১১৪। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম –এর সাহাবীগণের মধ্য আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) ব্যতীত আর কারো কাছে আমার চাইতে বেশী হাদীস নেই। কারণ তিনি লিখে রাখতেন, আর আমি লিখতাম না। মামার (রহঃ) হাম্মাম (রহঃ) সূত্রে আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।
১১৫। ইয়াহিয়া ইবনু সুলায়মান (রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম –এর রোগ যখন বেড়ে গেল তখন তিনি বললেনঃ ‘আমার কাছে কাগজ কলম নিয়ে এস, আমি তোমাদের এমন কিছু লিখে দিব যাতে পরবর্তীতে তোমরা ভ্রান্ত না হও। ’ ‘উমর (রাঃ) বললেন, ‘রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম – এর রোগ যন্ত্রণা প্রবল হয়ে গেছে (এমতাবস্থায় কিছু বলতে বা লিখতে তাঁর কষ্ট হবে)। আর আমাদের কাছে তো আল্লাহর কিতাব রয়েছে, যা আমাদের জন্য যথেষ্ট। ’ এতে সাহাবীগণের মধ্য মতবিরোধ দেখা দিল এবং শোরগোল বেড়ে গেল। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘তোমরা আমার কাছ থেকে উঠে যাও। আমার কাছে ঝগড়া-বিবাদ করা উচিত নয়। ’ এ পর্যন্ত বর্ণনা করে ইবনু আব্বাস (রাঃ) (যেখানে বসে হাদীস বর্ণনা করছিলেন সেখান থেকে) এ কথা বলতে বলতে বেরিয়ে গেলেন যে, ‘হায় বিপদ, সাংঘাতিক বিপদ! রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তাঁর লেখনীর মধ্যে যা বাধ সেধেছে। ’ ১ ইযখির শন জাতীয় এক প্রকার ঘাস।
১১৬। সাদাকা, ‘আমর ও ইয়াহিয়া ইবনু সা‘ঈদ (রহঃ) উম্মে সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ এক রাতে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘুম থেকে জেগে বলেনঃ সুবহানআল্লাহ! এ রাতে কতই না বিপদাপদ নেমে আসছে এবং কতই না ভান্ডার খুলে দেওয়া হচ্ছে! অন্য সব ঘরের মহিলাগণকেও জানিয়ে দাও, ‘বহু মহিলা যারা দুনিয়ায় বস্ত্র পরিহিতা, তারা আখিরাতে হবে বস্ত্রহীনা। ’
১১৭। সা‘ঈদ ইবনু ‘উফায়র (রহঃ) ‘আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর জীবনের শেষের দিকে আমাদের নিয়ে ‘ইশার সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। সালাম ফিরাবার পর তিনি দাঁড়িয়ে বললেন, তোমরা কি এ রাতের সম্পর্কে জানো? বর্তমানে যারা পৃথিবীতে রয়েছে, একশ বছরের মাথায় তাদের কেউ আর বাকী থাকবে না।
১১৮। আদম (রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ আমি আমার খালা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিণী মায়মূনা বিন্ত হারিস (রাঃ)-এর ঘরে এক রাত্রি যাপন করছিলাম। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর পালার রাতে সেখানে ছিলেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘ইশার সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে তাঁর ঘরে চলে আসলেন এবং চার রাক‘আত সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে শুয়ে পড়লেন। কিছুক্ষণ পর উঠে বললেনঃ বালকটি কি ঘুমিয়ে গেছে? বা এ ধরনের কোন কথা বললেন। তারপর (সালাত (নামায/নামাজ)) দাঁড়িয়ে গেলেন, আমিও তাঁর বাঁ দিকে গিয়ে দাঁড়ালাম। তিনি আমাকে তাঁর ডান দিকে এনে দাঁড় করালেন। তারপর তিনি পাঁচ রাক‘আত সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। পরে আরো দু’ রাক‘আত আদায় করলেন। এরপর শুয়ে পড়লেন। এমনকি আমি তাঁর নাক ডাকার শব্দ শুনতে পেলাম। এরপর উঠে তিনি (ফজরের) সালাত (নামায/নামাজ)-এর জন্য বের হলেন।
১১৯। ‘আবদুল ‘আযীয ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ লোকে বলে, আবূ হুরায়রা (রাঃ) বড় বেশী হাদীস বর্ণনা করে। (জেনে রাখ,)কিতাবে দুটি আয়াত যদি না থাকত, তবে আমি একটি হাদিসও বর্ণনা করতাম না। এরপর তিনি তিলাওয়াত করলেমঃ “আমি সেসব স্পষ্ট নিদর্শন ও পথ-নির্দেশ অবতীর্ণ করেছি মানুষের জন্য কিতাবে তা স্পষ্টভাবে ব্যক্ত করার পরও যারা তা গোপন রাখে আল্লাহ তাদেরকে লা‘নত দেন এবং অভিশাপকারিগণও তাদেরকে অভিশাপ দেয় কিন্তু যারা তওবা করে এবং নিজদিককে সংশোধন আর সত্যকে সুস্পষ্টভাবে ব্যক্ত করে, ওরাই তারা, যাদের প্রতি আমি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। ” (২:১৫৯-১৬০) (প্রকৃত ঘটনা এই যে,)আমার মুহাজির ভাইয়েরা বাজারে কেনাবেচায় এবং আমার আনসার ভাইয়েরা জমা-জমির কাজে মশগুল থাকত। আর আবূ হুরায়রা (রাঃ) (খেয়ে না খেয়ে) তুষ্ট থেকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম –এর সঙ্গে লেগে থাকত। তাই তারা যখন উপস্থিত থাকত না, তখন সে উপস্থিত থাকত এবং তারা যা মুখস্থ করত না সে তা মুখস্থ রাখত।
১২০। আবূ মুস‘আব আহমদ ইবনু আবূ বাকর (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ আমি বললাম, ‘ইয়া রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আমি আমি আপনার কাছ থেকে বহু হাদীস শুনি কিন্তু ভুলে যাই। ’ তিনি বলবেন তোমার চাঁদর খুলে ধর। আমি খুলে ধরলাম। তিনি দু’হাত অঞ্জলী করে তাতে কিছু ঢেলে দেওয়ার মত করে বললেনঃ এটা তোমার বুকের সাথে লাগিয়ে ধর। আমি তা বুকের সাথে লাগালাম। এরপর আমি আর কিছুই ভুলিনি।
১২১। ইবরাহীম ইবনুল মুনযির (রহঃ) ইবনু আবূ ফুদায়ক (রহঃ) সূত্রে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেন এবং তাতে বলেন যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর হাত দিয়ে সে চাঁদরের মধ্য (কিছু) দিলেন।
১২২। ইসমা‘ঈল (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে ইল্মের দুটি পাত্র মুখস্থ করে রেখেছিলাম। তার একটি পাত্র বিতরণ করে দিয়েছি। আর অপরটি প্রকাশ করলে আমার কন্ঠনালী কেটে দেওয়া হবে। আবূ আবদুল্লাহ (রহঃ) বলেন, হাদীসে উল্লিখিত শব্দের অর্থ খাদ্যনালী।
১২৩। হাজ্জাজ (রহঃ) জারীর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, বিদায় হাজ্জের (হজ্জ) সময় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ তুমি লোকদেরকে চুপ করিয়ে দাও, তারপর তিনি বললেনঃ ‘আমার পরে তোমরা কাফির (এর মত) হয়ে যেও না যে, একে অপরের গর্দান কাটবে। ’
প্রথম পৃষ্ঠা | আগের পৃষ্ঠা | ১৭ | ১৮ | ১৯ | ২০ | ২১ | ২২ | ২৩ | পরবর্তী পৃষ্ঠা |