চাশতের নামায

চাশতের নামায

চাশতের নামাজেরর ওয়াক্ত ও রাকাআত

সূর্য যখন আকাশে এক-চতুর্থাংশের উপরে ওঠে এবং সূর্যের তাপ প্রখর হয়, তখন থেকে দ্বিপ্রহরের পূর্ব পর্যন্ত সকাল ৯টা থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে চাশতের নামাজের সময়। ৪ হইতে ১২ রাক'আত নামাজ পড়া সুন্নাত। ইহাকে চাশতের নামাজ বলে।

চাশতের নামাজের নিয়তঃ

বাংলা নিয়তঃ

"আমি দুই রাকাআত চাশতের নামাজ আদায় করছি।'

নোটঃ

আরবীতে কিংবা বাংলায় মুখে উচ্চারণ করা জরুরী নয়, বরং যে কোনো ভাষায় মনে মনে নিয়ত করাই যথেষ্ট।

চাশতের নামাজ পড়ার নিয়ম

দুই দুই রাকাআত করে চাশতের নামাজ আদায় করা যায়। যেকোন সূরা দ্বারা এই নামাজ পড়া যায়। উভয় রাকাআতেই সূরা ফাতিহার পর অন্য সূরা মিলাতে হবে এবং আখেরী বৈঠক আত্তাহিয়্যাতু, দরুদ শরীফ ও দোয়ায়ে মাছূরা পড়ে সালাম ফিরাতে হবে।

চাশতের নামাজের ফযিলত সম্পর্কে কতিপয় হাদিস

সালাতুত দুহা বা চাশতের নামাজহযরত বুরাইদা (রাজি.) থেকে বর্ণিত নবী করীম (সা.) বলেছেন, মানুষের শরীরে ৩৬০টি জোড়া আছে। অতএব মানুষের কর্তব্য হলো প্রত্যেক জোড়ার জন্য একটি করে সাদকা করা। সাহাবায়ে কিরাম (রাজি.) বললেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ! কার শক্তি আছে এই কাজ করার? তিনি (সা.) বললেন, মসজিদে কোথাও কারো থু থু দেখলে তা ঢেকে দাও, অথবা রাস্তায় কোনো ক্ষতিকারক কিছু দেখলে সরিয়ে দাও, তবে এমন কিছু না পেলে, চাশতের দুই রাকাত নামাজই এর জন্য যথেষ্ট। এই হাদীসে চাশতের নামাজের গুরুত্ব ও মাহাত্ম্যের কথাই বুঝানো হয়েছে এবং চাশতের নামাজ ৩৬০টি সাদকার সমতুল্য। (১) আবু দাউদ শরীফ, ১ম খ-, ১৮২ পৃষ্ঠা। (২) মিশকাত শরীফ, ১ম খ-, ১১৬ পৃষ্ঠা।

হযরত আনাস ইবনে মালেক (রাজি.) থেকে বর্ণিত, নবী করীম (সা.) বলেছেন, যদি কোনো ব্যক্তি চাশতের ১২ রাকাত নামাজ আদায় করে তাহলে আল্লাহ্ তা’আলা তার জন্য বেহেশতে স্বর্ণের অট্টালিকা প্রস্তুত করে দেবেন। (১) তিরিমিযী শরীফ, ১ম খ-, ১০৮ পৃষ্ঠা। (২) মিশকাত শরীফ, ১ম খ-, ১১৬ পৃষ্ঠা।

হযরত আবু হুরায়রা (রাজিঃ) বলেন, আমার বন্ধু মুহাম্মদ (সা.) আমাকে তিনটি বিষয় আমল করার উপদেশ দিয়েছেন। (১) প্রতি মাসের প্রথম ৩ দিন রোজা রাখা, (২) চাশতের নামাজ আদায় করা, (৩) ঘুমাতে যাওয়ার পূর্বে ভিতরের নামাজ আদায় করা। (১) বুখারী শরীফ তাহাজ্জুদ অনুচ্ছেদ, অধ্যায় দুই হা. ২৭৪, (২) মুসলিম শরীফ কিতাবুস সালাত অধ্যায় ৪, হা. ১৫৬০।

যে ব্যক্তি নিয়মিত চাশতের নামাজ পড়ে তার আর্থিক অভাব-অনটন থাকতে পারে না, রিজিক বৃদ্ধি হয়। নবী করীম (সা.) মক্কা বিজয়ের দিন দুপুরের পূর্বে উম্মে হানীর গৃহে সংক্ষিপ্তভাবে দুই/দুই রাকাত করে ৮ রাকাত পড়েছিলেন। (১) তিরমিযী শরীফ, ১ম খ-, ১০৮ পৃষ্ঠা। (২) আবু দাউদ, ১ম খ-, ১৮২ পৃষ্ঠা।

চাশতের নামাজের রাকাতের সংখ্যা ২, ৪, ৮, ১২ রাকাত পর্যন্ত হাদীস গ্রন্থে পাওয়া যায়। হযরত আবু হুরায়রা থেকে বর্ণিত, নবী করীম (সা.) বলেছেন, সমুদ্রের ফেনার সমান গোনাহ্ হলে মাফ হয়ে যাবে চাশ্তের নামাজ পড়লে। (১) তিরমিযী শরীফ, ১ম খ-, ১০৮ পৃষ্ঠা। (২) ইবনে মাজাহ্, ১ম খ-, ৯৮ পৃষ্ঠা।

রাসূল সা. চাশতের নামাজ ৪ রাকাআতও আদায় করেছেন

হযরত মুয়ায রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি হযরত আয়েশা রাযি. কে প্রশ্ন করলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইশরাকের নামাজ কয় রাকাআত পড়তেন? আয়েশা রাযি. বললেন, (অধিকাংশ সময়) চার রাকাআত পড়তেন। তবে (কখনো কখনো) বেশিও পড়তেন। (শহীহ মুসলিম হাদিস নং -১৬৯৬)

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Thanks for your comment

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

নামাজের গুরুত্ব

নামায সব এবাদতের মধ্যে শ্রেষ্ঠ এবাদত হওয়ার পেছনে অনেক গুলো কারন রয়েছে । প্রথমতঃ নামাযরত অবস্থায় কোন পার্থিব কাজ করা যায় না । কেননা...

Popular Posts