কবরের মধ্যে) বলা হবে, এ ব্যাক্তি সম্পর্কে তুমি কি জানো? তখন মুমিন ব্যাক্তি বা মুকিন (বিশ্বাসী) ব্যাক্তি [ফাতিমা (রাঃ) বলেন] আসমা (রাঃ) এর কোন্ শব্দটি বলেছিলেন ঠিক আমার মনে নেই, বলবে তিনি মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম , তিনি আল্লাহর রসূল। আমাদের কাছে মুজিযা ও হিদায়ত নিয়ে এসেছিলেন। আমরা তা গ্রহণ করেছিলাম এবং তাঁর অনুসরণ করেছিলাম। তিনি মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তিনবার এরূপ বলবে। তখন তাকে বলা হবে, আরামে ঘুমাও, আমরা জানতে পারলাম যে, তুমি (দুনিয়ায়) তাঁর ওপর বিশ্বাসী ছিলে। আর মুনাফিক অথবা মুরতাব (সন্দেহ পোষণকারী) ফাতিমা বলেন, আসমা কোনটি বলেছিলেন, আমি ঠিক মনে করতে পারছি না- বলবে, আমি কিছুই জানিনা। মানুষকে (তাঁর সম্পর্কে) কি যেন বলতে শুনেছি, তাই আমিও তাই বলেছি।

পরিচ্ছদঃ ৬৭/ আবুল কায়েস গোত্রের প্রতিনিধি দলকে ঈমান এবং ইলমের হিফাজত করা এবং পরবর্তীদেরকে তা অবহিত করার বাপারে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উৎসাহ দান ।

৮৭। মুহাম্মদ ইবনু বাশ্‌শার (রহঃ) আবূ জামরা (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি ইবনু আব্বাস (রাঃ) ও লোকদের মধ্যে দোভাষীর কাজ করতাম। একদিন ইবনু আব্বাস (রাঃ) বললেন, আবদুল কায়স গোত্রের প্রতিনিধি দল রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এলে, তিনি বললেনঃ তোমরা কোন্ প্রতিনিধি দল? অথবা বললেনঃ তোমরা কোন্ গোত্রের? তারা বলল, রাবীআ গোত্রের। তিনি বললেনঃ মারহাবা। এ গোত্রের প্রতি অথবা এ প্রতিনিধি দলের প্রতি, এরা কোনরূপ অপদস্থ না হয়েই এসেছে। তারা বলল, আমরা বহু দূর থেকে আপনার কাছে এসেছি। আর আমাদের ও আপনার মাঝে রয়েছে কাফিরদের এই মুযার গোত্রের বাস। আমরা শাহ্‌র-ই হারাম- ছাড়া আপনার কাছে আসতে সক্ষম নই। সুতরাং আমাদের এমন কিছু নির্দেশ দিন, যা আমাদের পশ্চাতে যারা রয়েছে তাদের কাছে পৌঁছাতে এবং তার ওসীলায় আমরা জান্নাতে দাখিল হতে পারি। তখন তিনি তাদের চারটি কাজের নির্দেশ দিলেন এবং চারটি কাজ থেকে নিষেধ করলেন। তাদের এক আল্লাহর উপর ঈমান আনার নির্দেশ দিলেন। তিনি বললেনঃ এক আল্লাহর উপর ঈমান আনা কিরূপে হয় জানো? তারা বললঃ আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল ই ভাল জানেন। তিনি বললেনঃ তা হল এ সাক্ষ্য দেওয়া যে, আল্লাহ্ ছাড়া ইলাহ নেই এবং মুহাম্মদ আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম , সালাত (নামায/নামাজ) কায়েম করা, যাকাত দেওয়া এবং রমযান এর সিয়াম পালন করা আর তোমাদের গনীমাতের মাল থেকে এক-পঞ্চমাংশ দান করবে। আর তাদের নিষেধ করলেন শুকনো লাউয়ের খোল, সবুজ কলস এবং আলকাতরার পালিশকৃত পাত্র ব্যবহার করতে। শুবা বলেন, কখনও (আবূ জামরা) খেজুর গাছ থেকে তৈরী পাত্রের কথাও বলেছেন আবার তিনি কখনও ( -)এর স্থলে ( -) বলেছেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা এগুলো মনোযোগ সহকারে স্মরণ রাখ এবং তোমাদের পশ্চাতে যারা রয়েছে তাদের পৌঁছে দাও।

পরিচ্ছদঃ ৬৮/ উদ্ভূত মাসআলার জন্য সফর করা এবং নিজের পরিজনদের শিক্ষা দেওয়া ।

৮৮। মুহাম্মদ ইবনু মুকাতিল আবূল হাসান (রহঃ) উকবা ইবনুল হারিস (রাঃ) বর্ণনা করেন, তিনি আবূ ইহাব ইবনু আযীয (রহঃ)-এর কন্যাকে বিবাহ করলে তাঁর কাছে একজন স্ত্রীলোক এসে বলল, আমি উকবা (রাঃ)-কে এবং সে যাকে বিয়ে করেছে তাকে (আবূ ইহাবের কন্যাকে) দুধ পান করিয়েছি। উকবা (রাঃ) তাকে বললেনঃ আমি জানিনা যে, তুমি আমাকে দুধ পান করিয়েছ। আর (ইতিপূর্বে) তুমি আমাকে একথা জানাওনি। এরপর তিনি মদিনায় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে গেলেন এবং তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এ কথার পর তুমি কিভাবে তার সঙ্গে সংসার করবে? এরপর উকবা তাঁর স্ত্রীকে আলাদা করে দিলেন এবং সে মহিলা অন্য স্বামীর সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হল।

পরিচ্ছদঃ ৬৯/ পালাক্রমে ইলম শিক্ষা করা ।

৮৯। আবূল ইয়ামান (রহঃ) ও ইবনু ওহাব (রহঃ) উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ আমি ও আমার এক আনসারী প্রতিবেশী বনি উমায়্যা ইবনু যায়দের মহল্লায় বাস করতাম। এ মহল্লাহটি ছিল মদিনার ঊঁচু এলাকায় অবস্থিত। আমরা দুজনে পালাক্রমে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খিদমতে হাযির হাতম। তিনি একদিন আসতেন আর আমি একদিন আসতাম। আমি যেদিন আসতাম, সেদিনের ওহী প্রভৃতির খবর নিয়ে তাঁকে পৌঁছে দিতাম। আর তিনি যেদিন আসতেন সেদিন তিনি অনুরূপ করতেন। এরপর একদিন আমার আনসারী সঙ্গী তাঁর পালার দিন এলেন এবং (সেখান থেকে ফিরে) আমার দরজায় খুব জোরে করাঘাত করতে লাগলেন। (আমার নাম নিয়ে) বলতে লাগলেন, তিনি কি এখানে আছেন? আমি ঘাবড়ে গিয়ে তাঁর দিকে গেলাম। তিনি বললেন, এক বিরাট ঘটনা ঘটে গেছে [রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর স্ত্রীগণকে তালাক দিয়েছেন]। আমি তখনি (আমার কন্যা) হাফসা (রাঃ)-এর কাছে গেলাম। তিনি তখন কাঁদছিলেন। আমি বললাম, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি তোমাদের তালাক দিয়ে দিয়েছেন? তিনি বললেন, আমি জানিনা। এরপর আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে গেলাম এবং দাঁড়িয়ে থেকেই বললামঃ আপনি কি আপনার স্ত্রীদের তালাক দিয়েছেন? জবাবে তিনি বললেনঃ না। আমি তখন আল্লাহু আকবার বলে উঠলাম।

প্রথম পৃষ্ঠা আগের পৃষ্ঠা ১৩ ১৪ ১৫ ১৬ ১৭ ১৮ ১৯ পরবর্তী পৃষ্ঠা

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Thanks for your comment

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

নামাজের গুরুত্ব

নামায সব এবাদতের মধ্যে শ্রেষ্ঠ এবাদত হওয়ার পেছনে অনেক গুলো কারন রয়েছে । প্রথমতঃ নামাযরত অবস্থায় কোন পার্থিব কাজ করা যায় না । কেননা...

Popular Posts