Page 14

বুখারী শরীফ

৯৮। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) ইবনু আব্বাস  (রাঃ) থেকে বর্ণিত,  তিনি বলেন,  আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে সাক্ষ্য রেখে বলছি,  অথবা পরবর্তী বর্ণনাকারী আতা (রহঃ) বলেন,  আমি ইবনু আব্বাসকে সাক্ষী রেখে বলছি যে,  রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম   (ঈদের দিন পুরুষের কাতার থেকে) বের হলেন আর তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিলাল  (রাঃ)।  রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম   মনে করলেন যে,  দূরে থাকার কারনে তাঁর ওয়ায মহিলাদের কাছে পৌঁছেনি।  তাই তিনি (পুনরায়) তাঁদের নসীহত করলেন এবং দান-খয়রাত করার উপদেশ দিলেন।  তখন মহিলারা কানের দুল ও হাতের আংটি দিয়ে দিতে লাগলেন।  আর বিলাল  (রাঃ) সেগুলি তাঁর কাপড়ের আচঁলে নিতে লাগলেন।  ইসমাঈল (রহঃ) আতা (রহঃ) সূত্রে বলেন যে,  ইবনু আব্বাস  (রাঃ) বলেনঃ আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  কে সাক্ষী রেখে বলছি।

৯৯। আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) আবূ হুরায়রা  (রাঃ) থেকে বর্ণিত,  তিনি বলেনঃ একবার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  কে জিজ্ঞাসা করা হলঃ ইয়া রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম!  কিয়ামতের দিন আপনার সাফাআত লাভে কে সবচাইতে বেশি ভাগ্যবান হবে? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম   বললেন,   আবূ হুরায়রা! আমি ধারণা করেছিলাম,  এ বিষয়ে তোমার আগে আমাকে আর কেউ প্রশ্ন করবে না।  কারন আমি দেখেছি হাদীসের প্রতি তোমার বিশেষ আগ্রহ রয়েছে।  কিয়ামতের দিন আমার সাফআত লাভে সবচাইতে ভাগ্যবান হবে সেই ব্যাক্তি যে খালিস দিলে লা ইলাহা ইল্লাহ্ (পূর্ণ কালেমা তাইয়েবা) বলে।

১০০। আলা ইবনু আবদুল জব্বার (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু দীনার (রহঃ)-এর সূত্রে বির্ণিত রিওয়ায়াতে উমর ইবনু আবদুল- আযীয (রহঃ)- এর উপরোক্ত হাদীসে আলিমগণের বিদায় নেওয়া’ পর্যন্ত বর্ণিত আছে।

১০১। ইসমা‘ঈল ইবনু ‘ আবূ উওয়ায়স (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর ইবনুল ‘আস (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, আল্লাহ্ তা‘আলা বান্দার অন্তর থেকে ইল্‌ম বের করে উঠিয়ে নেবেন না; বরং আলিমদের উঠিয়ে নেওয়ার মাধ্যমেই ইল্‌ম উঠিয়ে নেবেন। যখন কোন আলিম বাকী থাকবে না তখন লোকেরা জাহিলদেরই নেতা হিসেবে গ্রহণ করবে। তাদের জিজ্ঞাসা করা হবে, তারা না জেনেই ফতোয়া দিবে। ফলে তারা নিজেরাও গোমরাহ হবে, আর অপরকেও গোমরাহ করবে। ফিরাবরী (রহঃ) বলেন, আব্বাস (রহঃ) হিশাম সূত্রেও অনুরূপ বর্ণিত আছে।

১০২। আদম (রহঃ) আবূ সা‘ঈদ খুদরী (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ মহিলারা একবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলল, পুরূষেরা আপনার কাছে আমাদের চাইতে প্রাধান্য বিস্তার করে আছে। তাই আপনি নিজে আমাদের জন্য একটি দিন ধার্য করে দিন। তিনি তাদের বিশেষ একটি দিনের ওয়াদা করলেন; সে দিন তিনি তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন এবং তাদের ওয়ায-নসীহত করলেন ও নির্দেশ দিলেন। তিনি তাদের যা যা বলেছিলেন, তার মধ্যে একথাও ছিল যে, তোমাদের মধ্যে যে স্ত্রীলোক তিনটি সন্তান আগেই পাঠাবে, তারা তার জন্য জাহান্নামের পর্দাস্বরূপ হয়ে থাকবে। তখন এক স্ত্রীলোক বলল, আর দু’টি পাঠালে? তিনি বললেনঃ দু’টি পাঠালেও।

১০৩। মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) আবূ সা‘ঈদ (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরুপ বর্ণনা করেছেন। আবদূর রহমান আল-আসবাহানী (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ এমন তিন সন্তান, যারা সাবালক হয়নি। ১ তার জীবিতাবস্থায় তিনটি সন্তান মারা গেল।

১০৪। সা‘ঈদ ইবনু আবূ মারয়াম (রহঃ) ইবনু আবূ মুলায়কা (রাঃ) বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিণী ‘আয়িশা (রাঃ) কোন কথা শুনে বুঝতে না পারলে বার বার জিজ্ঞাসা করতেন। একবার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “(কিয়ামতের দিন) যার হিসাব নেওয়া হবে তাকে আযাব দেওয়া হবে। ” ‘আয়িশা (রাঃ) বলেনঃ আমি জিজ্ঞাসা করলাম, আল্লাহ্ তা‘আলা কি ইরশাদ করেননি, (তার হিসার-নিকাশ সহজেই নেওয়া হবে) (৮৪:৮)। তখন তিনি বললেনঃ তা কেবল হিসাব পেশ করা। কিন্তু যার হিসাব পুঙ্খানুপুঙ্খরুপে নেওয়া হবে সে ধবংস হবে।

১০৫। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) আবূ সুরাইয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি ‘আমর ইবনু সা‘ঈদ (মদিনার গভর্নর)-কে বললেন, যখন তিনি মক্কায় সেনাবাহিনী প্রেরণ করছিলেন—‘ হে আমীর! আমাকে অনুমতি দিন, আমি আপনাকে এমন একটি হাদীস শোনাব, যা মক্কা বিজয়ের পরের দিন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন। আমার দু’ কান তা শুনেছে, আমার অন্তর তা স্মরণ রেখেছে, আর আমার দু’ চোখ তা দেখেছে। তিনি আল্লাহর প্রশংসা ও মহিমা বর্ণনা করে বললেনঃ মক্কাকে আল্লাহ্ তা‘আলা হারাম করেছেন, কোন মানুষ তাকে হারাম করেনি। তাই যে লোক আল্লাহর উপর এবং আখিরাতের উপর ঈমান রাখে তার জন্য সেখানে রক্তপাত করা এবং সেখানকার কোন গাছপালা কাটা হালাল নয়। কেউ যদি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম র (সেখানকার) লড়াইকে দলীল হিসেবে পেশ করে তবে তোমরা বলে দিও যে, আল্লাহ্ তা‘আলা তাঁর রাসূল) কে এর অনুমতি দিয়েছিলেন; কিন্তু তোমাদের অনুমতি দেননি। আমাকেও সে দিনের কিছু সময়ের জন্য অনুমতি দিয়েছিলেন। তারপর আগের মতো আজ আবার এর নিষেধাজ্ঞা ফিরে এসেছে। উপস্থিত ব্যাক্তিরা যেন অনুপস্থিত ব্যাক্তিদের কাছে (এ বাণী) পৌঁছে দেয়। ” তারপর আবূ সুরাইয়া (রাঃ)- কে জিজ্ঞাসা করা হল, ‘আপনার এ হাদীস শুনে ‘আমর কি বলল?’ (আবূ সুরাইয়া (রাঃ) উত্তর দিলেন) সে বললঃ ‘হে আবূ সুরাইয়া ! (এ বিষয়ে) আমি তোমার চাইতে ভাল জানি। মক্কা কোন বিদ্রোহীকে, কোন খুনের পলাতক আসামীকে এবং কোন সন্ত্রাসীকে আশ্রয় দেয় না। ’

প্রথম পৃষ্ঠা আগের পৃষ্ঠা ১৫ ১৬ ১৭ ১৮ ১৯ ২০ ২১ পরবর্তী পৃষ্ঠা

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Thanks for your comment

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

নামাজের গুরুত্ব

নামায সব এবাদতের মধ্যে শ্রেষ্ঠ এবাদত হওয়ার পেছনে অনেক গুলো কারন রয়েছে । প্রথমতঃ নামাযরত অবস্থায় কোন পার্থিব কাজ করা যায় না । কেননা...

Popular Posts