পাঁচ কালেমা

পাঁচ কালেমা

কালিমা তাইয়্যেবা

আরবি :

لآ اِلَهَ اِلّا اللّهُ مُحَمَّدٌ رَسُوُل اللّهِ

উচ্চারণ :

লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ।

বাংলা অর্থ :

আল্লাহ এক আর কোন মাবুদ নেই। হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) আল্লাহর প্রেরিত রাসূল।

ইংরেজি অর্থ :

There is none worthy of worship besides Allah, Muhammad [sallallaahu alayhi wasallam] is the messenger of Allah.

কালিমা শাহাদৎ

আরবি :

اشْهَدُ انْ لّآ اِلهَ اِلَّا اللّهُ وَحْدَه لَا شَرِيْكَ لَه، وَ اَشْهَدُ اَنَّ مُحَمَّدً اعَبْدُهوَرَسُولُه

উচ্চারণ :

আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহ্দাহু লা শারীকালাহু, ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসূলুহু।

বাংলা অর্থ :

আমি সাক্ষ্য প্রদান করছি যে, আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কোন মাবুদ নেই। তিনি এক। তাঁহার কোন অংশীদার নেই, এবং আমি আরও সাক্ষ্য প্রদান করছি যে, নিশ্চয়ই হযরত মুহাম্মদ (সঃ) আল্লাহ্র প্রেরিত বান্দা ও রাসূল।

ইংরেজি অর্থ :

I bear witness that there is none worthy of worship besides Allah. He is alone. He has no partner, and I bear witness that Muhammad is His servant and messenger.

কালিমা তামজীদ

আরবি :

اسُبْحَان لِلّه وَ الْحَمْدُ لِلّهِ وَ لآ اِلهَ اِلّا اللّهُ، وَ اللّهُ اَكْبَرُ وَلا حَوْلَ وَلاَ قُوَّة ِلَّا بِاللّهِ الْعَلِىّ الْعَظِيْم

উচ্চারণ :

সুব্হানাল্লাহি ওয়াল হামদুলিল্লাহি ওয়া লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আক্বার ওয়ালা হাওলা ক্বুয়াতা ইল্লা বিল্লাহিল্ আলিইল্ আযীম্।

বাংলা অর্থ :

মহিমা ও সকল প্রসংশা আল্লাহ্র জন্য, আল্লাহ ব্যতীত আর কোন উপাস্য নেই। আল্লাহ মহান, সর্বশক্তিমান ও সর্বক্ষমতাবান। আল্লাহ ব্যতীত আর কেউ নয়। তিনিই মহান।

ইংরেজি অর্থ :

Glory be to Allah. All praise be to Allah. There is none worthy of worship besides Allah and Allah is the Gratest. There is no power and might except from Allah, the Most High, the Great.

কালিমা তাওহীদ

আরবি :

لا الهَ اِلَّا اللّهُ وَحْدَهُ لا شَرِيْكَ لَهْ، لَهُ الْمُلْكُ وَ لَهُ الْحَمْدُ يُحْى وَ يُمِيْتُ وَ هُوَحَىُّ لَّا يَمُوْتُ اَبَدًا اَبَدًا ط ذُو الْجَلَالِ وَ الْاِكْرَامِ ط بِيَدِهِ الْخَيْرُ ط وَهُوَ عَلى كُلِّ شَئ ٍ قَدِيْرٌ ط

উচ্চারণ :

লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহ্ দাহু লা-সারিকা লা-হু লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ইউহা ই ওয়া উ মিতু বি ইয়া সি হিল খাইরু ওয়া-হু-ওয়া আ-লা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদীর।

বাংলা অর্থ :

আল্লাহ এক আর কোন মাবুদ নেই তিনি এক তার কোন অংশীদার নেই। সমস্ত সৃষ্টি জগৎ এবং সকল প্রশংসা তাঁরই। তিনি জীবন হান করেন আবার তিনিই মৃত্যুর কারণ তার হাতেই সব ভাল কিছু এবং তিনিই সৃষ্টির সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান।

ইংরেজি অর্থ :

There is none worthy of worship besides Allah who is alone. He has no partner. For him is the Kingdom, and for Him is all praise. He gives life and causes death. In His hand is all good. And He has power over everything.

কালিমায়ে রদ্দে কুফর

আরবি :

اللهم انی اعوذبک من ان یشرک بک شیئا واستغفرک ما اعلم به ومالا اعلم به تبت عنه وتبرأت من الکفر والشرک والمعاصی کلها واسلمت وامنت واقول ان لا اله الا الله محمد رسول الله صلی الله علیه وسلم

উচ্চারণ :

আল্লাহুম্মাহ ইন্নী আউযুবিকা মিন্ আন্ উশ্রিকা বিকা শাইআওঁ ওয়া আনা আ’লামু বিহী, ওয়া আস্তাগ্ফিরুকা লিমা আ’লামু বিহী, ওয়ামা লা-আ’লামু বিহী, তুব্তু আন্হু ওয়া তাবাররা’তু মিনাল কুফরি ওয়াশ্ শিরকি ওয়াল মায়াছী কুল্লিহা, ওয়া আসলামতু ওয়া আমান্তু ওয়া আক্বুলু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহি।

বাংলা অর্থ :

হে আল্লাহ্! আমি তমার নিকট আকাঙ্ক্ষা করছি যে আমি যেন কাউকে তমার সাথে শরিক না করি। আমি আমার জ্ঞাত ও অজ্ঞাত পাপ হতে ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং তা হতে তওবা করছি। কুফরী, শিরক ও অন্যান্য সব পাপ হতে দূরে থাকছি। এবং স্বীকার করছি যে, “আল্লাহ এক আর কোন মাবুদ নেই। হযরত মুহাম্মদ (সঃ) আল্লাহর প্রেরিত রাসূল।

ইংরেজি অর্থ :

O Allah, surely I do seek refuge in You from knowingly associating any partner with You, I beg Your forgiveness for the sin from which I am not aware of, I repent it and I declare myself free from infidelity, polytheism (associating any partner with Allah), telling lies and all other sins. I accept Islam and believe and declare that there is none worthy of worship besides Allah and Muhammad [sallallaahu alayhi wasallam] is the messenger of Allah.

ঈমানে মুজমাল

উচ্চারণ :

“আ-মানতু বিল্লাহি কামা হুয়া বিআসমায়িহি ওয়াসিফ জামিয়া’ আহকা-মিহি ওয়া আরকানিহী’

অর্থ :

আমি আল্লাহ তায়ালার প্রতি তাঁর সমুদয় নামের সহিত ও তাঁহার যাবতীয় গুণাবলীর সহিত ঈমান আনলাম। আর তাঁর যাবতীয় আদেশ ও বিধি-বিধান মেনে নিলাম।

ঈমান মুফাছছাল

উচ্চারণ :

“আ-মানতু বিল্লাহি ওয়ামালা-ইকাতিহী ওয়া কুতুবিহি ওয়া রুসুলিহি ওয়াল ইয়াওমিল আ-খিরি ওয়াল ক্বাদরি খায়রিহী ওয়া শাররিহী মিনাল্লা-হি তায়ালা ওয়াল বা’ছি বা’দাল মাওত।”

অর্থ :

আমি বিশ্বাস করলাম আল্লাহর উপর, তাঁর ফিরিশতাগণের উপর, তাঁর আসমানী কিতাব সমূহের উপর, তাঁর রাসুলগণের উপর, পরকালের উপর এবং তাকদীরের ভাল- মন্দের উপর, যা আল্লাহ পাকের নিকট হতে হয়ে থাকে এবং মৃত্যুর পর পূনরায় জীবিত হওয়ার উপর।

কালিমার গুরুত্ব

আবু আব্দুল্লাহ ত্বারেক ইবনে আশয়্যাম রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলল এবং আল্লাহ ব্যতীত অন্যান্য উপাস্যকে অস্বীকার করল, তার মাল ও রক্ত হারাম হয়ে গেল ও তার (অন্তরের) হিসাব আল্লাহর দায়িত্বে।’ [মুসলিম ২৩, আহমদ ১৫৪৪৮, ২৬২৭০]

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন : “যে ব্যক্তি এমতাবস্থায় মারা যায় যে সে জানে আল্লাহ ছাড়া কোন সঠিক উপাস্য নেই সে জান্নাতে যাবে।

যে ব্যক্তি সত্য-সত্যিই কায়মনোবাক্যে এ কালেমা পাঠ করবে আল্লাহ তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। আর যে ব্যক্তি মিছেমিছি এ কালেমা পাঠ করবে তা দুনিয়াতে তার জীবন ও সম্পদের হেফাজত করবে বটে, তবে তাকে এর হিসাব আল্লাহর নিকট দিতে হবে।

কালেমার ফজিলতের মধ্যে আরো হচ্ছে, এই কালেমার স্বীকৃতি দানকারীর জন্য জান্নাতের আটটি দ্বার খুলে দেয়া হবে এবং সে ইচ্ছা মত যে কোন দ্বার দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে। এ কালেমার সাক্ষ্য দানকারী এর দাবি অনুযায়ী পূর্ণভাবে কাজ না করার ফলে এবং বিভিন্ন অপরাধের ফল স্বরূপ জাহান্নামে প্রবেশ করলেও অবশ্যই কোন এক সময় জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভ করবে।

সূরা-কদর

সূরা-কদর Helal khan azom

আরবি সূরাঃ

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ إِنَّا أَنزَلْنَاهُ فِي لَيْلَةِ الْقَدْرِ وَمَا أَدْرَاكَ مَا لَيْلَةُ الْقَدْرِ لَيْلَةُ الْقَدْرِ خَيْرٌ مِّنْ أَلْفِ شَهْرٍ تَنَزَّلُ الْمَلَائِكَةُ وَالرُّوحُ فِيهَا بِإِذْنِ رَبِّهِم مِّن كُلِّ أَمْرٍ سَلَامٌ هِيَ حَتَّى مَطْلَعِ الْفَجْرِ

উচ্চারণঃ

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম।

ইন্না য় আন্যাল্না-হু ফী লাইলাতিল্ ক্বদ্র্। অমা য় আদ্র-কা মা-লাইলাতুল্ ক্বদ্র্। লাইলাতুল্ ক্বদ্রি খাইরুম্ মিন্ আল্ফি শাহ্র্ । তানায্যালুল্ মালা-য়িকাতু র্অরূহু ফীহা- বিইয্নি রব্বিহিম্ মিন্ কুল্লি আম্র্। সালা-মুন্ হিয়া হাত্তা- মাতলাই’ল্ ফাজর্।

অর্থ

পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে (শুরু করছি)

আমি একে নাযিল করেছি শবে-কদরে। শবে-কদর সমন্ধে আপনি কি জানেন? শবে-কদর হল এক হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। এতে প্রত্যেক কাজের জন্যে ফেরেশতাগণ ও রূহ অবতীর্ণ হয় তাদের পালনকর্তার নির্দেশক্রমে। এটা নিরাপত্তা, যা ফজরের উদয় পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।

সূরা আদ্ব-দ্বোহা

সূরা আদ্ব-দ্বোহা Helal khan azom

আরবি সূরাঃ

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ

وَالضُّحَى

وَاللَّيْلِ إِذَا سَجَى

مَا وَدَّعَكَ رَبُّكَ وَمَا قَلَى

وَلَلْآخِرَةُ خَيْرٌ لَّكَ مِنَ الْأُولَى

وَلَسَوْفَ يُعْطِيكَ رَبُّكَ فَتَرْضَى

أَلَمْ يَجِدْكَ يَتِيمًا فَآوَى

وَوَجَدَكَ ضَالًّا فَهَدَى

وَوَجَدَكَ عَائِلًا فَأَغْنَى

فَأَمَّا الْيَتِيمَ فَلَا تَقْهَرْ

وَأَمَّا السَّائِلَ فَلَا تَنْهَرْ

وَأَمَّا بِنِعْمَةِ رَبِّكَ فَحَدِّثْ

উচ্চারণঃ

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম।

অদ্ব্দ্বুহা-। অল্লাইলি ইযা- সাজ্বা-। মা অদ্দা‘আকা রব্বুকা অমা- ক্বলা-। অলাল্ আ-খিরাতু খাইরুল্লাকা মিনাল্ ঊলা-। অলাসাওফা ইয়ু’ত্বীকা রব্বুকা ফার্তাদ্বোয়া-। আলাম্ ইয়াজ্বিদ্কা ইয়াতীমান্ ফাআ-ওয়া-। অওয়াজ্বাদাকা দ্বোয়া-ল্লান্ ফাহাদা-। অওয়াজ্বাদাকা ‘আ-য়িলান্ ফাআগ্না-। ফাআম্মাল্ ইয়াতীমা ফালা-তাক্বর্ ্হা। অআম্মাস্ সা-য়িলা ফালা-তার্ন্হা। অ আম্মা-বিনি’মাতি রব্বিকা ফাহাদ্দিছ্।

অর্থ

পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে (শুরু করছি)

শপথ পূর্বাহ্নের, শপথ রাত্রির যখন তা গভীর হয়, আপনার পালনকর্তা আপনাকে ত্যাগ করেনি এবং আপনার প্রতি বিরূপও হননি। আপনার জন্যে পরকাল ইহকাল অপেক্ষা শ্রেয়।

আপনার পালনকর্তা সত্বরই আপনাকে দান করবেন, অতঃপর আপনি সন্তুষ্ট হবেন। তিনি কি আপনাকে এতীমরূপে পাননি? অতঃপর তিনি আশ্রয় দিয়েছেন। তিনি আপনাকে পেয়েছেন পথহারা, অতঃপর পথপ্রদর্শন করেছেন। তিনি আপনাকে পেয়েছেন নিঃস্ব, অতঃপর অভাবমুক্ত করেছেন। সুতরাং আপনি এতীমের প্রতি কঠোর হবেন না; সওয়ালকারীকে ধমক দেবেন না। এবং আপনার পালনকর্তার নেয়ামতের কথা প্রকাশ করুন।

সূরা-যিলযাল

সূরা যিলযাল Helel khan azom

আরবি সূরাঃ

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيم ِ

إِذَا زُلْزِلَتِ الْأَرْضُ زِلْزَالَهَا

وَأَخْرَجَتِ الْأَرْضُ أَثْقَالَهَا

وَقَالَ الْإِنسَانُ مَا لَهَا

يَوْمَئِذٍ تُحَدِّثُ أَخْبَارَهَا

بِأَنَّ رَبَّكَ أَوْحَى لَهَا

يَوْمَئِذٍ يَصْدُرُ النَّاسُ أَشْتَاتًا لِّيُرَوْا

أَعْمَالَهُمْ

فَمَن يَعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ خَيْرًا يَرَهُ

وَمَن يَعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ شَرًّا يَرَهُ

উচ্চারণঃ

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম।

ইযা-যুল্যিলাতিল্ র্আদ্বু যিল্যা-লাহা-। অআখ্রজ্বাতিল্ আরদু আছ্ক্ব-লাহা-। অক্ব-লাল্ ইনসা-নু মা- লাহা-। ইয়াওমায়িযিন্ তুহাদ্দিছু আখ্বা-রহা-। বিআন্না রব্বাকা আওহা-লাহা-। ইয়াওমায়িযিঁই ইয়াছ্দুরু ন্না-সু আশ্তা-তাল্ লিইয়ুরাও আ‘মা-লাহুম্। ফামাইঁ ইয়া’মাল্ মিছ্ক্ব-লা র্যারতিন্ খইরঁই ইয়ারহ্। অমাইঁ ইয়া’মাল্ মিছ্ক্ব-লা র্যারতিন্ র্শারইঁ ইয়ারহ্

অর্থ

পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে (শুরু করছি)

যখন পৃথিবী তার কম্পনে প্রকম্পিত হবে, যখন সে তার বোঝা বের করে দেবে। এবং মানুষ বলবে, এর কি হল ? সেদিন সে তার বৃত্তান্ত বর্ণনা করবে, কারণ, আপনার পালনকর্তা তাকে আদেশ করবেন। সেদিন মানুষ বিভিন্ন দলে প্রকাশ পাবে, যাতে তাদেরকে তাদের কৃতকর্ম দেখানো হয়। অতঃপর কেউ অণু পরিমাণ সৎকর্ম করলে তা দেখতে পাবে এবং কেউ অণু পরিমাণ অসৎকর্ম করলে তাও দেখতে পাবে।

সূরা-তাকাসূর

সূরা-তাকাসূর Helal khan azom

আরবি সূরাঃ

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيم

ِ

أَلْهَاكُمُ التَّكَاثُرُ

حَتَّى زُرْتُمُ الْمَقَابِرَ

كَلَّا سَوْفَ تَعْلَمُونَ

ثُمَّ كَلَّا سَوْفَ تَعْلَمُونَ

كَلَّا لَوْ تَعْلَمُونَ عِلْمَ الْيَقِينِ

لَتَرَوُنَّ الْجَحِيمَ

ثُمَّ لَتَرَوُنَّهَا عَيْنَ الْيَقِينِ

ثُمَّ لَتُسْأَلُنَّ يَوْمَئِذٍ عَنِ النَّعِيمِ

উচ্চারণঃ

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম।

আল্হা-কুমু ত্তাকা-ছুরু। হাত্তা-র্যুতুমুল্ মাক্বা-র্বি। কাল্লা-সাওফা তা’লামূনা । ছুম্মা কাল্লা-সাওফা তা’লামূন্। কাল্লা-লাও তা’লামূনা ই’ল্মাল্ ইয়াক্বীন্। লাতারায়ুন্নাল্ জ্বাহীমা ছুম্মা লাতারায়ুন্নাহা-‘আইনাল্ ইয়াক্বীন। ছুম্মা লাতুস্য়ালুন্না ইয়াওমায়িযিন্ ‘আনিন্নাঈ’ম্।

অর্থ

পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে (শুরু করছি)

প্রাচুর্যের প্রতিযোগিতা তোমাদেরকে ভুলিয়ে রেখেছে। যতক্ষণ না তোমরা কবরের সাক্ষাৎ করবে। কখনো নয়, শীঘ্রই তোমরা জানবে, তারপর কখনো নয়, তোমরা শীঘ্রই জানতে পারবে। কখনো নয়, তোমরা যদি নিশ্চিত জ্ঞানে জানতে! তোমরা অবশ্যই জাহান্নাম দেখবে; তারপর তোমরা তা নিশ্চিত চাক্ষুষ দেখবে। তারপর সেদিন অবশ্যই তোমরা নিআমত সম্পকের্ জিজ্ঞাসিত হবে।

সূরা-ত্বীন

সূরা-ত্বীন Helal khan azom

আরবি সূরাঃ

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ

وَالتِّينِ وَالزَّيْتُونِ

وَطُورِ سِينِينَ

وَهَذَا الْبَلَدِ الْأَمِينِ

لَقَدْ خَلَقْنَا الْإِنسَانَ فِي أَحْسَنِ تَقْوِيمٍ

ثُمَّ رَدَدْنَاهُ أَسْفَلَ سَافِلِينَ

إِلَّا الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ فَلَهُمْ أَجْرٌ

غَيْرُ مَمْنُونٍ

فَمَا يُكَذِّبُكَ بَعْدُ بِالدِّينِ

أَلَيْسَ اللَّهُ بِأَحْكَمِ الْحَاكِمِينَ

উচ্চারণঃ

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম।

অত্তীনি অয্যাইতূনি। অতুরি সীনীনা। অহা-যাল্ বালাদিল্ আমীন। লাক্বদ্ খলাকনাল্ ইন্সা-না ফী আহ্সানি তাক্বওয়ীম্। ছুম্মা রদাদ্না-হু আস্ফালা সা-ফিলীন। ইল্লাল্লাযীনা আ-মানূ অ‘আমিলুছ্ ছোয়া-লিহা-তি ফালাহুম্ আজরুন্ গইরু মাম্নূন্। ফামা- ইয়ুকায্যিবুকা বা’দু বিদ্দীন্। আলাইসাল্লা-হু বিআহ্কামিল্ হা-কিমীন্।

অর্থ

পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে (শুরু করছি)

কসম ‘তীন ও যায়তূন’ এর। কসম ‘সিনাই’ পর্বতের, কসম এই নিরাপদ নগরীর। অবশ্যই আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি সর্বোত্তম গঠনে। তারপর আমি তাকে ফিরিয়ে দিয়েছি হীনদের হীনতম রূপে। তবে যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকর্ম করেছে, তাদের জন্য রয়েছে নিরবচ্ছিন্ন পুরস্কার। সুতরাং এরপরও কিসে তোমাকে কর্মফল সম্পকের্ অবিশ্বাসী করে তোলে? আল্লাহ কি বিচারকদের শ্রেষ্ঠ বিচারক নন?

দোআ কুনুত

দোআ কুনুত Helal khan azom

আরবি সূরাঃ

اَللَّهُمَّ اِنَّ نَسْتَعِيْنُكَ وَنَسْتَغْفِرُكَ وَنُؤْمِنُ بِكَ

وَنَتَوَكَّلُ عَلَيْكَ وَنُثْنِىْ عَلَيْكَ الْخَيْرَ وَنَشْكُرُكَ

وَلاَ نَكْفُرُكَ وَنَخْلَعُ وَنَتْرُكُ مَنْ يَّفْجُرُكَ-اَللَّهُمَّ

اِيَّاكَ نَعْبُدُ وَلَكَ نُصَلِّىْ وَنَسْجُدُ وَاِلَيْكَ

نَسْعَى وَنَحْفِدُ وَنَرْجُوْ رَحْمَتَكَ وَنَخْشَى

عَذَابَكَ اِنَّ عَذَابَكَ بِالْكُفَّارِ مُلْحِقٌ

উচ্চারণঃ

আল্লাহুম্মা ইন্না নাসতাঈনুকা ওয়া নাসতাগ ফিরুকা ওয়ানুমিনু বিকা ওয়ানাতাওয়াক্কালু আলাইকা ওয়া নুছনী আলাইকাল খাইর। ওয়া নাসকুরুকা আলা নাক ফুরুকা ওয়ানাখলাউ উয়ানাত রুকু মাইয়্যাফযুরুকা। আল্লাহুম্মা ইয়্যাকানা বুদু ওয়ালাকা নুছালি্ল ওয়া নাস জুদু ওয়া ইলাইকা নাসয়া ওয়া নাহফিদু ওয়া নারজু রাহমাতাকা ওয়া নাখশা আজাবাকা ইন্না আজাবাকা বিলকুফফারি মূলহিক।

অর্থ

হে আল্লাহ! আমরা তোমার নিকট সাহায্য প্রার্থনা করিতেছি, তোমার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করিতেছি, তোমার ভরসা করিতেছি। তোমার নিকট ক্ষমা ভিক্ষা করিতেছি, তোমার উপর ঈমান আনিতেছি, তোমার ভরসা করিতেছি তোমার গুণগান করিতেছি এবং তোমারই কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করিতেছি। আমরা তোমাকে অস্বীকার করি না। যাহারা তোমার হুকুম অমান্য করে তাহাদের সঙ্গে আমরা সংশ্রব সংসগ্র পরিত্যাগ করি। হে আল্লাহ! আমরা তোমারই ইবাদত করি, তোমারই খেদমতে হাজির হই এবং তোমার রহমতের আশা করি ও তোমার শাস্তিকে ভয় করি। নিশ্চই তোমার আজাব অবিশ্বাসিগণ ভোগ করিবে।

দোআয়ে মাছূরা

দো'আয়ে মাছূরা Helal khan azom

আরবি সূরাঃ

اَللَّهُمَّ إِنِّيْ ظَلَمْتُ نَفْسِيْ ظُلْمًا كَثِيْرًا وَّلاَ يَغْفِرُ

الذُّنُوْبَ إِلاَّ أَنْتَ، فَاغْفِرْ لِيْ مَغْفِرَةً مِّنْ عِنْدَكَ

وَارْحَمْنِيْ إِنَّكَ أَنْتَ الْغَفُوْرُ الرَّحِيْمُ-

উচ্চারণঃ

আল্লা-হুম্মা ইন্নী যালামতু নাফ্সী যুলমান কাছীরাঁও অলা ইয়াগ্ফিরুয যুনূবা ইল্লা আন্তা, ফাগ্ফিরলী মাগফিরাতাম মিন ‘ইনদিকা ওয়ারহাম্নী ইন্নাকা আন্তাল গাফূরুর রহীম’ ।

অর্থ

‘হে আল্লাহ! আমি আমার নফসের উপরে অসংখ্য যুলুম করেছি। ঐসব গুনাহ মাফ করার কেউ নেই আপনি ব্যতীত। অতএব আপনি আমাকে আপনার পক্ষ হ’তে বিশেষভাবে ক্ষমা করুন এবং আমার উপরে অনুগ্রহ করুন। নিশ্চয়ই আপনি ক্ষমাশীল ও দয়াবান’।

তাসাহহুদ

তাসাহহুদ

আরবি সূরাঃ

اَلتَّحِيَّاتُ ِللهِ وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ، السَّلاَمُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهُ، السَّلاَمُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللهِ الصَّالِحِيْنَ، أَشْهَدُ أَنْ لاَّ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُوْلُهُ-

উচ্চারণঃ

আত্তাহিইয়া-তু লিল্লা-হি ওয়াছ্ ছালাওয়া-তু ওয়াত্ ত্বাইয়িবা-তু আসসালা-মু ‘আলায়কা আইয়ুহান নাবিইয়ু ওয়া রহমাতুল্লা-হি ওয়া বারাকা-তুহু। আসসালা-মু ‘আলায়না ওয়া ‘আলা ‘ইবা-দিল্লা-হিছ ছা-লেহীন। আশহাদু আল লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়া আশহাদু আনণা মুহাম্মাদান ‘আব্দুহূ ওয়া রাসূলুহু ।

অর্থ

যাবতীয় সম্মান, যাবতীয় উপাসনা ও যাবতীয় পবিত্র বিষয় আল্লাহর জন্য। হে নবী! আপনার উপরে শান্তি বর্ষিত হৌক এবং আল্লাহর অনুগ্রহ ও সমৃদ্ধি সমূহ নাযিল হউক। শান্তি বর্ষিত হউক আমাদের উপরে ও আল্লাহর সৎকর্মশীল বান্দাগণের উপরে। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই এবং আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ তাঁর বান্দা ও রাসূল’ (বুঃ মুঃ)।

তাকবীরে তাহরীমা

তাকবীরে তাহরীমা

ওযূ করার পর ছালাতের সংকল্প করে ক্বিবলামুখী দাঁড়িয়ে ‘আল্লা-হু আকবর’ বলে দু’হাত কাঁধ বরাবর উঠিয়ে তাকবীরে তাহরীমা শেষে বুকে বাঁধবে। অতঃপর সিজদার স্থানে দৃষ্টি রেখে বিনম্রচিত্তে নিম্নোক্ত দো‘আর মাধ্যমে মুছল্লী তার সর্বোত্তম ইবাদত শুরু করবে।-

আরবি সূরাঃ

اَللَّهُمَّ بَاعِدْ بَيْنِيْ وَبَيْنَ خَطَايَايَ كَمَا بَاعَدْتَ بَيْنَ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ اَللَّهُمَّ نَقِّنِيْ مِنَ الْخَطَايَا كَمَا يُنَقَّى الثَّوْبُ الْأَبْيَضُ مِنَ الدَّنَسِ، اَللَّهُمَّ اغْسِلْ خَطَايَايَ بِالْمَاءِ وَالثَّلْجِ وَالْبَرَد-

উচ্চারণঃ

আল্লা-হুম্মা বা-‘এদ বায়নী ওয়া বায়না খাত্বা-ইয়া-ইয়া, কামা বা-‘আদতা বায়নাল মাশরিক্বি ওয়াল মাগরিবি। আল্লা-হুম্মা নাকক্বিনী মিনাল খাত্বা-ইয়া, কামা ইউনাকক্বাছ ছাওবুল আব্ইয়াযু মিনাদ দানাসি। আল্লা-হুম্মাগ্সিল খাত্বা-ইয়া-ইয়া বিল মা-য়ি ওয়াছ ছালজি ওয়াল বারাদি’।

অর্থ

হে আল্লাহ! আপনি আমার ও আমার গোনাহ সমূহের মধ্যে এমন দূরত্ব সৃষ্টি করে দিন, যেমন দূরত্ব সৃষ্টি করেছেন পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যে। হে আল্লাহ! আপনি আমাকে পরিচ্ছন্ন করুন গোনাহ সমূহ হ’তে, যেমন পরিচ্ছন্ন করা হয় সাদা কাপড় ময়লা হ’তে। হে আল্লাহ! আপনি আমার গুনাহ সমূহকে ধুয়ে ছাফ করে দিন পানি দ্বারা, বরফ দ্বারা ও শিশির দ্বারা’।

সূরা-নাস

সূরা-নাস

আরবি সূরাঃ

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ مَلِكِ النَّاسِ إِلَٰهِ النَّاسِ مِن شَرِّ الْوَسْوَاسِ الْخَنَّاسِ الَّذِي يُوَسْوِسُ فِي صُدُورِ النَّاسِ مِنَ الْجِنَّةِ وَالنَّاسِ

উচ্চারণঃ

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম।

ক্বুল আউযুবি রাব্বিন্নাস। মালিকিন্নাস। ইলাহিন্নাস। মিন শাররিল ওয়াসওয়াসিল খান্নাস। আল্লাযি ওয়াসইউসু ফিসুদুরিন্নাস। মিনাল জিন্নাতি ওয়ান্নাস।

অর্থ

পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে (শুরু করছি)

বলুন, আমি আশ্রয় গ্রহণ করিতেছি মানুষের পালনকর্তার, মানুষের অধিপতির, মানুষের মা’বুদের তার অনিষ্ট থেকে, যে কুমন্ত্রণা দেয় ও আত্নগোপন করে, যে কুমন্ত্রণা দেয় মানুষের অন্তরে, জ্বিনের মধ্য থেকে অথবা মানুষের মধ্য থেকে।

সূরা-ইখলাস

সূরা ইখলাস

আরবি সূরাঃ

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ اللَّهُ الصَّمَد لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ وَلَمْ يَكُن لَّهُ كُفُوًا أَحَدٌ

উচ্চারণঃ

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম।

ক্বুল হুয়াল্লাহু আহাদ। আল্লাহুসসামাদ। লাম ইয়ালিদ, ওয়ালাম ইউলাদ। ওয়ালাম ইয়াকুল্লাহু কুফুয়ান আহাদ।

অর্থ

পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে (শুরু করছি)

বলুন, তিনি আল্লাহ, এক, আল্লাহ অমুখাপেক্ষী, তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং কেউ তাকে জন্ম দেয়নি এবং তার সমতুল্য কেউ নেই।

সূরা-লাহাব

সূরা-লাহাব Helal khan azom

আরবি সূরাঃ

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ تَبَّتْ يَدَا أَبِي لَهَبٍ وَتَبَّ مَا أَغْنَىٰ عَنْهُ مَالُهُ وَمَا كَسَبَ سَيَصْلَىٰ نَارًا ذَاتَ لَهَبٍ وَامْرَأَتُهُ حَمَّالَةَ الْحَطَبِ فِي جِيدِهَا حَبْلٌ مِّن مَّسَدٍ

উচ্চারণঃ

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম।

তাব্বাত ইয়াদা আবি লাহাবিউ ওয়াতাব্ব। মা আগনা আ'নহুমালুহু ওয়ামা কাসাব। সাইয়াসলা নারান যাতালাহাব। ওয়ামরা আতুহু হাম্মা লাতাল হাতাব। ফি যিদিহা হাবলুম্মিম মাসাদ।

অর্থ

পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে (শুরু করছি)

আবু লাহাবের হস্তদ্বয় ধ্বংস হোক এবং ধ্বংস হোক সে নিজে, কোন কাজে আসেনি তার ধন-সম্পদ ও যা সে উপার্জন করেছে। সত্বরই সে প্রবেশ করবে লেলিহান অগ্নিতে এবং তার স্ত্রীও-যে ইন্ধন বহন করে, তার গলদেশে খর্জুরের রশি নিয়ে।

সূরা-নাসর

সূরা নাছর

আরবি সূরাঃ

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ إِذَا جَاءَ نَصْرُ اللَّهِ وَالْفَتْحُ وَرَأَيْتَ النَّاسَ يَدْخُلُونَ فِي دِينِ اللَّهِ أَفْوَاجًا فَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ وَاسْتَغْفِرْهُ إِنَّهُ كَانَ تَوَّابًا

উচ্চারণঃ

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম।

ইজাযা আনাসরুল্লাহি ওয়াল ফাতহ। ওয়ারা আইতান্নাসা ইয়াদখুলুনা ফি-দ্বীনিল্লাহি আফওয়াজা। ফাসাব্বিহ বিহামদি রাব্বিকা ওয়াস্তাগফিরহ। ইন্নাহু কা'না তাওয়্যাবা।

অর্থ

পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে (শুরু করছি)

যখন আসবে আল্লাহর সাহায্য ও বিজয় এবং আপনি মানুষকে দলে দলে আল্লাহর দ্বীনে প্রবেশ করতে দেখবেন, তখন আপনি আপনার পালনকর্তার পবিত্রতা বর্ণনা করুন এবং তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। নিশ্চয় তিনি ক্ষমাকারী।

সূরা-ফীল

সূরা ফীল

আরবি সূরাঃ

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ أَلَمْ تَرَ كَيْفَ

فَعَلَ رَبُّكَ بِأَصْحَابِ الْفِيلِ أَلَمْ يَجْعَلْ

كَيْدَهُمْ فِي تَضْلِيلٍ وَأَرْسَلَ عَلَيْهِمْ طَيْرًا

أَبَابِيلَ تَرْمِيهِم بِحِجَارَةٍ مِّن سِجِّيلٍ

فَجَعَلَهُمْ كَعَصْفٍ مَّأْكُولٍ

উচ্চারণঃ

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম।

আলাম তারা কাইফা আ'লা রাব্বুকা বি-আসহাবিল ফীল। আলাম ইয়াজ-আ'ল কাইদাহুম ফি তাদলীল। ওয়া-আরসালা আলাইহিম তাইরান আবাবীল। তারমিহিম বিহিজা রাতিম্মিন সিজ্জিল। ফাযাআ'লাহুম কাআ'সফিম মা'কূল।

অর্থ

পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে (শুরু করছি)

আপনি কি দেখেননি আপনার পালনকর্তা হস্তীবাহিনীর সাথে কিরূপ ব্যবহার করেছেন? তিনি কি তাদের চক্রান্ত নস্যাৎ করে দেননি? তিনি তাদের উপর প্রেরণ করেছেন ঝাঁকে ঝাঁকে পাখী, যারা তাদের উপর পাথরের কংকর নিক্ষেপ করছিল। অতঃপর তিনি তাদেরকে ভক্ষিত তৃণসদৃশ করে দেন।

সূরা-ফাতিহা

সূরা ফাতিহা

আরবি সূরাঃ

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ

الْعَالَمِينَ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ مَالِكِ يَوْمِ

الدِّينِ إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ اهْدِنَا

الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ صِرَاطَ الَّذِينَ أَنْعَمْتَ

عَلَيْهِمْ غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلَا

الضَّالِّينَ

উচ্চারণঃ

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম

আলহামদুলিল্লাহি রাব্বীল আ'লামীন। আররাহমানির রাহীম। মা-লিকী ইয়াউমিদ্দ্বীন। ইয়্যাকা-না'বুদু ওয়া ইয়্যাকা নাসতায়ীন। ইহদিনাস-সিরাতাল মুসতাক্বীম। সিরাত্বাল লাযিনা আন-আ'মতা আ'লাইহিম।গাইরিল মাগদুবি আ'লাইহিম। ওয়ালাদ্দুয়াল্লীন। আমীন।

অর্থ

পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে (শুরু করছি)

যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহ তাআলার যিনি সকল সৃষ্টি জগতের পালনকর্তা।যিনি নিতান্ত মেহেরবান ও দয়ালু।যিনি বিচার দিনের মালিক।আমরা একমাত্র তোমারই ইবাদত করি এবং শুধুমাত্র তোমারই সাহায্য প্রার্থনা করি।আমাদেরকে সরল পথ দেখাও,সে সমস্ত লোকের পথ, যাদেরকে তুমি নেয়ামত দান করেছ। তাদের পথ নয়, যাদের প্রতি তোমার গজব নাযিল হয়েছে এবং যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে।

সূরা-কুরাইশ

সূরা-কুরাইশ

আরবি সূরাঃ

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ لِإِيلَافِ قُرَيْشٍ

إِيلَافِهِمْ رِحْلَةَ الشِّتَاءِ وَالصَّيْفِ

فَلْيَعْبُدُوا رَبَّ هَٰذَا الْبَيْتِ الَّذِي أَطْعَمَهُم

مِّن جُوعٍ وَآمَنَهُم مِّنْ خَوْفٍ

উচ্চারণঃ

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম।

লি ইলাফি ক্বুরাইশ; ঈলা ফিহিম রিহ লাতাশশিতা ইওয়াসসাইফ। ফাল ইয়া'বুদু রাব্বা হাযাল বাইত। আল্লাযি আত আ'মাহুম মিন যু'ঈ। ওয়া আমারাহুম মিন খাউফ।

অর্থ

পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে (শুরু করছি)

কোরাইশের আসক্তির কারণে, আসক্তির কারণে তাদের শীত ও গ্রীষ্মকালীন সফরের। অতএব তারা যেন এবাদত করে এই ঘরের পালনকর্তার যিনি তাদেরকে ক্ষুধায় আহার দিয়েছেন এবং যুদ্ধভীতি থেকে তাদেরকে নিরাপদ করেছেন।

সূরা-কাফিরুন

সূরা-কাফিরুন

আরবি সূরাঃ

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ قُلْ يَا أَيُّهَا

الْكَافِرُونَ لَا أَعْبُدُ مَا تَعْبُدُونَ وَلَا أَنتُمْ

عَابِدُونَ مَا أَعْبُدُ وَلَا أَنَا عَابِدٌ مَّا عَبَدتُّمْ

وَلَا أَنتُمْ عَابِدُونَ مَا أَعْبُدُ لَكُمْ دِينُكُمْ

وَلِيَ دِينِ

উচ্চারণঃ

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম।

ক্বুল ইয়া আইয়্যুহাল কাফিরুন। লা আ'বুদু মা তা'বুদ। ওয়ালা আনতুম আ'বিদুনা মা আ'বূদ। ওয়ালা আনা আ'বিদুম্মা আবাত্তুম। ওয়ালা আনতুম আ'বিদুনা মা আ'বুদ। লাকুম দ্বীনুকুম ওয়ালিয়াদ্বীন।

অর্থ

পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে (শুরু করছি)

বলুন, হে কাফেরকূল, আমি এবাদত করিনা, তোমরা যার এবাদত কর। এবং তোমরাও এবাদতকারী নও, যার এবাদত আমি করি এবং আমি এবাদতকারী নই, যার এবাদত তোমরা কর। তোমরা এবাদতকারী নও, যার এবাদত আমি করি। তোমাদের কর্ম ও কর্মফল তোমাদের জন্যে এবং আমার কর্ম ও কর্মফল আমার জন্যে।

সূরা-মাঊন

সূরা-মাঊন

আরবি সূরাঃ

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ أَرَأَيْتَ الَّذِي

يُكَذِّبُ بِالدِّينِ فَذَٰلِكَ الَّذِي يَدُعُّ الْيَتِيمَ

وَلَا يَحُضُّ عَلَىٰ طَعَامِ الْمِسْكِينِ فَوَيْلٌ

لِّلْمُصَلِّينَ الَّذِينَ هُمْ عَن صَلَاتِهِمْ سَاهُونَ

الَّذِينَ هُمْ يُرَاءُون وَيَمْنَعُونَ الْمَاعُونَ

উচ্চারণঃ

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম।

আরা-আইতাল্লাযি ইউ কায্যাবু বিদ্দ্বীন। ফাযালিকাল লাযি ইয়াদুউ'ঊল ইয়াতীম। ওয়ালা ইয়াহুদ্দু আ'লা ত্বামিল মিসকীন। ফাইয়াও লুল্লাল-মুসাল্লীন। আল্লাযিনাহুম আ'ন সালাতিহিম সাহুন। আল্লাযিনা হুম ইউরা উন। ওয়া ইয়ামনাউ'নাল মা'ঊন।

অর্থ

পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে (শুরু করছি)

আপনি কি দেখেছেন তাকে, যে বিচারদিবসকে মিথ্যা বলে? সে সেই ব্যক্তি, যে এতীমকে গলা ধাক্কা দেয় এবং মিসকীনকে অন্ন দিতে উৎসাহিত করে না। অতএব দুর্ভোগ সেসব নামাযীর, যারা তাদের নামায সম্বন্ধে বে-খবর; যারা তা লোক-দেখানোর জন্য করে এবং নিত্য ব্যবহার্য্য বস্তু অন্যকে দেয় না।

সূরা-কাউসার

সূরা-কাউসার

আরবি সূরাঃ

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ إِنَّا أَعْطَيْنَاكَ

الْكَوْثَرَ فَصَلِّ لِرَبِّكَ وَانْحَرْ إِنَّ شَانِئَكَ هُوَ

الْأَبْتَرُ

উচ্চারণঃ

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম।

ইন্না আ'ত্বাইনা কাল কাউসার। ফাসাল্লিলি রাব্বাকা ওয়ানহার। ইন্না শা'নিয়াকা হুয়াল আবতার।

অর্থ

পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে (শুরু করছি)

নিশ্চয় আমি আপনাকে কাওসার দান করেছি। অতএব আপনার পালনকর্তার উদ্দেশ্যে নামায পড়ুন এবং কোরবানী করুন। যে আপনার শত্রু, সেই তো লেজকাটা, নির্বংশ।

তাসবীহ ও দোয়ার অর্থ

তাসবিহ ও দোয়ার অর্থ

কি বলছি, কি করছি তা কিছুই জানি না। অধিকাংশ মানুষই নামাজে যে সুরা সমুহ ও তাসবিহ গুলো পড়ছে তার অর্থ জানেনা। যার কারনে নামাজে অমনযোগী হয়। মনে হয় যে তোতা পাখির মত শুধু বলেই যাচ্ছি, কিন্তু কি বলছি কিছুই জানি না, তাহলে নামাজের মাঝে আল্লাহর প্রতি বিনয়, শ্রদ্ধা, ভয়, আত্ম-সমর্পন আসবে কিভাবে?

অথচ আল্লাহ সুবহানাতা’আলা বলেছেন

“ধবংস ওই নামাজি যে তার নামাজ সম্পর্কে বেখবর।”

নামাজে মনোযোগ আনতে হলে অবশ্যই নামাজে কি কি করছি তার অর্থ ভাল ভাবে জানতে হবে, বুঝতে হবে। অর্থ যদি জানা থাকে এবং তা লক্ষ্য করে নামায আদায় করি, তাহলে আমাদের নামায আরো সুন্দর হবে।

নিয়তঃ

“আমি কিবলামুখি হয়ে (ফজর /যোহর/আসরের ………) দুই/তিন/চার রাকাত ফরয/ওয়াজিব/সুন্নত/নফল আদায়ের উদ্দেশ্য নিয়ত করলাম” তারপর “আল্লাহু আকবার”(আল্লাহ মহান) বলে দুহাত বাধতে হবে। - শুরু হয়ে গেল নামাজ।

ছানাঃ

সুবহানাকা আল্লাহুম্মা বিহামদিকা(সমস্ত প্রশংসা পবিত্র আল্লাহ’র জন্য) ওয়াতাবারা কাসমুকা(তোমার নাম বরকতময়) ওয়াতা আলা জাদ্দুকা(তুমি মহান মর্যাদার অধিকারি) ওয়া লা ইলাহা গাইরুকা(তুমি ব্যতিত অন্য কোন উপাস্য নেই)।

তাআ’উযঃ

আউজুবিল্লাহি মিনাশ শাইতানির রাজিম (আল্লাহ’র কাছে পানাহ চাচ্ছি বিতারিত শয়তান থেকে)

তাসমিয়াঃ

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম(পরম করুনাময় আল্লাহ’র নামে শুরু করছি) তারপর সুরা ফাতিহা এবং অন্য সুরা মিলিয়ে পরতে হবে। “আল্লাহু আকবার” বলে রুকুতে যাবে।

রুকু’র তাসবিহঃ

সুবহানা রাব্বিয়াল আজিম (আমার মহান মর্যাদাশীল প্রভুর পবিত্রতা বর্ননা করছি)/( ‘আমার মহান প্রভু সকল দোষ – ত্রুটি থেকে পবিত্র।’) রুকু থেকে দাঁড়িয়ে তাসমি পাঠ করবে। তাসমিঃ সামি আল্লাহুলিমান হামিদাহ (যে আল্লাহ’র প্রশংসা করে তিনি তা শোনেন) তারপর তাহমিদঃ রাব্বানা লাকাল হামদ(সকল প্রশংসা আল্লাহ’র জন্য) তারপর সিজদা। সিজদার সময় পরিপুর্ন ভাবে খেয়াল রাখবে যে, আমি আল্লাহ’র কাছে পুর্নভাবে আত্মসমর্পন করছি।

সিজদার তাসবিহঃ

সুবহানা রাব্বিয়াল আ’লা (আমার শ্রেষ্ঠ প্রতিপালকের পবিত্রতা বর্ননা করছি) দুই সাজদার মধ্যবর্তী দু’আ: আল্লাহু ম্মাগ ফিরলী ওয়ার হামনি ওয়ার যুক্কনী

অর্থ :

‘আয় আল্লাহ ! আমাকে মাফ করে দাও, আমার প্রতি দয়া করো, আমাকে সঠিক পথে চালাও, আমাকে সুস্থ রাখো এবং আমাকে জীবিকা দান করো।’

এভাবে নামাজের দু’রাকাত শেষে তাশাহুদ এবং চার রাকাত শেষে তাশাহুদের সাথে দুরুদ শরিফ ও দুয়া মাছুরা পরতে হয়।

তাশাহুদঃ

আত্ত্যাহ্যিয়াতু লিল্লাহি ওয়াস সালাওয়াতু ওয়াত্তায়্যিবাতু(কি মৌখিক, কি দৈহিক, কি আর্থিক সকল ইবাদাত এক মাত্র আল্লাহ’র জন্য/সমস্ত সম্মানজনক সম্বোধন আল্লাহর জন্যে। সমস্ত শান্তি কল্যাণ ও পবিত্রার মালিক আল্লাহ) আসসালামু আলাইয়কা আইয়্যহান্নবিও ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওবারাকাতুহু(হে নবী, আপনার উপর আল্লাহ’র শান্তি, রহমত ও বরকত বর্ষিত হোক) আসসালামু আলায়না ওয়া আলা ইবাদিল্লাহিস সোয়ালেহিন(আমাদের উপর এবং সৎকর্মশীল বান্দাদের উপর আল্লাহ’র শান্তি বর্ষিত হোক) আশহাদু আল লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আব্দুহু ওয়া রাসুলুহু (আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি আল্লাহ ব্যতিত অন্য কোন ইলাহ নেই,আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি মুহাম্মাদ(সাঃ) আল্লাহ’র বান্দা ও রাসুল)

দুরুদ শরীফঃ

আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিও ওয়ালা আলি মুহাম্মাদিন কামা সাল্লাইতা আলা ইব্রাহিমা ওয়ালা আলি ইব্রাহিম, ইন্নাকা হামিদুম মাজিদ। (হে আল্লাহ মুহাম্মাদ(সাঃ) ও তার বংশধরদের / অনুসারীদের উপর তোমার অনুগ্রহ বর্ষন কর যেভাবে ইব্রাহিম (আঃ) ও তার বংশধরদের উপর অনুগ্রহ করেছিলে।নিশ্চয় তুমি অতি প্রশংসিত ও মহিমান্বিত)

আল্লাহুম্মা বারিক্ আ’লা মুহাম্মাদিওঁ ওয়া আ’লা আ’লি মুহাম্মাদিন, কামা বা-রাকতা আ’লা ইব্রহীমা ওয়া আ’লা আ’লি ইব্রহীমা ইন্নাকা হামিদুম মাজীদ । (হে আল্লাহ মুহাম্মাদ(সাঃ) ও তার বংশধরদের/মুহাম্মদের অনুসারীদের উপর তোমার বরকত বর্ষন কর যেভাবে ইব্রাহিম (আঃ) ও তার বংশধরদের উপর বরকত বর্ষন করেছিলে। নিশ্চয় তুমি অতি প্রশংসিত ও মহিমান্বিত)

আল্লাহুম্মা ইন্নি যালামতু নাফসি জুল মান কাসিরাও, ওয়ালা ইয়াগ ফিরুজ্জনুবাকা, ইল্লা আন্তা ফাগফিরালি মাগফিরাতাম্মিন ইন্দিকা ওয়ারহামনি, ইন্নাকা আনতাল গাফুরুর রাহিম। (হে আল্লাহ, আমি আমার আত্মার উপর ক্ষতি সাধন করেছি, মাফ করার সাধ্য কারোর নাই (তুমি ব্যতিত), তুমি আমাকে সম্পুর্নরুপে মাফ করে দাও ও দয়া করো, নিশ্চয়ই তুমি পরম ক্ষমাশীল ও দয়ালু)

দু’আ কনূত অর্থ :-

‘হে আল্লাহ,তুমি যাদেরকে সঠিক পথ দেখিয়েছো,আমাকে সঠিক পথ দেখিয়ে তাদের অন্তর্ভুক্ত করো ! যাদেরকে তুমি ক্ষমা ও সুস্থতা দান করেছো,আমাকেও ক্ষমা এবং সুস্থতা দান করে তাদের অন্তর্ভুক্ত করো। তুমি যাদের অভিভাবক হয়েছো, আমাকেও তাদের অন্তর্ভুক্ত করো ! তুমি আমাকে যা কিছু প্রদান করেছো, তাতে বরকত (প্রচুর্য )দান করো। তোমার মন্দ ফারসালা থেকে আমাকে রক্ষা করো। তুমিই তো প্রকৃত ফায়সালাকারী, আর তোমার উপর কারো ফায়সালাই চলেনা। তুমি যার অভিভাবকত্ব গ্রহণ করেছো, তাকে কেউ অপদস্ত করতে পারেনা। যে তোমার শত্রু হয়েছে তকে ইয্‌যত দান করা কারো পক্ষে সম্ভব নয়। আমাদের প্রভু, বিরাট প্রাচুর্যশীল তুমি, অতিশয় মহান তুমি !’

সুন্নাত নামাজ

সুন্নাত নামাজ

সফর ছাড়া বাড়ীতে অবস্থান কালে বারো রাকআত সুন্নাত নামায নিয়মিত আদায় করা সকল মুসলিম নর নারীর জন্য মুস্তাহাব। আর তা হল যোহরের পূর্বে চার রাকাত ও পরে দু’রাকাত। মাগরিবের পরে দু’রাকাত। এশার পর দু’ রাকাত ও ফজরের আগে দু’রাকাত।

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সফর অবস্থায় যোহর, মাগরিব ও এশার সুন্নত ছেড়ে দিতেন। তবে ফজরের সুন্নত ও বিতরের নামায সফর অবস্থায়ও নিয়মিত আদায় করতেন। আর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের জন্য উত্তম আদর্শ। ইরশাদ হয়েছে-

لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ 

অর্থ:

“নিশ্চয় আল্লাহর রাসূলের জীবনে তোমাদের জন্য রয়েছে উত্তম আদশ।” (সূরা আল আহযাব, আয়াত :২১)

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:

صَلُّوا كَما رَأَيْتُمُوني أُصَلِّي

অর্থ:

“তোমরা আমাকে যেভাবে নামায পড়তে দেখেছ ঠিক সেভাবে নামায পড়”। (বুখারী)

আল্লাহই তাওফিক দাতা।

وصلى الله على نبينا محمد وعلى آله

وصحبه أجمعين.

যেভাবে নামাজ আদায় করবেন

যেভাবে নামায আদায় করবেন

উল্লিখিত বিবরণ অনুযায়ী নামাযের স্থান ও শরীরের পবিত্রতা অর্জনের পর নামাযের সময় হলে নফল অথবা ফরয, যে কোন নামায পড়ার ইচ্ছা করুন না কেন, অন্তরে দৃঢ়সংকল্প নিয়ে কিব্লা অর্থাৎ পবিত্র মক্কায় অবস্থিত কাবা শরীফের দিকে মুখ করে একাগ্রতার সাথে দাঁড়িয়ে যাবেন এবং নিুবর্ণিত কর্মগুলো করবেন:

(১)

সেজদার জায়গায় দৃষ্টি রেখে তাক্বীরে তাহ্রীমা (আল্লাহু আকবার) বলবেন।

(২)

তাকবীরের সময় কান বরাবর অথবা কাঁধ বরাবর উভয় হাত উঠাবেন।

(৩)

তাকবীরের পর নামায শুরুর একটি দু’আ পড়বেন, পড়া সুন্নাত।

দু’আটি নিুরূপ:

سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ وَتَبَارَكَ اسْمُكَ

وَتَعَالَى جَدُّكَ وَلا إلَهَ غَيْرُكَ

উচ্চারণ:

সুবহানাকাল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা ওয়া তাবারাকাসমুকা ওয়া তা’আলা জাদ্দুকা ওয়া লা-ইলাহা গাইরুকা।

অর্থ:

“প্রশংসা এবং পবিত্রতা বর্ণনা করছি আপনার হে আল্লাহ! বরকতময় আপনার নাম। অসীম ক্ষমতাধর ও সুমহান আপনি। আপনি ভিন্ন আর কোন উপাস্য নেই”।

ইচ্ছা করলে উক্ত দু’আর পরিবর্তে এই দোআ পড়া যাবে:

”اَللَّهُمَّ بَاعِدْ بَيْنِي وَبَيْنَ خَطَايَايَ كَمَا

بَاعَدْتَ بَيْنَ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ، اَللَّهُمَّ نَقِّنِي

مِنْ خَطَايَايَ كَمَا يُنَقَّى الثَّوْبُ الأَبْيَضُ مِنَ

الدَّنَسِ، اَللَّهُمَّ اغْسِلْنِي مِنْ خَطَايَايَ بِالْمَاْءِ

وَالثَّلْجِ وَالْبَرَدِ“

উচ্চারণ:

“আল্লাহুম্মা বাইদ্ বাইনী ওয়া বাইনা খাতাইয়াইয়া কামা বা’আত্তা বাইনাল মাশরিকি ওয়াল মাগরিবি, আল্লাহুম্মা নাক্কিনী মিন খাতাইয়াইয়া কামা য়ুনাক্কাছ ছাওবুল আবইয়াযু মিনাদ্দানাসি, আল্লাহুম্মাগ্সিল্নী মিন্ খাতাইয়াইয়া বিল মায়ি ওয়াছ্ ছালজি ওয়াল বারাদি”। অর্থ: “হে আল্লাহ! আমাকে ও আমার গুনাহের মাঝে এতটা দূরত্ব সৃষ্টি করুন যতটা দূরত্ব সৃষ্টি করেছেন পূর্ব ও পশ্চিমের মাঝে। হে আল্লাহ! আপনি আমাকে ঠিক ঐভাবে পাপমুক্ত করুন যেভাবে সাদা কাপড় ময়লামুক্ত হয়। হে আল্লাহ! আপনি আমার গুনাহসমূহকে পানি দিয়ে ও বরফ দিয়ে এবং শিশির দ্বারা ধুয়ে দিন”। (বুখারী ও মুসলিম)

(৪)

তারপর বলবেন:

أَعُوْذُ باللهِِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيْمِ بِسْمِ اللّهِ

الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ

উচ্চারণ:

“আউযুবিল্লাহি মিনাশ শাইতানির রাজীম, বিসমিল্লাহির রহমানির রাহীম”।

অর্থ:

“আমি আশ্রয় চাচ্ছি আল্লাহর নিকট অভিশপ্ত শয়তান থেকে। আরম্ভ করছি দয়াবান কৃপাশীল আল্লাহর নামে।”

এর পর সূরা ফাতিহা পড়বেন:

الحمد لله رب العلمين الرحمن الرحيم

مالڪ يوم الدين اياڪ نعبد و اياڪ

نستعين اهدنا الصراط المستقيم صراط

الذين انعمت عليهم غيرالمغصوب غليهم

و لا الضلين

অর্থ:

“সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি সৃষ্টিকুলের রব। পরম করুণাময়, অতি দয়ালু। বিচার দিবসের মালিক। আপনারই আমরা ইবাদত করি এবং আপনারই নিকট সাহায্য চাই। আমাদেরকে সরল পথের হিদায়াত দিন। তাদের পথ, যাদেরকে আপনি নিয়ামত দিয়েছেন। যাদের উপর আপনার ক্রোধ আপতিত হয় নি এবং যারা পথভ্রষ্টও নয়।”

(৫)

তারপর কুরআন হতে মুখস্থ যা সহজ তা পড়বেন। যেমন:

إِذَا جَاء نَصْرُ اللَّهِ وَالْفَتْحُ * وَرَأَيْتَ النَّاسَ

يَدْخُلُونَ فِي دِينِ اللَّهِ أَفْوَاجًا * فَسَبِّحْ

بِحَمْدِ رَبِّكَ وَاسْتَغْفِرْهُ إِنَّهُ كَانَ تَوَّابًا

অর্থ:

“যখন আসবে আল্লাহর সাহায্য ও বিজয় এবং আপনি মানুষকে দলে দলে আল্লাহর দ্বীনে প্রবেশ করতে দেখবেন, তখন আপনি আপনার পালককর্তার পবিত্রতা ঘোষণা করুন এবং তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। নিশ্চয় তিনি ক্ষমাশীল।”

(৬)

তারপর আল্লাহু আকবার (আল্লাহ সবচেয়ে বড়) বলে দু হাত কাঁধ বরাবর অথবা কান বরাবর উত্তোলন করে দুই হাত হাঁটুর উপর রেখে পিঠ সোজা ও সমান করে রুকু করবেন এবং বলবেন

سُبْحَانَ رَبِّيِ الْعَظِيمِ

উচ্চারণ:

“সুবহানা রাব্বিয়্যাল আযীম (পবিত্র মহান রবের পবিত্রতা ঘোষণা করছি) এটি তিনবার অথবা তিনের অধিকবার বলা সুন্নত

(৭)

তারপর বলবেন:

”سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حَمِدَه“

“সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ” (আল্লাহ ঐ ব্যক্তিকে শুনলেন যে তাঁর প্রশংসা করল) বলে রুকু থেকে মাথা উঠিয়ে, ইমাম হোক অথবা একাকী হোক, সোজা দাঁড়িয়ে গিয়ে দু হাত কাঁধ বরাবর অথবা কান বরাবর উত্তোলন করে বলতে হবে:

”رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ حَمْداً كَثِيراً طَيِّباً مُبَارَكاً

فِيهِ مِلْءَ السَّماَوَاتِ وَمِلْءَ الأَرْضِ وَمِلْءَ

ما بَيْنَهُمَا وَمِلْءَ مَا شِئْتَ مِنْ شَيْءٍ بَعْدُ“

উচ্চারণ:

রব্বানা ওয়া লাকাল হামদু হামদান কাসীরান তাইয়্যেবান মুবারাকান ফীহ, মিল্ আস্সামাওয়াতি ওয়া মিলআলআরযি, ওয়ামিলআ মা বাইনাহুমা ওয়া মিলআ মা শী’তা মিন শাইয়িন বা’দু”।

অর্থ:

“ হে আমার প্রতিপালক! প্রশংসা আপনারই জন্য, প্রচুর প্রশংসা, যে প্রশংসা পবিত্র-বরকতময়, আকাশ ভরে, যমীন ভরে এবং এ উভয়ের মধ্যস্থল ভরে, এমনকি আপনি যা ইচ্ছে করেন তা ভরে পরিপূর্ণরূপে আপনার প্রশংসা”।

আর যদি মুক্তাদী হয় তাহলে রুকু থেকে মাথা উঠিয়ে উপরোল্লেখিত দু’আ رَبَّنَا ولَكَ الْحَمْد .... (রাব্বানা ওয়ালাকাল হামদু...) শেষ পর্যন্ত পড়বেন।

(৮)

তারপর اللهُ أَكْبَرُ (আল্লাহু আকবর) বলে বাহুকে তার পার্শ্বদেশ থেকে এবং ঊরুকে উভয় পায়ের রান থেকে আলাদা রেখে সেজদা করবেন। সেজদা পরিপূর্ণ হয় সাতটি অঙ্গের উপর, কপাল-নাক, দুই হাতের তালু, দুই হাঁটু এবং দুই পায়ের অঙ্গুলির তলদেশ। সেজদার অবস্থায় তিনবার অথবা তিন বারেরও বেশি এই দুআ পড়বেন।

سُبْحَانَ رَبِّيَ الاَعْلَى

উচ্চারণঃ

সুবহানা রাব্বিয়াল আ’লা (পবিত্রতা ঘোষণা করছি আমার মহান প্রতিপালকের) বলবেন এবং ইচ্ছা মত বেশী করে দু’আ করবেন।

(৯)

তারপর اللهُ أَكْبَرُ (আল্লাহু আকবার) বলে মাথা উঠিয়ে পা খাড়া রেখে বাম পায়ের উপর বসে দুই হাত, রান ও হাঁটুর উপর রেখে বলবেন,

اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي، وَارْحَمْنِي، وَعَافِنِي

وَارَزُقْنِي وَاهْدِنِي، وَاجْبُرْنِيْ

উচ্চারণ:

“আল্লাহুম্মাগর্ফিলী ওর্য়াহামনী ওয়া আফিনী ওয়ারজুকনী ওয়াহ্দিনী ওয়াজবুরনী”।

অর্থ:

“ হে আল্লাহ! আপনি আমাকে ক্ষমা করুন, দয়া করুন, নিরাপদে রাখুন, জীবিকা দান করুন, সরল পথ দেখান, শুদ্ধ করুন”।

(১০)

তারপর اللهُ أَكْبَر (আল্লাহু আকবার) বলে দ্বিতীয় সেজদা করবেন এবং প্রথম সেজদায় যা করেছেন তাই করবেন।

(১১)

তারপর اللهُ أَكْبَر (আল্লাহু আকবার) বলে দ্বিতীয় রাকাতের জন্য উঠে দাঁড়াবেন। (এই ভাবে প্রথম রাকাত পূর্ণ হবে।)

(১২)

তারপর দ্বিতীয় রাকাআতে সূরা ফাতিহা ও কুরআনের কিছু অংশ পড়ে রুকু করবেন এবং দুই সেজদা করবেন, অর্থাৎ পুরোপুরিভাবে প্রথম রাকাতের মতোই করবেন।

(১৩)

তারপর দ্বিতীয় রাকাতের দুই সেজ্দা থেকে মাথা উঠানোর পর দুই সাজ্দার মাঝের ন্যায় বসে তাশাহ্হুদের এই দু’আ পড়বেন:

”اَلتَّحِيَاتُ لِلَّهِ وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ،

اَلسَّلامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللَّهِ

وَبَرَكَاتُهُ، اَلسَّلامُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِاللهِ

الصَالِحِينَ، أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ وأَشهدُ

أَنَّ مُحَمَّداً عبْدُهُ وَرَسُولُهُ“

উচ্চারণ:

আত্তাহিয়্যাতু লিল্লাহি ওয়াস্সলাওয়াতু ওয়াত্তাইয়েবাতু, আস্সালামু আলাইকা আইয়ুহান্নাবিয়্যু ওয়া রহ্মাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ, আস্সালামু আলাইনা ওয়া আলা ইবাদিল্লাহিস্ সলেহীন, আশ্হাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশ্হাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসূলুহ”।

অর্থ :

“সকল তাযীম ও সম্মান আল্লাহর জন্য, সকল সালাত আল্লাহর জন্য এবং সকল ভাল কথা ও কর্মও আল্লাহর জন্য। হে নবী! আপানার প্রতি শান্তি, আল্লাহর রহমত ও তাঁর বরকত বর্ষিত হোক। আমাদের উপরে এবং আল্লাহর নেক বান্দাদের উপরে শান্তি বর্ষিত হোক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই এবং আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি মুহাম্মাদ আল্লাহর বান্দা এবং তাঁর রাসূল।” তবে নামায যদি দুই রাকাত বিশিষ্ট হয়। যেমন: ফজর, জুমআ, ঈদ তাহলে আত্তাহিয়্যাতু লিল্লাহি ..... পড়ার পর একই বৈঠকে এই দরূদ পড়বেন:

”اَللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ،

كَمَا صَلَيْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ وَعَلَى آلِ

إِبْرَاهِيمَ، إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ، وَ بَارِكْ عَلَى

مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى

إِبْرَاهِيمَ وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ

مَجِيْدٌ“

উচ্চারণ:

আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিও ওয়ালা আলি মুহাম্মাদিন কামা সাল্লাইতা আলা ইব্রাহীমা ওয়ালা আলি ইব্রাহীমা ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ, ওয়া বারিক আলা মুহাম্মাদিওঁ ওয়ালা আলি মুহাম্মাদিন কামা বারাক্তা আলা ইব্রাহীমা ওয়ালা আলি ইব্রাহীমা ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ”।

অর্থ:

“ হে আল্লাহ! আপনি মুহাম্মদ ও তার বংশধরদের উপর রহমত বর্ষণ করুন, যেরূপভাবে আপনি ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম ও তার বংশধরদের উপর রহমত বর্ষণ করেছিলেন। নিশ্চয় আপনি প্রশংসিত সম্মানিত।” আপনি মুহাম্মাদ ও তার বংশধরদের উপর বরকত বর্ষণ করুন, যেরূপভাবে আপনি ইব্রাহীম ও তার বংশধরদের উপর বরকত বর্ষণ করেছিলেন। নিশ্চয় আপনি প্রশংসিত, সম্মানিত”।

তারপর চারটি জিনিস থেকে এই বলে পানাহ চাইবেন:

”اَللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوْذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ جَهَنَّمَ،

وَمِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ، وَمِنْ فِتْنَةِ الْمَحْيَا

وَالْمَمَاتِ، وَمِنْ فِتْنَةِ الْمَسِيْحِ الدَّجَّالِ“

উচ্চারণ:

“আল্লাহুম্মা ইন্নী আউযুবিকা মিন আযাবি জাহান্নামা ওয়া মিন আযাবিল্ ক্বাবরি ওয়ামিন ফিতনাতিল মাহ্ইয়া ওয়াল্মামাতি ওয়া মিন ফিত্নাতিল মাসীহিদ্দাজ্জাল”।

অর্থ:

“হে আল্লাহ! আমি অবশ্যই আপনার নিকট জাহান্নাম ও কবরের শাস্তি থেকে আশ্রয় চাচ্ছি। দজ্জালের ফিত্না এবং জীবন মৃত্যুর ফিত্না থেকে আশ্রয় চাচ্ছি।” উক্ত দু’আর পর ইচ্ছেমত দুনিয়া ও আখিরতের কল্যাণ কামনার্থে মাস্নুন দু’আ পড়বেন। ফরয নামায হোক অথবা নফল সকল ক্ষেত্রে একই পদ্ধতি প্রযোজ্য। তারপর ডান দিকে ও বাম দিকে (গর্দান ঘুরিয়ে)

”اَلسَّلاَمُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ اللهِ“

উচ্চারণ:

“আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ” বলবেন। আর নামায যদি তিন রাকাত বিশিষ্ট হয়, যেমন মাগরিব। অথবা চার রাকাত বিশিষ্ট হয়, যেমন যোহর, আসর ও এশা, তাহলে দ্বিতীয় রাকাতের পর (সালাম না ফিরিয়ে) “আত্তাহিয়্যাতু লিল্লাহি.... পড়ার পর ‘আল্লাহু আকবার’ বলে দু হাত কাঁধ বরাবর অথবা কান বরাবর উত্তোলন করে সোজা দাঁড়িয়ে গিয়ে শুধু সূরা ফাতিহা পড়ে প্রথম দু’ রাকাতের মত রুকু ও সাজদা করতে হবে এবং চতুর্থ রাকাতেও একই পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে। তবে (শেষ তাশাহ্হুদে) বাম পা, ডান পায়ের নীচে রেখে ডান পা খাড়া রেখে মাটিতে নিতম্বের (পাছার) উপর বসে মাগরিবের তৃতীয় রাকাতের শেষে এবং যোহর, আসর ও এশার চতুর্থ রাকাতের শেষে, শেষ তাশাহ্হুদ (আত্তাহিয়্যাতু লিল্লাহ......, ও দরূদ পড়বেন। ইচ্ছে হলে অন্য দু’আও পড়বেন। এরপর ডান দিকে (গর্দান) ঘুরিয়ে (আস্সালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ” বলবেন। আর এভাবেই নামায সম্পন্ন হয়ে যাবে।

মুসাফিরের নামাজ

মুসাফিরের নামায

আল্লাহ তাআলা বলেন:

 يُرِيدُ اللّهُ بِكُمُ الْيُسْرَ وَلاَ يُرِيدُ بِكُمُ الْعُسْرَ 

অর্থ:

“আল্লাহ তোমাদের সহজ চান, কঠিন চান না।” (সূরা আল বাকারাহ, আয়াত: ১৮৫)

ইসলাম একটি সহজ ধর্ম। আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যের বাইরে কোন দায়িত্ব অর্পন করেন না এবং এমন কোন আদেশ তার উপর চাপিয়ে দেন না, যা পালনে সে অক্ষম। তাই সফরে কষ্টের আশংকা থাকায় আল্লাহ সফর অবস্থায় দুটো কাজ সহজ করে দিয়েছেন।

এক:

নামায কসর করে পড়া। অর্থাৎ চার রাকাতবিশিষ্ট ফরজ নামায দু’রাকাত করে পড়া। অতএব, ( হে প্রিয় পাঠক পাঠিকা) আপনি সফরকালে যোহর, আসর এবং এশার নামায চার রাকাতের পরিবর্তে দু’রাকাত পড়বেন। তবে মাগরিব ও ফজর আসল অবস্থায় বাকি থাকবে। এ দুটো কসর করে পড়লে চলবে না। নামাযে কসর আল্লাহর তরফ থেকে রুখসত তথা সহজিকরণ। আর আল্লাহ যা সহজ করে দেন তা মেনে নেয়া ও সে অনুযায়ী আমল করা আল্লাহর কাছে পছন্দের বিষয়। যেরূপভাবে তিনি পছন্দ করেন আযীমত (আবশ্যিক বিধান) যথার্থরূপে বাস্তবায়িত হওয়া।

পায়ে হেঁটে, জীব-জন্তুর পিঠে চড়ে, ট্রেনে, নৌযানে, প্লেনে এবং মোটর গাড়িতে সফর করার ক্ষেত্রে কোন পার্থক্য নেই। সফরের মাধ্যম যাই হোক না-কেন, নামায কসর করে পড়ার ক্ষেত্রে এর কোন প্রভাব নেই। অর্থাৎ শরীয়তের পরিভাষায় যাকে সফর বলা হয় এমন সকল সফরেই চার রাকাতবিশিষ্ট নামায কসর করে পড়ার বিধান রয়েছে।

দুই:

দুই নামায একত্র করে আদায় করা।

মুসাফিরের জন্য দুই ওয়াক্তের নামায এক ওয়াক্তে জমা করা বৈধ। অতএব, মুসাফির যোহর ও আসর একত্র করে অনুরূপভাবে মাগরিব ও এশা একত্র করে পড়তে পারবে। অর্থাৎ দুই নামাযের সময় হবে এক এবং ঐ একই সময়ে দুই ওয়াক্তের নামায আলাদা আলাদাভাবে আদায় করার অবকাশ রয়েছে। যোহরের নামায পড়ার পর বিলম্ব না করে আসরের নামায পড়বে। অথবা মাগরিবের নামায পড়ার পরেই সাথে সাথে এশার নামায পড়বে। যোহর-আসর অথবা মাগরিব-এশা ছাড়া অন্য নামায একত্রে আদায় করা বৈধ নয়। যেমন ফজর, যোহর অথবা আসর মাগরিবকে জমা করা বৈধ নয়।

নামায না পড়ার শাস্তি

নামায না পড়ার শাস্তি

আল্লাহ পাক তাঁর কোরআন পাকে ঘোষনা করেছেন-

فَوَيْلُ لِّلْمُصَلِّيْنَ الَّذِيْنَ هُمْ عَنْ صَلَوتِهِمْ سَا

هُوْنَ

উচ্চারনঃ

ফাওয়াইলুলি্লল মুছালি্লনাল্লাজিনাহুম আনছালাতিহিম ছাহুন।

হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বর্ণনা করেছেন -জাহান্নাম নামক দোযখে বিরাট একটি গর্ত আছে তাহার নাম অয়েল। এই জায়গা এতই কঠিন আজাবে পরিপূর্ণ যে, অন্যান্য দোযখীগণ প্রত্যেক দিন সত্তর বার আল্লাহ পাকের নিকট আরজ করবে, হে আল্লাহ্ তাবারুক তায়ালা! তুমি আমাদিগকে ঐ অয়েল দোযখ হইতে রক্ষা করিও।

যাহারা নামায পড়িতে আলস্য করে সময়মত নামায পড়েনা, মাঝে মাঝে পড়ে এইরূপ ব্যক্তিদের কেমন শাস্তি্ত হইতে পারে।

হাদীসে উল্লেখ আছে, প্রতি ওয়াক্ত নামায ছাড়িয়া দেয়ার জন্য আশি ছোকবা দোযখে থাকতে হবে। দুনিয়ার আশি বৎসর সমান এক ছোকবা হয়। তাহার আশি ছোকবা অর্থৎ ১৬০০ (এক হাজার ছয়শত) বৎসর এক ওয়াক্ত নামায কাযা করলে দোযখে থাকতে হবে। যাহারা মোটেই নামায পড়েনা এবং নামাযের প্রতি মিশ্বাসও রাখেনা তাদের অনন্তকাল দোযখে থাকতে হবে।

নবী করীম (সাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, মুসলমান এবং কাফেরের মধ্যে পাথক্য এই, মুসলমান নামায পড়ে আর কাফের নামায পড়ে না। কাজেই বেনামাযী কাফেরের মধ্যে গণ্য হয়ে যায়। যদি কেহ বলে কিসের নামায, নামায পড়িয়া কি হইবে, সাথে সাথে সে কাফের হইয়া যাইবে। অনেক লোক বলে আমরা গরীব মানুষ রুজী রোজগার করতে হয়। নামায পড়ার সময় কোথায়? তাহারা চিন্তা করেনা দুনিয়ার সুখ শান্তি ক্ষণস্থায়ী আর আখেরাতের শান্তি অনন্তকাল। যাহারা অনন্তকালের সুখ শান্তি নষ্ট করে দুনিয়ায় দুদিনের শান্তির আশায় থাকে তাহাদের মত আহাম্মক আর নাই। রুজি রোজগার দেয়ার মালিক আল্লাহ পাক। তিনি যদি অনুগ্রহ করে রুজি না দেন তবে সারা জনম পরিশ্রম করে রুজি পাওয়া যাবে না। আর যদি আল্লাহ পাক দয়া করে দেন তবে মুহুর্তের মধ্যে তাহাকে সম্পদশালী করিয়া দিতে পারেন। কাজেই রুজির আসায় নামায পরিত্যাগ করা উচিৎ নয়।

অনেক মেয়ে লোক বলে, ছেলে-মেয়ে নিয়া সংসারের নানা কাজকর্ম করিয়া নামায পড়ার সময় থাকেনা। আবার বলে আমার নামায পড়ার মত কাপড় চোপর নাই। একখানা মাত্র কাপড় তাও আবার ঠিকমত পাক পবিত্র করতে পারিনা। নামায পড়ব কেমনে? এই সমস্ত বাজে অজুহাতের কোন মূল্য নাই আল্লাহ্ পাকের দরবারে। যাহাদের নামায পড়ার আগ্রহ আছে তারা নানা বাধা বিপত্তির মধ্যেও নামায পড়তে সক্ষম হয়। আর যাহারা নামায পড়বেনা তাহাদের ওজর আপত্তির সীমা নাই। কিয়ামতের দিন আল্লাহ্ পাক যখন নিজে কাজীর আসনে বসবেন। তখন এই সমস্ত ওজর আপত্তি কোন কাজে আসবেনা।

যারা নামায পড়েনা তাদের জন্য আল্লাহ্ পাক পনেরটি আজাব নির্দিষ্ট করিয়া রাখিয়াছেন। পনেরটি আজাবের মধ্যে ছয়টি দুনিয়ায়, তিনটি মৃতু্য সময়, তিনটি কবরের মধ্যে, তিনটি হাশরের মধ্যে দেয়া হইবে। দুনিয়াতে ছয়টি আযাব

(১)

তাহার জীবনে কোনরূপ বরকত হইবেনা ।

(২)

আল্লাহ্ তার চেহারা হইতে নেক লোকের চিহ্ন উঠাইয়া লইবেন।

(৩)

যে যাহা কিছু নেক কাজ করবে, তাহার ছওয়াব পাইবেনা।

(৪)

তাহার দোয়া আল্লাহ্ পাকের নিকট কবুল হইবে না।

(৫)

আল্লাহ্ পাকের সমস্ত ফেরেশতা তাহার উপর অসন্তুষ্ট থাকবে।

(৬)

ইসলামের মূল্যবান নেয়ামত সমূহ হইতে বঞ্চিত করা হইবে।

মৃতু্যর সময় আজাব তিনটিঃ

(১)

অত্যন্ত দুর্দশাগ্রস্ত হইয়া মৃতু্যবরণ করিবে।

(২)

ক্ষুধার্ত অবস্থায় মৃতু্য বরন করিবে।

(৩)

মৃতু্যকালে তাহার এত পিপাসা পাইবে যে, তাহার ইচ্ছা হইবে দুনিয়ার সমস্ত পানি পান করিয়া ফেলিতে।

কবরের মধ্যে তিনটি আজাব:

(১)

তাহার কবর এমন সংকীর্ণ হবে যে তাহার এক পাশের হাড় অপর পাশের হাড়ের সংগে মিলিত হইয়া চূর্ণবিচূর্ণ হইয়া যাইবে।

(২)

তাহার কবরে, দিনরাত্রি সবসময় আগুন জ্বালাইয়া রাখা হবে।

(৩)

আল্লাহ্ তাহার কবরে একজন আজাবের ফেরেশ্তা নিযুক্ত করিবেন। তাহার হাতে লোহার মুগুর থাকবে। সে মৃত ব্যক্তিকে বলতে থাকবে যে, দুনিয়ায় কেন নামায পড় নাই। আজ তাহার ফল ভোগ কর। এই বলিয়া ফজর নামায না পড়ার জন্য ফজর হইতে জোহর পর্যন্ত, জোহর নামাযের জন্য জোহর থেকে আছর পর্যন্ত, আছরের নামাযের জন্য আছর থেকে মাগরিব পর্যন্ত, মাগরিবের নামাযের জন্য মাগরিব হইতে এশা পর্যন্ত এবং এশার নামাযের জন্য এশা হইতে ফজর পর্যন্ত লোহার মুগুর দ্বারা আঘাত করতে থাকবে। প্রত্যেক বার আঘাতের সময় বজ্রপাতের মত শব্দ হইবে এবং শরীর চূর্ণবিচূর্ণ হইয়া পঞ্চাশ গজ মাটির নিচে চলিয়া যাইবে। সেই ফেরেশ্তা পুনরায় তাহাকে জীবিত করিয়া হাড় মাংস এক করিয়া আবার আঘাত করিতে থাকিবে। এই ভাবে কিয়ামত পর্যন্ত লোহার মুগুর দিয়া তাহাকে আঘাত করতে থাকবে।

হাশরের মাঠে তিনটি আজাব: একজন ফেরেশতা তাকে পা উপরের দিকে এবং মাথা নিচের দিকে অবস্থায় হাশরের মাঠে লইয়া যাইবে। আল্লাহ পাক তাহাকে অনুগ্রহের দৃষ্টিতে দেখবেন না। সে চির কালের জন্য দোযখী হইয়া নিজের কৃতকর্মের ফল ভোগ করতে থাকবে।

নবী করিম (সাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আমার উম্মতের মধ্যে আট শ্রেণীর লোকের উপর কিয়ামতের দিন আল্লাহ পাক অসন্তুষ্ট থাকবেন। তাহাদের মুখের আকৃতি অত্যন্ত কুশ্রী ও ভীষণাকার হইবে। হাশরের মাঠে প্রত্যেক ব্যক্তি তাহাদিগকে দেখিয়া ঘৃণা করিবে। এই কথা শুনার পরে সাহাবাগণ জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ! সে সমস্ত লোক কাহারা? নবী করীম (সাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) বললেন

(১)

জ্বেনা-কার

(২)

অবি-চারক বাদশাহ্ বা হাকিম।

(৩)

মাতা-পিতার অবাধ্য সন্তান।

(৪)

সুদখোর

(৫)

পর-নিন্দাকারী

(৬)

অন্যায়কারী এবং অত্যাচারী

(৭)

মিথ্যা সাক্ষীদাতা।

(৮)

বে-নামাযী।

ইহাদের মধ্যে বে-নামাযীর শাস্তিই বেশী হইবে। বে-নামাযীকে আগুনের পোশাক পড়াইয়া শিকলে বাঁধিয়া আগুনের কোড়া মারতে থাকবে। বেহেশত তাহাকে বলতে থাকবে তুমি আমার দিকে অগ্রসর হইওনা। দোযখ তাহাকে বলবে আমি তোমার জন্যই অপেক্ষা করছি। তোমার দ্বারা আমার পেটের ক্ষুধা নিবারণ করব। এই বলিয়া দোযখ তাহার জিহ্বা বাড়াইয়া ভিতরে নিয়া যাইবে।

নবী করীম (সাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, জাহান্নাম দোযখের মধ্যে লমলম নামে একটি কুপ আছে। উহা অসংখ্য সাপ বিচ্ছুতে ভর্তি। প্রত্যেকটা সাপ একটি পাড়ের সমতুল্য এবং একটা বিচ্ছু হাতির সমতুল্য হইবে। সেই সমস্ত সাপ বিচ্ছু সব সময় বে-নামাযীকে কামড়াইতে থাকিবে, একবার কামরাইলে সত্তর বৎসর পর্যন্ত তাহার যন্ত্রনা থাকিবে এবং কাহারও মৃতু্য হইবে না‌।

মাসনুন জিকির সমূহ

মাসনূন যিকির সমূহ

নামাযের পর তিন বার ‘আসতাগফিরুল্লাহ’ (আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাচ্ছি), পড়া সুন্নাত। তারপর এই দোয়া পড়বে:

”اَللَّهُمَّ أَنْتَ السَّلامُ ومِنْكَ السَّلامُ تَبَارَكْتَ يَا ذَا الجِلالِ وَالإِكْرَامِ، لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ، اَللَّهُمَّ لاَ مَانِعَ لِمَا أَعْطَيْتَ، وَلاَ مُعْطِيَ لِمَا مَنَعْتَ، وَلاَ يَنْفَعُ ذَا الْجَدِّ مِنْكَ الجَدُّ “

উচ্চারণ:

“আল্লাহুম্মা আনতাস্সালামু ওয়া মিনকাস্ সালামু তাবারাকতা ইয়া যাল্জালালি ওয়াল ইকরাম, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহ্দাহু লা-শারীকালাহু লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শাইইন ক্বাদীর। আল্লাহুম্মা লা মানিয়া’ লিমা আ’তাইতা, ওয়া লা মু’তিয়া লিমা মানা’তা, লা ইয়ানফাউ যালজাদ্দি মিনকালজাদ্দু”।

অর্থ,

হে আল্লাহ! আপনি শান্তিময়, আপনার কাছ থেকেই শান্তি আসে। আপনি বরকতময় হে প্রতাপশালী সম্মানের অধিকারী! আল্লাহ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই। তিনি একক, তাঁর কোন অংশীদার নেই। তাঁরই বিশাল রাজ্য এবং তাঁরই সমস্ত প্রশংসা। আর তিনিই সমস্ত কিছুর উপর ক্ষমতাবান। হে আল্লাহ! আপনি যা দান করতে চান তা কেউ রোধ করতে পারে না। আপনার শাস্তি হতে কোন ধনীকে তার ধন রক্ষা করতে পারে না”।

তারপর ৩৩ বার করে আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা, প্রশংসা বর্ণনা এবং তাকবীর পড়বে। অর্থাৎ ৩৩ বার سُبْحَانَ اللهِ (সুবহানাল্লাহ), ৩৩ বার اَلحَمْدُ لِلَّهِ (আলহামদুলিল্লাহ) এবং ৩৩ বার اَللهُ أَكْبَرْ (আল্লাহু আকবার) পড়বে। সবগুলো মিলে ৯৯ বার হবে

অতঃপর একশত পূর্ণ করার জন্য বলবে,

”لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ“

উচ্চারণ:

“লা- ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা-শারীকালাহু লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইইন ক্বাদীর”।

অর্থ:

“আল্লাহ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই। তিনি একক তাঁর কোন অংশীদার নেই। তাঁর বিশাল রাজ্য এবং সমস্ত প্রশংসা। আর তিনিই যাবতীয় বস্তুর উপর শক্তিমান”।

তারপর “আয়াতুল্ কুরসী”, قُلْ هُوَ اللهُ أَحَدٌ “কুল হুয়াল্লাহু আহাদ”, قُلْ أَعُوْذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ “কুল আউযুবি রব্বিল ফালাক”, قُلْ أَعُوْذُ بِرَبِّ النَّاسِ “কুল আউযুবি রব্বিন নাস” পড়বে।

কুলহু আল্লাহু আহাদ, ফালাক, নাস এই তিনটি সূরা ফজর ও মাগরিবের নামাযের পর তিন বার করে পড়া মুস্তাহাব।

উপরে উল্লেখিত যিক্র ছাড়া ফজর ও মাগরিবের পর এই দু’আ দশ বার পড়া মুস্তাহাব।

لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ يُحْيِ وَ يُمِيْتُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ

উচ্চারণ:

“ লা- ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা-শারীকালাহু লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ইউহয়ী ওয়া ইয়ুমীতু ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শাইইন ক্বাদীর”।

অর্থাৎঃ “আল্লাহ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই। তিনি একক, তাঁর কোন অংশীদার নেই। তাঁরই রাজত্ব এবং তাঁরই সমস্ত প্রশংসা। তিনি জীবন দান করেন ও মৃত্যু ঘটান। আর তিনিই সকল বস্তুর উপর শক্তিমান”। এ সমস্ত যিকর ফরয নয়, সুন্নাত।

নামাজের ফজিলত

নামাজের ফজিলত

মহান আল্লাহ পাকের নিকট নামায সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। আল্লাহ্ পাকের নিকট নামায অপেক্ষা প্রিয় ইবাদত আর কিছু নাই। আল্লাহ্ পাক মানুষের উপর দিনরাত পাঁচ ওয়াক্ত নামায ফরয করে দিয়েছেন। যারা দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত ফরয নামায আদায় করে তারা পরকালে বেহেশতের উত্তম স্থানে অবস্থান করিবে। এবং যাহারা নামায পড়েনা তাহারা জাহান্নামের নিকৃষ্টতম স্থানে অবস্থান করিবে।

হাদীসে বর্ণিত আছে, যে ব্যক্তি ভালভাবে ওজু করে ভয় ও ভক্তি সহকারে রীতিমত নামায আদায় করে কিয়ামতের দিন আললাহ্ পাক তাহার সগীরা গুনাহ্ সমূহ ক্ষমা করে দিবেন এবং বেহেশতের উত্তম জায়গায় স্থান দিবেন।

আর একটি হাদীসে বর্ণিত আছে, নবী করীম (সাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “নামায ইসলামের খুঁটি স্বরূপ”

অর্থাৎ ঘর যেমন খুটি ছাড়া তৈরী হয় না বা দাঁড়িয়ে থাকতে পারেনা। ঠিক তেমনি ইসলামরূপ ঘর ও নামায নামক খুঁটি ছাড়া টিকতে পারেনা। যে ঠিকমত নামায কায়েম করল সে ইসলামকে জারী রাখতে সাহায্য করল। আর যে নামায কায়েম করল না সে যেন ইসলামকে ধ্বংস করে দিল।

কিয়ামতের দিন সর্ব প্রথম নামাযের হিসাব নেওয়া হবে। নামাযী ব্যক্তির হাত, পা, মুখমন্ডল কেয়ামতের দিন সূর্যের আলোর মত উজ্জল হবে। কিন্তু বেনামাযীর এর উল্টা ফল হবে এবং জাহান্নামী হবে। হাদীসে বর্ণিত আছে, কিয়ামতের ময়দানে নামাযীগণ নবী, শহীদ ও অলীগণেরর সঙ্গে থাকিবে। এবং বেনামাযীরা, ফেরাউন, সাদ্দাদ, হামান, কারূনের এবং আরও বড় বড় কাফেরদের সাথে থাকবে।

প্রত্যেক ব্যক্তির নামায পড়া একান্ত প্রয়োজন। নামায না পড়িলে আখেরাতে এবং দুনিয়ায় প্রচুর ক্ষতির সম্মুখীন হইতে হইবে। নামায কাহারও জন্য মাফ নাই। কোন অবস্থায়ই নামায বাদ দেয়া জায়েয নাই, রুগ্ন, খোড়া, বধির, অন্ধ, আতুর, বোবা যে যে অবস্থায় আছে সেই অবস্থায়ই নামায আদায় করতে হবে।

আল্লাহ পাক পবিত্র কোরআনে বলেছেন -

قَدْ اَلفْلَحَ الْمُؤْ مِنُوْنَ الَّذِيْنَ هُمْ صَلَوتِهِمْ خَاشِعُوْنَ

উচ্চারনঃ

ক্বাদ আফলাহাল মুমিনুনাল লাজিনাহুম ছালাতিহিম খাশিউন।

হযরত আদম (আঃ) হইতে আরম্ভ করিয়া শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (সাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) পর্যন্ত দুনিয়াতে যত নবী রাসুল আসিয়াছেন তাঁহাদের প্রত্যেকের উপর এবং তাঁহাদের উম্মতদের উপর নামায পড়া ফরয ছিল। কোন নবীর প্রতি ১০ ওয়াক্ত, কারও প্রতি ৩০ ওয়াক্ত, কারও প্রতি ৫০ ওয়াক্ত, কারও প্রতি ৪০ ওয়াক্ত নামায ফরয ছিল। শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (সাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) যখন মেরাজে গমন করেন, তখন আললাহ্ পাক ৫০ ওয়াক্ত নামায ফরয করেছিলেন এবং পর্যায়ক্রমে কমিয়ে ৫ ওয়াক্ত নামায ফরয করেছেন। কিন্তু আখেরী জামানার উম্মতগণ ৫ ওয়াক্ত নামায পড়িলেই ৫০ ওয়াক্ত নামাযের সওয়াব পাইবে। নামায আললাহ্ পাকের একটি উপহার। যাহারা আললাহ্ পাকের দেয়া এই উপহার অবহেলা করবে বা অবজ্ঞা প্রকাশ করবে তাহারা কখনই আললাহ্ পাকের প্রিয় বান্দা হইতে পারবেনা। আল্লাহ্ পাক নামাযের ফজিলত সম্মন্ধে কোরআন পাকে বলেছেন —-

وَالَّذِيْنَ هُمْ عَلَى صَلَوتِهِمِِ يُحَا فِظُوْنَ

اُولَئِكَفِىْ جَنَّتِمُّكْرَمُوْنَا

উচ্চারনঃ

ওয়াল্লাজিনা হুম আলা ছালাওয়াতিহিম ইউহাফিজুনা উলাইকা ফি জান্নাতিম মুকরামুন।

অনুবাদ:

যে সমস্ত লোক যত্ন সহকারে নামায আদায় করবে তাহারাই বেহেশতে যাইবে এবং অশেষ সম্মানের অধিকারী হইবে।

নবী করীম (সাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, পাঁচ ওয়াক্ত নামায যেমন তোমাদের বাড়ীর সামনে দিয়া প্রবাহিত একটি নদীর মত। তোমরা যদি প্রতিদিন ৫ বার ঐ নদীতে গোসল কর, তবে যেমন তোমাদের শরীরে কোন ময়লা-আবর্জনা থাকতে পারেনা, তেমনি যে ব্যক্তি পাঁচ বার নামায পড়ে কোন প্রকার পাপ তাকে স্পর্শ করতে পারেনা। নবী পাক (সাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) আরও বলেছেন, যখন কোন ব্যক্তি ভক্তি সহকারে অজু করে, ভয় মিশ্রিত ভাবে নামায পড়ে, আল্লাহ্ পাক তাহার জন্য দোযখের আগুন হারাম করে দেন। কিয়ামতের দিন নামাযই ঐ ব্যক্তিকে দোযখের আগুন হইতে বাঁচাইয়া বেহেশতে নিয়া যাইবে। নামায পড়ার সময় যদি কপালে ধুলা মাটি ভরিয়া যায় তবে তাহা পরিস্কার করবেনা। কারণ যতক্ষন না মাটি কপালে থাকে ততক্ষণ আললাহ পাকের রহমত বর্ষিত হইতে থাকে।

হযরত আদম (আঃ) এর উপর ফজরের নামায, হযরত দাউদ (আঃ) এর উপর জোহরের নামায, হযরত সোলায়মান (আঃ) এর উপর আছরের নামায, হযরত ইয়াকুব (আঃ) এর উপর মাগরিবের নামায, এবং হযরত ইউনুছ (আঃ) এর উপর এশার নামায ফরয করা হয়েছিল। যে ব্যক্তি এই পাঁচ ওয়াক্ত নামায ঠিকমত ভক্তি সহকারে আদায় করবে, সে উপরের পাঁচজন নবী রাসূলের সমান সওয়াব পাইবে।হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেছেন, নবী করীম (সাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) আমার সাথে আলাপ করছিলেন। এমন সময় নামাযের ওয়াক্ত হইল। তিনি তখনই উঠিয়া দাঁড়াইলেন। তাঁহার শরীরের রং এবং চেহারা পরিবর্তন হইয়া গেল। তাঁহার ভাব দেখিয়া আমার মনে হইতেছিল তিনি আমাকে চিনিতে পারিতেছেন না। আমি নবী পাক (সাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) কে ইহার কারণ জিজ্ঞাস করলে তিনি বলিলেন, হে আয়েশা! ইহা আললাহ পাকের আদেশ প্রতি পালনের সময়। এসময়ে প্রত্যেকের এই আহবানে ভয় হওয়া উচিত।

নবী করীম (সাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যখন কোন বান্দা অযু করিয়া জায়নামাযে দাঁড়ায়, তখন আল্লাহ পাক একজন ফেররেশতাকে পাঠাইয়া তাকে বলিয়া দেন যে, আমার অমুক বান্দা নামায পড়িবার জন্য প্রস্তুত হইতেছে, কিন্তু তাহার শরীরের পূর্বের পাপরাশি সঞ্চিত আছে। নাপাক জিনিস সাথে করে নামায পড়িলে তাহার নামায শুদ্ধ হইবে না। তুমি উহার শরীর হইতে সমস্ত পাপ তোমার মাথায় লইয়া দাঁড়াইয়া থাক। আর আমার বান্দা নিস্পাপ অবস্থায় নামায আদায় করুক। আল্লাহ্ পাকের আদেশ অনুযায়ী উক্ত ফেরেশতা তাহার সমস্ত পাপ উঠাইয়া নিজের মাথায় লইয়া দাঁড়াইয়া থাকে। তারপর নামায পড়া শেষ হইলে ফেরেশতা বলে হে আল্লাহ্! আপনার বান্দার নামায পড়া শেষ হয়েছে। তাহার পাপগুলি এখন তাহার শরীরে ছাড়িয়া দেই। আল্লাহ পাক বলেন, আমার নাম ‘রাহমানুর রাহিম’ আমি বান্দার শরীর হইতে পাপের বোঝা নামাইয়া আবার যদি সেই বোঝা তাহাকে চাপাইয়া দেই তবে আমার রাহমান নামের স্বার্থকতা থাকেনা। হে ফেরেশ্তা! আমার এ বান্দার পাপের বোঝা দোযখে নিক্ষেপ করিয়া জ্বালাইয়া দাও। এখন হইতে আমার এই বান্দা নিস্পাপ।

একদিন নবী করীম (সাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) সাহাবাগণের সহিত বসিয়া আছেন। এমন সময় একন ইহুদী আসিয়া বলিল, হে মুহাম্মদ (সাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) ! আপনাকে আমি একটি প্রশ্ন করব। আপনি যদি তাহার উত্তর দিতে পারেন তবেই বুঝিব যে আপনি সত্যিই আল্লাহ্র নবী। কেননা কোন নবী ব্যতীত আমার এই প্রশ্নের উত্তর কেহই দিতে পারবে না। তখন নবী করীম (সাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) বলিলেন তোমার প্রশ্ন কি?

ইহুদী বলিল, আপনার ও আপনার উম্মতের উপর যে দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামায নির্দিষ্ট করা হয়েছে ইহার তত্ত্ব কি? নবী করীম (সাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) বললেন, সূর্য যখন পশ্চিম আকাশের দিকে চলিয়া যায় তখন প্রথম আসমানে একদল ফেরেশতা আল্লাহপাকের ইবাদতে লিপ্ত হয়। ঐ সময় সমস্ত আসমানের দরজা খোলা থাকে। মানুষ ও সমস্ত ফেরেশতাদের ইবাদত আল্লাহ্ পাকের দরবারে পোঁছায়া যায়। জোহরের সময়ে আল্লাহ্র নিকট সকল ইবাদত কবুল হয়। আসরের ওয়াক্ত শয়তান ধোকা দিয়া আদম (আঃ) কে আল্লাহ্ পাকের নাফরমানি করাইয়াছিল। ঐ সময়ে নামাযের আদেশ হওয়ার উদ্দেশ্য হইল, উক্ত সময়ে নামায পড়লে শয়তান কোন প্রকারে ধোকা দিতে পারবেনা। মাগরিবের ওয়াক্তে হযরত আদম (আঃ) এর তওবা কবুল হইয়াছিল। উক্ত সময়ে নামায পড়িয়া আল্লাহ পাকের নিকট যে দোয়া করিবে আল্লাহ পাক তাহা কবুল করিবেন। এশা ওয়াক্ত এমনি সময় যখন আমার পূর্ববর্তী সমস্ত নবীগণের ও তাঁহাদের উম্মত গণের উপর এশার নামায ফরয ছিল। এই নামায পড়িলে সমস্ত পয়গাম্বরের উপর নির্দিষ্ট নামাযের ছওয়াব পাওয়া যায়। আর ফজরের ওয়াক্তের মর্ম এই যে, যখন সূর্য উদিত হয় তখন উহা শয়তানের মাথার উপর দিয়া উদিত হয়। সেই সময় কাফের মোশরেকগণ তাহাদের দেব দেবীদের উদ্দেশ্য করে শয়তানকে সিজদা করে থাকে। আল্লাহ্ পাক আমাকে এবং আমার উম্মতগণকে উহার পূর্বেই নামায পড়িতে আদেশ করেছেন। এই কথা শুনিয়া ইহুদী বলিল, আমি বুঝিলাম আপনি সত্যই আল্লাহ্ নবী। তারপর সেই ইহুদী তার দলবল লইয়া মুসলমান হইয়া গেল।

নবী করীম (সাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তুমি যখন নামাযে দাঁড়াইবে তখন মনে মনে এইরূপ ধারনা করিবে যে আমি আল্লাহ পাকের সামনে দাঁড়াইয়াছি। যদিও আমি তাঁহাকে দেখিতেছিনা কিন্তু তিনি আমাকে দেখিতেছেন।

এক যুদ্ধে হযরত আলী (রাঃ) এর পায়ে তীর বিদ্ধ হইয়াছিল। তিনি তীরের আঘাতের যন্ত্রণায় অস্থির হইয়া পড়িলেন। অনেক চেষ্টা করিয়াও তীর বাহির করতে পারছেন না। নামাযের সময় হযরত আলী (রাঃ) নামাযের নিয়ত করলে নবী করীম (সাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) এর ইশারায় কয়েক জন ছাহাবা সজোরে টানিয়া তীরটি বাহির করিয়া ফেলিলেন। রক্তে জায়নামায ভিজিয়া গেল। কিন্তু হযরত আলী (রাঃ) ইহার কিছুই টের পেলেন না। নামায শেষে জায়নামাযে রক্ত দেখে তিনি জিজ্ঞেস করলেন ইহা কিসের রক্ত।

আল্লাহ্ পাকের নিকটতম বান্দাগণের নামায সাধারণতঃ এই রকমই হয়ে থাকে। নামাযের ফজিলত বলে শেষ করা যাবে না। তাই মুসলমান ভাইদেরকে সাবধান করে দিতেছি নামায ছাড়া পরকালে পার পাওয়া যাবেনা।

দুরুদ শরীফ

দুরুদ শরীফ

اَللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى اَلِ مُحَمَّدٍ كَمَا

صَلَّيْتَ عَلَى اِبْرَ اهِيْمَ وَعَلَى اَلِ اِبْرَ اهِيْمَ اِنَّكَ

حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ- اَللَّهُمَّ بَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى

اَلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى اِبْرَ اهِيْمَ وَعَلَى

اَلِ اِبْرَاهِيْمَ اِنَّكَ حَمِيْدٌمَّجِيْدٌ

উচ্চারনঃ

আল্লাহুম্মা সাল্লিআলা মুহাম্মাদিঁ ওয়া আলা আলি মুম্মাদিন কামা সাল্লাইতা আলা ইব্রাহীমা ওয়া আলা আলি ইব্রাহীমা ইন্নাকা হামিদুম্মাজীদ । আল্লাহুম্মা বারিক আলা মুহাম্মাদিঁ ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদিন কামা বারাকতা আলা ইব্রাহীমা ওয়া আলা আলি ইব্রাহীমা ইন্নাকা হামীদুম্মাজীদ ।

অনুবাদ:

যে আল্লাহ! মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) এবং তাঁহার বংশধরগণের উপর ঐরূপ আশীর্বাদ অবতীর্ণ কর যেইরূপ আর্শীবাদ হযরত ইব্রাহিম (আঃ) এবং তাঁহার বংশধরগণের উপর অবতীর্ণ করিয়াছ । নিশ্চই তুমি প্রশংসা ভাজন এবং মহামহিম । হে আল্লাহ! মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) এবং তাঁহার বংশধরগণের উপর সেইরূপ অনুগ্রহ কর যে রূপ অনুগ্রহ ইব্রাহীম (আঃ) এবং তাঁহার বংশরগণের উপর করিয়াছ । নিশ্চয়ই তুমি প্রশংসা ভাজন এবং মহামহিম ।

দুরুদ শরীফ

দুরুদ শরীফ

اَللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى اَلِ مُحَمَّدٍ كَمَا

صَلَّيْتَ عَلَى اِبْرَ اهِيْمَ وَعَلَى اَلِ اِبْرَ اهِيْمَ اِنَّكَ

حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ- اَللَّهُمَّ بَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى

اَلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى اِبْرَ اهِيْمَ وَعَلَى

اَلِ اِبْرَاهِيْمَ اِنَّكَ حَمِيْدٌمَّجِيْدٌ

উচ্চারনঃ

আল্লাহুম্মা সাল্লিআলা মুহাম্মাদিঁ ওয়া আলা আলি মুম্মাদিন কামা সাল্লাইতা আলা ইব্রাহীমা ওয়া আলা আলি ইব্রাহীমা ইন্নাকা হামিদুম্মাজীদ । আল্লাহুম্মা বারিক আলা মুহাম্মাদিঁ ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদিন কামা বারাকতা আলা ইব্রাহীমা ওয়া আলা আলি ইব্রাহীমা ইন্নাকা হামীদুম্মাজীদ ।

অনুবাদ:

যে আল্লাহ! মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) এবং তাঁহার বংশধরগণের উপর ঐরূপ আশীর্বাদ অবতীর্ণ কর যেইরূপ আর্শীবাদ হযরত ইব্রাহিম (আঃ) এবং তাঁহার বংশধরগণের উপর অবতীর্ণ করিয়াছ । নিশ্চই তুমি প্রশংসা ভাজন এবং মহামহিম । হে আল্লাহ! মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) এবং তাঁহার বংশধরগণের উপর সেইরূপ অনুগ্রহ কর যে রূপ অনুগ্রহ ইব্রাহীম (আঃ) এবং তাঁহার বংশরগণের উপর করিয়াছ । নিশ্চয়ই তুমি প্রশংসা ভাজন এবং মহামহিম ।

দোআ কুনুত

দোয়া কুনুত

দোয়া কুনুত

দোয়া কুনুত বিতরের নামাযে পড়তে হয়ঃ

اَللَّمُمَّ اِنَّ نَسْتَعِيْنُكَ وَنَسْتَغْفِرُكَ وَنُؤْمِنُ بِكَ

وَنَتَوَكَّلُ عَلَيْكَ وَنُثْنِىْ عَلَيْكَ الْخَيْرَ وَنَشْكُرُكَ

وَلاَ نَكْفُرُكَ وَنَخْلَعُ وَنَتْرُكُ مَنْ يَّفْجُرُكَ-اَللَّهُمَّ

اِيَّاكَ نَعْبُدُ وَلَكَ نُصَلِّىْ وَنَسْجُدُ وَاِلَيْكَ نَسْعَى

وَنَحْفِدُ وَنَرْجُوْ رَحْمَتَكَ وَنَخْشَى عَذَابَكَ اِنَّ

عَذَابَكَ بِالْكُفَّارِ مُلْحِقٌ

উচ্চারনঃ

আল্লাহুম্মা ইন্না নাসতাঈনুকা ওয়া নাসতাগ ফিরুকা ওয়ানুমিনু বিকা ওয়ানাতাওয়াক্কালু আলাইকা ওয়া নুছনী আলাইকাল খাইর । ওয়া নাসকুরুকা আলা নাক ফুরুকা ওয়ানাখলাউ উয়ানাত রুকু মাইয়্যাফযুরুকা । আল্লাহুম্মা ইয়্যাকানা বুদু ওয়ালাকা নুছালি্ল ওয়া নাস জুদু ওয়া ইলাইকা নাসয়া ওয়া নাহফিদু ওয়া নারজু রাহমাতাকা ওয়া নাখশা আজাবাকা ইন্না আজাবাকা বিলকুফফারি মূলহিক ।

অনুবাদ:

হে আল্লাহ! আমরা তোমার নিকট সাহায্য প্রার্থনা করিতেছি, তোমার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করিতেছি, তোমার ভরসা করিতেছি । তোমার নিকট ক্ষমা ভিক্ষা করিতেছি, তোমার উপর ঈমান আনিতেছি, তোমার ভরসা করিতেছি তোমার গুণগান করিতেছি এবং তোমারই কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করিতেছি । আমরা তোমাকে অস্বীকার করি না । যাহারা তোমার হুকুম অমান্য করে তাহাদের সঙ্গে আমরা সংশ্রব সংসগ্র পরিত্যাগ করি । হে আল্লাহ! আমরা তোমারই ইবাদত করি, তোমারই খেদমতে হাজির হই এবং তোমার রহমতের আশা করি ও তোমার শাস্তিকে ভয় করি । নিশ্চই তোমার আজাব অবিশ্বাসিগণ ভোগ করিবে ।

দোয়ায়ে মাসূরা

দোয়ায়ে মাসূরা দোয়ায়ে মাসুরা

اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِىْ وَلِوَ الِدَىَّ وَلِمَنْ تَوَالَّدَ وَلِجَمِيْعِ

الْمُؤْ مِنِيْنَ وَالْمُؤْ مِنَاتِ وَالْمُسْلِمِيْنَ

وَالْمُسْلِمَاتِ وَالاْاَحْيَاءِ مِنْهُمْ وَالْاَمُوْ اَتْ

بِرَحْمَتِكَ يَااَرْحَمَرَّحِمِيْنَ

উচ্চারনঃ

আল্লাহুমাগ ফিরলী ওয়ালি ওয়ালিদাইয়্যা ওয়ালিমান তাওয়াল্লাদা ওয়ালি জামীঈল, মু’মিনীনা ওয়াল মুমিনাত, ওয়াল মুসলিমীনা ওয়াল মুসলিমাত, ওয়াল আহ্ইয়ায়ি মিনহুম ওয়াল আমুয়াত, বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমীন ।

অনুবাদ:

হে পরম করুণাময় আল্লাহ তায়ালা! আমাকে, আমার পিতা মাতাকে, সন্তান-সন্ততিকে, সমস্ত মু’মিন পুরুষ ও নারীকে এবং জীবিত মৃত সমস্ত মুসলিম নর-নারীকে ক্ষমা কর ।

আত্তাহিয়াতু

আত্তাহিয়াতু আত্তাহিয়াতু

اَلتَّحِيَّاتُ لِلَّهِ وَالصَّلَوَاةِ وَالطَّيِّبَاتُ اَلسَّلاَمُ

عَلَيْكَ اَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُه‘ –

اَلسَّلاَمُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللهِ الصَّا لِحِيْنَ –

اَشْهَدُ اَنْ لاَّ اِلَهَ اِلاَّ اللهُ وَاَشْهَدُ اَنَّ مُحَمَّدً

عَبْدُه‘ وَرَسَوْلُه‘-

উচ্চারনঃ

আত্তাহিয়্যাতু লিল্লাহি ওয়াস সালাওয়াতু ওয়াত্তায়্যেবাতু আস্-সালামু আলাইকা আইয়ু্যহান্নাবীয়ু্য ওয়া রামাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু, আস্-সালামু আলাইনা ওয়া আলা ইবাদিল্লাহিস সালিহীন । আশহাদু আল-লাইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসূলুহু ।

অনুবাদ:

জান এবং মাল সর্বপ্রকার ইবাদতই আল্লাহুর জন্য । হে পয়গাম্বর, আপনার উপর আল্লাহর কৃপা, বরকত এবং শান্তি বর্ষিত হইক । আমাদের উপর এবং আল্লাহর পূণ্যবান বান্দাগণের উপর শান্তি বর্ষিত হউক। আমি সাক্ষ্য দিতেছি যে, আল্লাহ ব্যতীত কেহ উপাস্য নাই । আমি আরও সাক্ষ্য দিতেছি যে, নিশ্চই মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) তাঁহার বান্দা ও রাসূল ।

কাযা নামায পড়ার নিয়ম

কাযা নামাজের নিয়ম

কাযা নামাযের নিয়্যাত

কাযা নামায এবং ওয়াক্তিয়া নামাযের নিয়ত একই রকম তবে এইটুক পার্থক্য যে কাযা নামাযে (আন উসালি্লয়া) শব্দের জায়গায় (আন আকদিয়া) এবং যে নামায তাহার নাম বলিয়া (আল ফাইতাতে বলিতে হইবে। যথা- আছরের নামায কাযা হইলে নিম্নরূপ নিয়ত বলিবেঃ

نَوَيْتُ اَنْ اَقْضِىَ لِلَّهِ تَعَا لَى اَرْبَعَ رَكْعَاتِ

صَلَوةِ الْعَصْرِ الْفَا ئِتَةِ فَرْضُاللَّهِ تَعَا لَى

مُتَوَجِّهًا اِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِالشَّرِيْفَةِ اَللَّهُ اَكْبَرُ

উচ্চারণঃ

নাওয়াইতুয়ান আকদিয়া লিল্লাহি ত’আলা আরবায়া রাকাআতি ছালাতিল আছরিল ফায়েতাতি ফারযুল্লাহি তা’আলা মোতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

কাযা নামায পড়িবার নিয়ম

যে কোন জরুরী কারণে সময়মত নামায পড়তে না পারিলে ঐ নামায অন্য নামাযের পূর্বে আদায় করাকে কাযা নামায বলে। কাযা নামায দুই প্রকার যথা ।

(১)

‘ফাওয়ায়েতে কালীল’ অর্থাৎ অল্প কাযা পাঁচ ওয়াক্ত পরিমাণ নামায কাযা হইলে উহাকেই ‘ফাওয়ায়েতে কালীল’ বা অল্প কাজা বলে।

(২)

‘ফাওয়ায়েতে কাছির’ অর্থাৎ বেশি কাযা। পাঁচ ওয়াক্তের অধিক যত দিনের নামাযই কাযা হউক না কেন উহাকে ‘ফাওয়ায়েতে কাছির’ বা অধিক কাযা বলা হয়। এ ধরনের কাযা নামায সকল ওয়াক্তিয়া নামাযের পূর্বে পড়িবে । কিন্তু,

(ক)

কাযার কথা ভুলিয়া গেলে অথবা

খ)

ওয়াক্তিয়া নামাযের ওয়া্কত সস্কীণৃ হইয়া গেলে বা

গ)

কাযা পাঁচ ওয়াক্তের বেশী হইলে কাযা নামায পরে পড়া যাইতে পারে।

পাঁচ ওয়াক্ত নামায বা তার কম নামায না পড়িয়া থাকিলে তাহার তরতীবের প্রতি লক্ষ্য রাখিতে হইবে। আগের নামায আগে, পরের নামায পরে পড়িতে হইবে। যথঃ কোন ব্যক্তির ফরজ এবং যোহরের নামায তরক হইয়া গিযাছে; এখন আছরের নামায পড়িবার পূর্বে সর্ব প্রথম ফজরের কাযা তারপর যোহরের কাযা আদায় করিতে হইবে। তারপর আছরের ওয়াক্তিযা নামায আদায় করিবে।

(১)

ফরয নমাযের কাযা ফরয।

(২)

ওয়াজিব নামাযের কাযা ওয়াজিব।

(৩)

সুন্নত নামাযের কাযা পড়িতে হয় না। কিন্তু ফজরের সুন্নতের কাযা আদায় করিতে হইব।

(৪)

কাযা নামায জামায়াতের সহিত আদায় করিলে ইমাম কেরাত জোরে পড়িবেন। তবে যোহর এবং আছরে চুপে চুপে পড়িবেন।

(৫)

এক মাস বা তার চেয়ে বেশী দিনের নামায কাযা হইয়া থাকিলে উক্ত পরিমাণ সময়ের কাযা আদায় করিবে এবং তরতীবের প্রতি লক্ষ্য রাখিবে।

(৬)

জীবনে যে নামায পড়ে নাই বা কত নামায তরক করিয়াছে তাহার হিসাবও নাই। সে যদি এখন কাযা করিতে চায়, তবে প্রথমে নামাযের পূর্বে তরতীব অনুযায়ী কাযা আদায় করিতে থাকিব, ইহাকে ‘ওমরী কাযা’ বলে। ইহাতে অশেষ ছওয়াব আছে।

কাযা নামাযের নিয়ত করিবার সময় নামাযের উল্লেখ করিয়া নিয়ত করিতে হইবে।

পুরুষ ও মহিলার নামাজের পার্থক্য

পুরুষ ও মহিলার নামাজের পার্থক্য

পুরুষ এবং স্ত্রী লোকের নামাজ প্রায় একই রকম। কেবল নিম্নবর্ণিত কয়েকটি বিষয়ে পার্থক্য রহিয়াছেঃ

(১) পুরুষঃ

উভয় পায়ের মধ্যখানে ৪ আংগুল (প্রয়োজনে আধা হাতের কম) ফাঁকা রাখিয়া সোজা হইয়া দাঁড়াইবে।

মহিলাঃ

পা মিলাইয়া মধ্যখানে ফাঁক না রাখিয়া সোজা হইয়া দাঁড়াইবে।

(২) পুরুষঃ

তাকবীরে তাহরীমার সময় চাদর ইত্যাদির ভিতর হইতে হাত বাহির করিয়া উভয় হাতের তালু ক্বিবলার দিকে করিয়া হাতের আংগুল স্বাভাবিক অবস্থায় ক্বিবলার দিকে সামান্য ঝুকাইয়া কান বা চেহারা বরাবর উঠাইবে, কনুই শরীর হইতে পৃথক রাখিবে।

মহিলাঃ

তাকবীরে তাহরীমার সময় উভয় হাত শাড়ী বা চাদরের ভিতরে রাখিয়া হাতের আঙ্গুল মিলাইয়া হাতের তালু এবং আঙ্গুল ক্বিবলা মুখী করিয়া কাঁধ পর্যন্ত উঠাইবে। কনুইসহ হাত শরীরের সঙ্গে পরিপূর্ণ মিশাইয়া রাখিবে।

(৩) পুরুষঃ

তাকবীরে তাহরীমা বলিয়া ডান হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলী ও কনিষ্ঠাঙ্গুলী দ্বারা বাম হাতের কব্জাকে আঁটিয়া ধরিয়া বাকী তিনটি আঙ্গুল বাম হাতের বাহুর উপর সোজা রাখিয়া বাম হাতের আঙ্গুলগুলি একত্র করিয়া নাভীর নীচে হাত বাঁধিবে।

মহিলাঃ

তাকবীরে তাহরীমাহ্ বলিয়া বাম হাত খানা আঙ্গুল মিলিতাবস্থায় বুকের উপর রাখিয়া ডান হাতের তালু আঙ্গুল মিলিতাবস্থায় বাম হাতের পিঠের উপর রাখিয়া দিবে।

(৪) পুরুষঃ

রুকু করিবার সময় এমনভাবে ঝুকিবে, যেন মাথা, পিঠ এবং কোমর বরাবর হইয়া যায়।

মহিলাঃ

এই পরিমান ঝুঁকিবে, যাহাতে হাত হাঁটু পর্যন্ত পৌঁছে।কোমর, পিঠ, মাথা বরাবর হওয়ার প্রয়োজন নাই।

(৫) পুরুষঃ

রুকুর সময়ন হস্তদ্বয়ের আঙ্গুল ফাঁক ফাঁ করিয়া হাঁটু মজবুত করিয়া ধরিবে।

মহিলাঃ

হাতের আঙ্গুল মিলাইয়া হাঁটু পর্যন্ত পৌছাইবে।

(৬) পুরুষঃ

বাজু, কনুই বাহু রুকুর অবস্থায় পাজর, পেট, উরু হইতে পৃথক রাখিবে।

মহিলাঃ

বাজু বগলের সঙ্গে কনুই এবং হাত পেট এবং উরুর সঙ্গে ভালরুপে চাপাইয়া মিলাইয়া রাখিবে।

(৭) পুরুষঃ

সিজদা অবস্থায় পেট উরু হইতে, বাজু বগল হইতে, বাহু মাটি হইতে পৃথক রাখিবে।

মহিলাঃ

পেট রানের সঙ্গে, বাহু মাটি এবং হাঁটুর সঙ্গে লাগাইয়া রাখিবে।

(৮) পুরুষঃ

সিজদার মধ্যে পায়ের আঙ্গুল ক্বিবলার দিকে মুড়াইয়া রাখিয়া তাহার উপর ভর দিয়া পাতা দুইখানা খাড়া রাখিবে।

মহিলাঃ

উভয় পায়ের পাতা ডান দিকে বাহির করিয়া বাম পায়ের পাতার উপর দিয়া ডান পায়ের পাতা মাটিতে বিছাইয়া রাখিবে।

(৯) পুরুষঃ

হাঁটু হইতে ১ হাত পরিমান দুরত্বে উভয় হাতের তালু আঙ্গুল মিলিতাবস্থায় মধ্যখানে সামান্য ফাঁক রাখিয়া মাটিতে রাখিয়া মধ্যখানে নাক ও কপাল দ্বারা সিজদা করিবে এবং কনুই মাটি ও পেট হইতে পৃথক রাখিবে।

মহিলাঃ

উভয় হাতের আঙ্গুল মিলিতাবস্থায় হাতের কব্জি হাটুর সঙ্গে লাগাইয়া রাখিয়া পেট উরুর সঙ্গে মিলাইয়া রাখিয়া এবং হাতের তালু ও বাহু মাটিতে শরীরের সঙ্গে মিশাইয়া খুব সংকুচিত হইয়া নাক ও কপাল দ্বারা দুই হাতের মাঝখানে ফাঁকা জায়গায় সিজদা করিবে।

(১০) পুরুষঃ

বসার সময় ডান পায়ের আঙ্গুলগুলি মুড়াইয়া রাখিয়া তাহার উপর ভর দিয়া পায়ের পাতা খাড়া রাখিবে এবং বাম পায়ের পাতা বিছাইয়া তাহার তালুর উপর বসিবে।

মহিলাঃ

উভয় পায়ের পাতা ডান দিকে বাহির করিয়া দিয়া চোতড় (নিতম্ব) মাটিতে লাগাইয়া বসিবে।

(১১) পুরুষঃ

বসা অবস্থায় হাতের আঙ্গুল স্বাভাবিক অবস্থায় রাখিয়া তালু রানের উপর আঙ্গুলের মাথা হাটু পর্যন্ত রাখিবে। বাহু রান হইতে কনুই পেট হইতে পৃথক রাখিবে।

মহিলাঃ

বসা অবস্থায় হাতের আঙ্গুল মিলাইয়া তালু হাটুর সঙ্গে বাহু রানের সঙ্গে, কনুই পেটের সঙ্গে, বাজু বগলের সঙ্গে মিলাইয়া রাখিবে।

(১২) পুরুষঃ

মাগরিব, ইশা, ফজর, জুমু'আ, 'ঈদ, ফরজের ১ম দুই রাক 'আতে সূরা ক্বিরা'আত এবং উঠা - বসার তাকবীর শব্দ করিয়া পড়িবে।

মহিলাঃ

সর্বাবস্থায় তাকবীর দু'আ, ক্বিরা'আত সব কিছুই চুপে চুপে পড়িবে।

(১৩) পুরুষঃ

পাঞ্জেগানা, জুমু'আ, 'ঈদ, জামা'আতের সহিত পড়িবে।

মহিলাঃ

মহিলাদের জামা'আতে নামাজ পড়া মাকরুহ।

(১৪) পুরুষঃ

শুধু নাভী হইতে হাটু পর্যন্ত ঢাকিয়া নামাজ পড়িলেই চলে।

মহিলাঃ

চেহারা এবং হাতের কব্জি ব্যতীত সমস্ত শরীর ঢাকিয়া নামাজ পড়িতে হয়।

(১৫) পুরুষঃ

জামি'মাসজিদে যাইয়া জামা'আতের সহিত নামাজ পড়া উত্তম।

মহিলাঃ

ঘরের ভিতরের কুঠুরীতে যত বেশী গোপনে হয়, নামাজ পড়া উত্তম।

জামায়াতে নামায পড়ার নিয়ম

জামায়াতে নামায

জামায়াতে নামাজ পড়ার সময় ঈমামের অনুসরণ করার নিয়ত করতে হয়। ঈমাম জোহর ও আসর নামাজে আস্তে কেরাত পড়বে। এছাড়া বাকি সমস্ত নামাজে উচ্চস্বরে কেরাত পড়বে। মুক্তাদীগণ (যারা ঈমামের অনুসরণ করে নামাজ পড়ে) প্রত্যেক রাকাতেই চুপচাপ শুধু শ্রবণ করবে কিছু পড়বেনা। ঈমাম সাহেব "ছামিয়াল্লা-হুলিমান্ হামিদাহ" বলে রুকু থেকে সোজা হলে মুক্তদীরা "রব্বানা লাকাল্ হাম্দ" ও " হাম্দান কাসীরান্ তয়্যিবান মোবা-রকান্ ফীহি" পড়বে। এছাড়া বাকি সমস্ত রুকন আদায়ের সময় ঈমামের সাথে সাথে মুক্তাদীকেও আস্তে তাকবীর বলতে হবে। মুক্তাদীকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যেন ঈমামের সামনে দাঁড়ানো না হয় এবং কোন রুকন ঈমামের আগে আদায় না হয়ে যায়।

মহিলাদের জামায়াত

মহিলাদের জন্য মসজিদের গিয়ে জামায়াতে নামাজ পড়ার চেয়ে বাড়ির ভিতর নামাজ পড়া উত্তম। ইসলামের প্রথম যুগে মহিলারা মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামাজ আদায় করতেন। কিন্তু পরবর্তী যুগে বিভিন্ন প্রকার ফিতনা ফ্যাসাদ ব্যপক হওয়ার কারণে খুলাফায়ে রাশেদীন ও সাহাবায়ে কিরাম একমত হয়ে মহিলাদের মসজিদ গমনের উপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। যেহেতু ঘরে নামাজ পড়া মহিলাদের জন্য সর্বাধিক নিরাপদ, তাই মহিলাদের ঘরে নামাজ পড়াই অধিক যুক্তিযুক্ত। বরং মহিলাদের জন্য ঘরের যে কোন স্থানে পড়া অপেক্ষা ঘরের একেবারে নিভৃতে নির্জন স্থানে নামাজ পড়ার অনেক বেশি সওয়াব রয়েছে। তবে যদি কোন স্থানে সরকারি ব্যবস্থাপনায় যথাযথ পর্যবেক্ষণ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করণের দ্বারা চলাচল সম্পূর্ণভাবে ফিতনা মুক্ত ও নিরাপদ হয় তবে মহিলাদের জামায়াতে নামাজ পড়তে কোন অসুবিধা নেই।

ঈমামতির নিয়ত

নিয়ত:

আমি আল্লাহর ওয়াস্তে কিবলামুখী হয়ে; যারা উপস্থিত আছে এবং যারা এখনও উপস্থিত হয়নি সকল মুক্তাদিদের ঈমামতির নিয়ত করছি। আল্লা-হু আক্বার।

মাসবুকের নামাজের নিয়ম

মাসবুকের নামায

মাসবুকের নামাজ (জামাতের আংশিক নামাজ ছুটে গেলে)

যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহর। দরুদ ও সালাম আল্লাহর রাসূল (সা) এর উপর। পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি। জামাতে নামায শুরু হবার পর আপনি যদি ইমামের সাথে কোন রাকাত মিস করেন তবে আপনি শরীয়তের ভাষায় মাসবুক । কোন রাকাতের রুকু পেলেই সেই রাকাত পেয়েছে বলে গণ্য হবে ।

নামায পড়ার উদ্দেশ্যে মসজিদে বা অন্য কোনো স্থানে আগমন করার সময় যদি নামাযীর যথাস্থানে পৌঁছানোর পূর্বে জামাআত দাঁড়িয়ে যায় কিংবা জামাআত দাঁড়ানোর পর সে যদি সেই জামাআতে শরীক হতে চায়, তাহলে সে যেন ধীর-স্থীর অবলম্বন করতঃ জামাআতে যায়, দৌড়া-দৌড়ি বা তাড়াহুড়া না করে।

নবী (সাঃ) বলেনঃ

” إذا سمعتم الإقامةَ فامشوا إلى الصلاةِ و

عليكم بالسكينةِ والوقارِ، ولا تُسرعوا، فما

أدركتم فصلّوا، وما فاتكم فأتِمّوا” متفق عليه

“যখন তোমরা ইকামত শুনবে, তখন তোমরা শান্ত ও স্থৈর্য সহকারে নামাযে চলো, দ্রুত চলো না। যা পাবে তা পড়ে নিবে আর যা ছুটে যাবে তা পূরণ করে নিবে”। [বুখারী, আযান অধ্যায়, নং ৬৩৬/মুসলিম, মাসাজিদ, নং ১৩৫৯]

মাসবুকের নামাযের নিয়ম হচ্ছে

(১) ইমামের সাথে সে সালাম ফিরাবে না । ইমাম প্রথম সালাম সম্পূর্ণ করার পর সে দাড়িয়ে যাবে ।

(২) এরপর মাসবুক তার নামাযের যতটুকু বাকি আছে তা সম্পূর্ণ করে তাশাহুদ, দরুদ, দুআ মাসূরা পড়ে সালাম ফিরিয়ে সাধারণ ভাবে নামায শেষ করবে ।

(৩) কিরাআত পড়ার ব্যাপারে মাসবুক তার যে কয় রাকাত বাকি আছে তা অনুসরণ করবে । এক রাকাত বাকি থাকলে সূরা ফাতিহা ও অন্য একটি সূরা মিলিয়ে পড়বে । দুই রাকাত বাকি থাকলে উভয় রাকাতে সূরা ফাতিহা ও আপর সূরা মিলিয়ে পড়বে । তিন রাকাত বাকি থাকলে প্রথম দুই রাকাতে সূরা ফাতিহার সাথে অপর সূরা মিলাবে কিন্তু তৃতীয় মিস যাওয়া রাকাতে কেবল সূরা ফাতিহা পড়বে ।

(৪) বৈঠকের ব্যাপারে মাসবুক ইমামসহ যে কয় রাকাত নামায পড়েছে তা হিসেব করে বৈঠকে যাবে । প্রতি জোড় রাকাত শেষে বৈঠকে বসতে হয় । তাই যে কেবল এক রাকাত পেল ইমামের সাথে সে ইমামের নামায শেষ করার পর দাড়িয়ে নিজে এক রাকাত পড়ে সেজদা সম্পন্ন করার পর বসে তাশাহুদ পড়বে কারণ এটা তার নামাযের দ্বিতীয় রাকাত । এরপর সাধারণ ভাবে নামায শেষ করবে ।

আশা করছি বিষয়টি পরিষ্কার হয়েছে, সর্বোপরি আল্লাহই ভাল জানেন ।

সিজদা সাহু করার সঠিক নিয়ম

সিজদা সাহু সিজদা সাহু করার সঠিক নিয়ম নামাযের ফরয ওয়াজিবে কোন ভুল করলে সেই ভুল সংশোধনের জন্যে দুইটা অতিরক্ত সিজদা দিতে হয়। নামাযে ভুল সংশোধনের জন্য অতিরিক্তি এই দুইটি সিজদাকে "সিজদা সাহু" বল হয়। সিজদা সাহু সালাম ফেরানোর আগে ও পরে দুইভাবেই করা যায়। তবে আমাদের দেশে বহুল প্রচলিত মকসুদুল মুমিনীণ নামক বেদাতী বইয়ের সাজদা সাহুর নিয়ম ঠিক নয়।

আমাদের দেশে প্রচলিত ভুল নিয়মঃ

শেষ বৈঠকে শুধু আত্তাহিয়্যাতু পড়ে, শুধু ডান দিকে একবার সালাম ফিরিয়ে দুইটা সিজদা দিয়ে আবার আত্তাহিয়্যাতু দুরুদ পড়ে সালাম ফিরানোর নিয়ম - এটা ঠিকনা, কোন সহীহ হাদীসে সেজাদা সাহু এমন আসেনাই। কারো ক্ষমতা থাকলে এইরকমঃ “আত্তাহিয়্যাতু পড়ে শুধুমাত্র ডান দিকে সালাম ফিরিয়ে সিজদা সাহু দেওয়ার” পক্ষে সহীহ হাদীস থেকে দলীল পেশ করুন।

সিজদা সাহু করার সঠিক নিয়ম হচ্ছে

“সালাতে কম বেশি যাই হোক, আত্তাহিয়্যাতু, দরুদ, দুয়া মাসুরা পড়ে তাকবীর দিয়ে পর পর দুটি সিজদাহ দিয়ে সালাম ফিরিয়ে সালাত শেষ করতে হবে।” বুখারী ও মুসলিম, মিশকাত সালাত অধ্যায় সাহো অনুচ্ছেদ, ১১৮ নাম্বার হাদীস। অথবা, “সালাতে কম বেশি যাই হোক, সালামের ফেরানোর আগে বা পরে দুইটি (অতিরিক্ত) সাহু সিজদা দিতে হবে।” সহীহ মুসলিম, নাওয়াতুল আওতার ৩/৪১১। অর্থাৎ দুইটাই জায়েজ, সালামের আগে বা পরে দুইটা অতিরিক্ত সিজদা দেওয়া।

সালাম ফেরানোর আগে সিজদা সাহু যেভাবে করবেনঃ

সিজদা সাহু দেওয়া ওয়াজিব হয় এমন কোন ভুল করলে, শেষ বৈঠকে আত্তাহিয়্যাতু, দুরুদ, দুয়া মাসুরা পরে আল্লাহু আকবার বলে দুইটি সিজদা সাহু দেবেন। দুই সিজদার মাঝখানে বা সিজদাতে তাসসবীহর পরে দুয়া করতে পারবেন। ২টা অতিরিক্ত সিজদা দিয়ে আর কিছু পড়তে হবেনা, ডানে ও বামে সালাম ফিরিয়ে নামায শেষ করবেন।

সালাম ফেরানোর পরে সিজদা সাহু যেভাবে করবেনঃ

সিজদা সাহু দেওয়া ওয়াজিব হয় এমন কোন ভুল করলে, শেষ বৈঠকে আত্তাহিয়্যাতু, দুরুদ, দুয়া মাসুরা পরে ডানে ও বামে দুইদিকে সালাম ফেরাবেন। এরপরে আল্লাহু আকবার বলে দুইটি সিজদা সাহু দেবেন। দুই সিজদার মাঝখানে বা সিজদাতে তাসসবীহর পরে দুয়া করতে পারবেন। ২টা অতিরিক্ত সিজদা দিয়ে আর কিছু পড়তে হবেনা, আবার ডানে ও বামে দুইদিকেই সালাম ফিরিয়ে নামায শেষ করবেন।

তবে আমার কাছে আত্তাহিয়্যাতু ও দরুদ, দুয়া মাসুরা পড়ে দুইটা সিজদাহ সাহু দিয়ে সবার শেষে একবারে সালাম ফিরানোকেই সহজ মনে হয়, কারো ইচ্ছা হলে এমন বা অন্য নিয়মেও করতে পারেন। কিন্তু আত্তাহিয়্যাতু পড়ে একপাশে সালাম ফিরিয়ে আবার তাশাহুদ পড়ার কোনো সহীহ হাদীস নেই।

“এক পাশে সালাম ফিরানো বেদাত” – বলেছেন হানাফী বড় আলেম ইবনুল হুমাম আল-হানাফী (ফতহুল কাদীর ১/২২২ পৃষ্ঠা)।

সিজদা সাহু যে কারণে দিতে হয়ঃ

খুব কমন যে ভুলগুলো আমরা নামাযের মধ্যে করি সেগুলো ও সিজদা সাহু করার সঠিক নিয়ম বর্ণনা করা হলো –

সিজদা সাহু করার সঠিক নিয়মঃ

আপনি ২ রাকাত বা ৪ রাকাতের শেষ বৈঠকে বসবেন। আত্তাহিয়্যাতু পড়ে দুরুদ শরীফ, দুয়া মাসুরা পড়বেন। এর পর কোনো সালাম না ফিরিয়ে আপনি অতিরিক্ত দুইটা সিজদা দিবেন, প্রত্যেকবার তাকবীর দিবেন সিজদার সময়ে আর, সিজদার তাসবীহ সুবহা’না রাব্বিয়াল আ’লা পড়বেন। পরে দুইদিকে সালাম ফিরিয়ে নামায শেষ করবেন।

(১) ৪ রাকাত নামাযের ১ম বৈঠকে আত্তাহিয়্যাতু না পড়েই দাঁড়িয়ে গেলে কি করবেন?

উত্তরঃ

দাড়াতে যাচ্ছেন কিন্তু দাড়ান নি, তাহলে আর দাড়াবেন না, বসেই যাবেন। আত্তাহিয়্যতু পড়ে বাকি নামায পুরা করবেন, কোন সিজদা সাহু দেওয়া লাগবেনা। কিন্তু, দাঁড়িয়ে গেলে আর বসবেন না, বাকি নামায শেষ করে উপরে যেই নিয়মে সিজদা সাহু দিতে বলা হয়েছে সেইভাবে সিজদা সাহু দিয়ে নামায শেষ করবেন।

(২) ৪ রাকাত নামাযে ২ রাকাত শেষে সালাম ফিরিয়ে ফেললেন। এমন অবস্থায় আবার দাঁড়িয়ে যাবেন, বাকি দুই রাকাত পূর্ণ করে শেষে সিজদা সাহু দিবেন। এমনকি কেউ যদি উঠে অন্য কোথাও চলে যায় মাঝখানে কথাও বলে তবুও সে ২ রাকাত পড়ে শেষে ২টি সিজদা সাহু দিয়ে সালাম ফিরিয়ে নামায শেষ করবেন, নতুন করে ৪ রাকাত আবার পড়তে হবেনা। অনুরূপ ১ রাকাত বা ৩ রাকাত পড়ে সালাম ফিরিয়ে ফেললেও বাকি ১ রাকাত পড়ে শেষ সেজদা সাহু দিবেন।

(৩) ২ বা ৪ রাকাত নামাযে কেউ যদি ভুলে অতিরিক্ত ৩য় বা ৫ম রাকাতের জন্য দাঁড়িয়ে যায় তাহলে কি করতে হবে?

উত্তরঃ

অতিরিক্ত রাকাত পড়ার আগেই বুঝতে পারে বা রাকাত চলা অবস্থায় মনে পড়ে তাহলে রাকাত পূরণ না করেই বসে যেতে হবে, ইচ্ছা করে অতিরিক্ত ১ রাকাত পড়লে নামায ভেঙ্গে যাবে। বসে তাশাহুদ, দুরুদ, দুয়া মাসুরা পড়ে ২টা অতিরিক্ত সিজদা সাহু দিবেন, প্রত্যেক সিজদায় যাওয়ার আগে ও পরে স্বভাবিক নিয়মে "আল্লাহু আকবার" বলে তাকবীর দিবে। ২টা সিজদা সাহু দিয়ে আবার আত্তাহিয়্যাতু বা অন্য কিছু পড়তে হবেনা। কোনো দুয়া না পড়ে সালাম ফিরিয়ে নামায শেষ করবেন।

আর অতিরিক্ত রাকাত পড়ার পরে কিন্তু সালাম ফেরানোর আগে মনে হলে একই নিয়মে ২টা সিজদা সাহু দেবেন। আর যদি সালাম ফেরানোর পরে, এমনকি মাঝখানে অন্য কাজ বা কথা বলার পরে মনে পড়ে তাহলে যখনই মনে হবে তখন ওজু অবস্থায় কিবলামুখী হয়ে সরাসরি আল্লাহু আকবার বলে ২টা সিজদা দিবেন, ২টা সিজদা সাহু দিয়ে ডানে বামে সালাম ফেরাবেন, আগে বা পরে কোনো কিছু পড়তে হবেনা।

(৪) রুকু দুইবার বা সিজদা তিনবার করে ফেললেন। বাকি নামায পূর্ণ করে শেষে সিজদা সাহু দিবেন।

(৫) কোনো এক রাকাতে রুকু, সিজদায় উলটা পাল্টা করলেন অর্থাত দিলেন না, বা সুরা ফাতেহা পড়েন নাই। এইগুলো নামাযের রুকন, এইগুলো ছাড়া এক রাকাত হয় না। এইরকম কোনো রুকন ছুটে গেলে ঐ রাকাত নামাযের মধ্যে গণ্য হয়না। এইজন্য আপনি পুরো নামায বাদ দিবেন না। ধরুন ৪ রাকাত পড়ছেন, তাহলে বাকিগুলো ঠিক থাকবে, আপনি চতুর্থ রাকাতের বৈঠকের পর সালাম না ফিরিয়ে দাঁড়িয়ে যাবেন, এক রাকাত অতিরিক্ত পড়ে শেষ বৈঠক করে সিজদা সাহু দিবেন।

(৬) নামায ২ রাকাত না ৩ রাকাত পড়া হলো সেটা নিয়ে বা কোনো কিছু একটা করেছেন কিনা সন্দেহ দেখ দিলে প্রথম দ্রুত সিদ্ধান্ত নিবেন কোনটা আপনার কাছে বেশি মনে হচ্ছে, ২ রাকাত না ৩ রাকাত। যেটা মনে বেশি জোরালো হবে সেটাকেই ধরবেন আর অন্যটার চিন্তা মাথা থেকে বাদ দিবেন। আপনি এইভাবে নামায পূর্ণ করবেন আর শেষে সিজদা সাহু দিবেন। আর যদি ২ রাকাত না ৩ রাকাত কোনোটার ব্যাপারে নিশ্চিত হতে না পারেন, তাহলে কম রাকাত অর্থাৎ এই ক্ষেত্রে ২ রাকাত ধরে নামায পূর্ণ করবেন আর শেষে সিজদা সাহু দিবেন।

(৭) ১ম/৩য় রাকাতে যদি না দাঁড়িয়ে বসে যান তাহলে কি করবেন?

উত্তরঃ

কিছুইনা - মনে হলে দাড়িয়ে যাবেন, বাকি নামায শেষ করবেন কোন সাহু সিজদা লাগবেনা। আর যদি বৈঠক করে ফেলেন অর্থাৎ আত্তাহিয়্যাতু পড়া শেষ তাহলে শেষ বৈঠকে সিজদা সাহু দেবেন। উল্লেখ্য, ১ম ও ৩ইয় রাকাতের ২ সিজদার পরে উঠার আগে সরাসরি না উঠে একটু বসে পরে উঠা সুন্নত - একে প্রশান্তির বৈঠক বলা হয়।

এখানে চেষ্টা করেছি সহীহ বুখারী, সহীহ মুসলিম, অন্য হাদীসে কিতাব ও ফিকহের কিতাব যেমন নায়লুল আওতার, ফাতওয়া আরকানুল ইসলাম, নামাযের উপর বই থেকে সহজ ভাষায় বুঝিয়ে বলার জন্য। কারো বুঝতে সমস্যা হলে, তাহলে এই পোস্ট নিয়ে সন্দেহের মাঝে পড়বেন না, আগে যা করতেন তাই করবেন, নতুনটা করতে গিয়ে বিপদে পড়বেন না। সঠিক না জানা বা বুঝতে সমস্যা হলে কেউ যদি অনিচ্ছাকৃভাবে ভুলভাবে করতে বাধ্য হন, ইন শা’ আল্লাহ তাতে কোন দোষ হবেনা।

তাহিয়্যাতুল মসজিদের নামায

তাহিয়্যাতুল মসজিদের নামায

'তাহিয়্যাতুল মসজিদ' নামাজের নিয়তঃ

বাংলা নিয়তঃ

"আমি দুই রাকাআত তাহিয়্যাতুল নামাজের' নামাজ আদায় করছি।'

নোটঃ

আরবীতে কিংবা বাংলায় মুখে উচ্চারণ করা জরুরী নয়, বরং যে কোনো ভাষায় মনে মনে নিয়ত করাই যথেষ্ট।

নামাজ পড়ার নিয়ম

সাধারণ সুন্নাত ও নফল নামাজের ন্যায় যেকোন সূরা-কিরাত দ্বারা ' তাহিয়্যাতুল মাসজিদ'-এর নামাজ আদায় করা যায়। উভয় রাকাআতেই সূরা ফাতিহার পর অন্য সূরা মিলাতে হবে এবং আখেরী বৈঠক আত্তাহিয়্যাতু, দরুদ শরীফ ও দোয়ায়ে মাছূরা সব পড়ে সালাম ফিরাতে হবে।

'তাহিয়্যাতুল মসজিদ' সম্পর্কে কতিপয় মাসায়েল

কেউ কেউ মনে করেন যে, মাসজিদে প্রবেশ করে প্রথমে একটু বসে তারপর উঠে এই নামাজ পড়তে হয়। কিন্তু তাদের এই ধারণা ঠিক নয়। কেননা নিয়ম হলো বসার পূর্বেই আদায় করা। এর দ্বারা সাওয়াবও বেশী হয়। তবে কিছুক্ষণ বসার পরেও পড়া যায়। কিন্তু এর দ্বারা সাওয়াব কম হয়।

সময় কম হলে করণীয়

যদি কোন ব্যক্তি মাসজিদে প্রবেশ করে দেখে যে, সময় বেশী নেই। এখনর "তাহিয়্যাতুল মসজিদ" পড়তে গেলে সুন্নাতে মুয়াক্কাদা পড়া যাবে না কিংবা ফরয নামাজ ছুটে যাবে, তাহলে সে তখন "তাহিয়্যাতুল মসজিদ" পড়বে না; বরং সুন্নাত বা ফরজ নামাজ আদায় করবে এবং সুন্নাত বা ফরয নামাজের মধ্যেই "তাহিয়্যাতুল মসজিদ" - এর নিয়ত করবে। ইনশাআল্লাহ, এর দ্বারা সুন্নাত এবং ফরয আদায়ের সাথে সাথে "তাহিয়্যাতুল মসজিদ" এর সাওয়াবও লাভ হবে।(আহকামে যিন্দেগী)

তাহিয়্যাতুল অজু ও দুখুলুল মসজিদ এক সাথে আদায় করাঃ

অজু করার পর মাসজিদে প্রবেশ করে দুই রাকাআত নফল নামজ আদায় করার দ্বারা তাহিয়্যাতুল অজু ও দুখুলুল মসজিদ উভয়টি এক সাথে আদায় হয়ে যাবে। কোন কোন কিতাবে উল্লেখ্য আছ যে, মাসজিদে প্রবেশ করে যেকোন নামাজ আদায় করলেই 'তাহিয়্যাতুল মসজিদ' আদায় হয়ে যাবে। অনুরুপভাবে অজু করার পর অজুর পানি শুষ্ক হওয়ার পূর্বে কোন নামাজ আদায় করলেই 'তাহিয়্যাতুল অজু' আদায় হয়ে যাবে।(আহসানুল ফাতওয়া ৩:৪৮১ পৃ ; রাদ্দুল মুহতার ১:৫০২ পৃ.)

'তাহিয়্যাতুল মসজিদ' সম্পর্কে কতিপয় হাদীস

তাহিয়্যাতুল মসজিদ' -এর ফযীলতঃ

হযরত যায়েদ ইবনে খালিদ জুহানী রাযি. থেকে বর্ণিত, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেনঃ যে ব্যক্তি উত্তমরুপে অজু করে, অতঃপর দুই রাকাআত নামাজ এমনভাবে আদায় করে যে, নামাজের মধ্যে কোন ভূল করে না। অর্থাৎ খুশু -খুজুর সাথে নামাজ আদায় করে, তাহলে তার পেছনের সকল গুনাহ মাফ হয়ে যায়। (সহীহ আবূ দাউদ, হাদীস নং ৯০৫)

মাসজিদে প্রবেশ করে বসার পূর্বে দু'রাকআত নামাজ পড়বে

দুখুলুল মসজিদ নামাজমসজিদে প্রবেশ করে বসবার পূর্বেই এ নামাজ পড়া হয় : হযরত আবু কাতাদা (রাজিঃ) থেকে বার্ণিত আছে, নবী করীম (সা.) বলেছেন, তোমাদের মধ্য থেকে যখন কোন ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করবে তখন বসবার পূর্বেই দুই রাকাত নফল নামাজ পড়া উচিত। (বুখারী শরীফ, ১ম খ-, ৬৩ পৃষ্ঠা)

হযরত ওসমান (রাজি.) থেকে হাদীস বর্ণিত আছে নবী করীম (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়বে এক নামাজ থেকে অন্য নামাজ পর্যন্ত আল্লাহ তা’আলা তার সগীরা গুনাহ মাফ করে দেবেন। (মুসলিম শরীফ, ১ম খ-, ১২০ পৃষ্ঠা)

এই নামাজের সময়মাকরুহ সময় ছাড়া মসজিদে প্রবেশ করে এ নামাজ যে কোনো সময় পড়া যায়।

আওয়াবীনের নামায

আওয়াবীনের নামায

আওয়াবীন নামাজের ওয়াক্ত ও রাকাআত

মাগরিবের পর ইশার আগে। ২ থেকে ২০ রাক'আত নামাজ। ইহাকে আওয়াবীনের নামাজ বলে। ইহার বহু ফজিলত রহিয়াছে। তবে উত্তম হচ্ছে কমপক্ষে ৬ রাকাআত পড়া।

আওয়াবীন নামাজের নিয়তঃ

বাংলা নিয়তঃ

"আমি দুই রাকাআত আওয়াবীনের নামাজ আদায় করছি।'

নোটঃ

আরবীতে কিংবা বাংলায় মুখে উচ্চারণ করা জরুরী নয়, বরং যে কোনো ভাষায় মনে মনে নিয়ত করাই যথেষ্ট।

আওয়াবীন নামাজ পড়ার নিয়ম

দুই দুই রাকাআত করে আওয়াবীনের নামাজ আদায় করা যায়। যেকোন সূরা দ্বারা এই নামাজ পড়া যায়। উভয় রাকাআতেই সূরা ফাতিহার পর অন্য সূরা মিলাতে হবে এবং আখেরী বৈঠক আত্তাহিয়্যাতু, দরুদ শরীফ ও দোয়ায়ে মাছূরা পড়ে সালাম ফিরাতে হবে।

আওয়াবীন নামাজের ফযিলত সম্পর্কে কতিপয় হাদিস

আওয়াবীনের নামাজহযরত আবু হুরায়রা (রাজি.) থেকে বর্ণিত, নবী করীম (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি মাগরিবের নামাজের পর ছয় রাকাত নফল নামাজ পড়বে, এসবের মাঝাখানে কথাবার্তা বলবে না, আল্লাহ্ তা’আলা তার ১২ বছরের নফল ইবাদাত করার ছাওয়াব দান করবেন। (১) তিরমিযী শরীফ ১ম খ- ৯৮ পৃৃষ্ঠা। (২) মিশকাত শরীফ ১ম খ- ১০৪ পৃষ্ঠা।

হযরত আম্মার বিন ইয়াসীন (রাজি.) থেকে বর্ণিত, নবী করীম (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি মাগরীবের পর ছয় রাকাত আওয়াবীনের নামাজ পড়বে, তার গোনাহসমূহ মাফ করে দেওয়া হবে, যদিও তার গোনাহ সাগরের ফেনাতুল্য হয়। ইবনে মাজাহ, ১ম খ-, ৮১ পৃষ্ঠা।

হযরত আয়েশা (রাজি.) থেকে বর্ণিত, নবী করীম (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি মাগরীবের পর বিশ রাকাত নফল নামাজ পড়বে আল্লাহ্ তা’আলা তার জন্য বেহেশতে একটি ঘর প্রতিষ্ঠিত করবেন অর্থাৎ সে বেহেশতে যাবে। (১) তিরমিযী শরীফ, ১ম খ-, ৯৮ পৃৃষ্ঠা। (২) মিশকাত শরীফ, ১ম খ-, ১০৪ পৃষ্ঠা।এই নামাজের সময় মাগরিবের ফরজ ও সুন্নাত নামাজের পর কমপক্ষে ৬ রাকাত এবং ঊর্ধ্বে ২০ রাকাত নফল নামাজ পড়া যায়, ইহাকে সালাতুল আওয়াবীন বলে।

চাশতের নামায

চাশতের নামায

চাশতের নামাজেরর ওয়াক্ত ও রাকাআত

সূর্য যখন আকাশে এক-চতুর্থাংশের উপরে ওঠে এবং সূর্যের তাপ প্রখর হয়, তখন থেকে দ্বিপ্রহরের পূর্ব পর্যন্ত সকাল ৯টা থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে চাশতের নামাজের সময়। ৪ হইতে ১২ রাক'আত নামাজ পড়া সুন্নাত। ইহাকে চাশতের নামাজ বলে।

চাশতের নামাজের নিয়তঃ

বাংলা নিয়তঃ

"আমি দুই রাকাআত চাশতের নামাজ আদায় করছি।'

নোটঃ

আরবীতে কিংবা বাংলায় মুখে উচ্চারণ করা জরুরী নয়, বরং যে কোনো ভাষায় মনে মনে নিয়ত করাই যথেষ্ট।

চাশতের নামাজ পড়ার নিয়ম

দুই দুই রাকাআত করে চাশতের নামাজ আদায় করা যায়। যেকোন সূরা দ্বারা এই নামাজ পড়া যায়। উভয় রাকাআতেই সূরা ফাতিহার পর অন্য সূরা মিলাতে হবে এবং আখেরী বৈঠক আত্তাহিয়্যাতু, দরুদ শরীফ ও দোয়ায়ে মাছূরা পড়ে সালাম ফিরাতে হবে।

চাশতের নামাজের ফযিলত সম্পর্কে কতিপয় হাদিস

সালাতুত দুহা বা চাশতের নামাজহযরত বুরাইদা (রাজি.) থেকে বর্ণিত নবী করীম (সা.) বলেছেন, মানুষের শরীরে ৩৬০টি জোড়া আছে। অতএব মানুষের কর্তব্য হলো প্রত্যেক জোড়ার জন্য একটি করে সাদকা করা। সাহাবায়ে কিরাম (রাজি.) বললেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ! কার শক্তি আছে এই কাজ করার? তিনি (সা.) বললেন, মসজিদে কোথাও কারো থু থু দেখলে তা ঢেকে দাও, অথবা রাস্তায় কোনো ক্ষতিকারক কিছু দেখলে সরিয়ে দাও, তবে এমন কিছু না পেলে, চাশতের দুই রাকাত নামাজই এর জন্য যথেষ্ট। এই হাদীসে চাশতের নামাজের গুরুত্ব ও মাহাত্ম্যের কথাই বুঝানো হয়েছে এবং চাশতের নামাজ ৩৬০টি সাদকার সমতুল্য। (১) আবু দাউদ শরীফ, ১ম খ-, ১৮২ পৃষ্ঠা। (২) মিশকাত শরীফ, ১ম খ-, ১১৬ পৃষ্ঠা।

হযরত আনাস ইবনে মালেক (রাজি.) থেকে বর্ণিত, নবী করীম (সা.) বলেছেন, যদি কোনো ব্যক্তি চাশতের ১২ রাকাত নামাজ আদায় করে তাহলে আল্লাহ্ তা’আলা তার জন্য বেহেশতে স্বর্ণের অট্টালিকা প্রস্তুত করে দেবেন। (১) তিরিমিযী শরীফ, ১ম খ-, ১০৮ পৃষ্ঠা। (২) মিশকাত শরীফ, ১ম খ-, ১১৬ পৃষ্ঠা।

হযরত আবু হুরায়রা (রাজিঃ) বলেন, আমার বন্ধু মুহাম্মদ (সা.) আমাকে তিনটি বিষয় আমল করার উপদেশ দিয়েছেন। (১) প্রতি মাসের প্রথম ৩ দিন রোজা রাখা, (২) চাশতের নামাজ আদায় করা, (৩) ঘুমাতে যাওয়ার পূর্বে ভিতরের নামাজ আদায় করা। (১) বুখারী শরীফ তাহাজ্জুদ অনুচ্ছেদ, অধ্যায় দুই হা. ২৭৪, (২) মুসলিম শরীফ কিতাবুস সালাত অধ্যায় ৪, হা. ১৫৬০।

যে ব্যক্তি নিয়মিত চাশতের নামাজ পড়ে তার আর্থিক অভাব-অনটন থাকতে পারে না, রিজিক বৃদ্ধি হয়। নবী করীম (সা.) মক্কা বিজয়ের দিন দুপুরের পূর্বে উম্মে হানীর গৃহে সংক্ষিপ্তভাবে দুই/দুই রাকাত করে ৮ রাকাত পড়েছিলেন। (১) তিরমিযী শরীফ, ১ম খ-, ১০৮ পৃষ্ঠা। (২) আবু দাউদ, ১ম খ-, ১৮২ পৃষ্ঠা।

চাশতের নামাজের রাকাতের সংখ্যা ২, ৪, ৮, ১২ রাকাত পর্যন্ত হাদীস গ্রন্থে পাওয়া যায়। হযরত আবু হুরায়রা থেকে বর্ণিত, নবী করীম (সা.) বলেছেন, সমুদ্রের ফেনার সমান গোনাহ্ হলে মাফ হয়ে যাবে চাশ্তের নামাজ পড়লে। (১) তিরমিযী শরীফ, ১ম খ-, ১০৮ পৃষ্ঠা। (২) ইবনে মাজাহ্, ১ম খ-, ৯৮ পৃষ্ঠা।

রাসূল সা. চাশতের নামাজ ৪ রাকাআতও আদায় করেছেন

হযরত মুয়ায রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি হযরত আয়েশা রাযি. কে প্রশ্ন করলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইশরাকের নামাজ কয় রাকাআত পড়তেন? আয়েশা রাযি. বললেন, (অধিকাংশ সময়) চার রাকাআত পড়তেন। তবে (কখনো কখনো) বেশিও পড়তেন। (শহীহ মুসলিম হাদিস নং -১৬৯৬)

ইশরাক্বের নামাজ

ইশরাক্বের নামায

সূর্য যখন গাছের উপর উঠিয়া যায় এবং সূর্যের রং পরিস্কার হইয়া যায়, তখন ইশরাক্বের ওয়াক্ত শুরু হয়। সূর্যোদয়ের ২৩ থেকে আধা ঘন্টা পর হইতে শুরু হয়। ২ বা ৪ রাক'আত নামাজ পড়া সুন্নাত। ইহাকে ইশরাক্বের নামাজ বলে।

এশরাক্বের নামাজ দিয়ে রাসূলুল্লাহ (সা.) দিন শুরু করতেন। এ নামাজের ওয়াক্ত ফজরের কমপক্ষে ২৩ থেকে আধা ঘন্টা পর হইতে শুরু হয়ে ২ ঘণ্টা অবধি থাকে। এ নামাজ পড়া সুন্নাত । নিয়ম হলো ফজরের নামাজের পর জায়নামাজ থেকে না ওঠে তাসবিহ-তাহলিল, দোয়া-দরুদ, জিকির-আজকার ইত্যাদিতে রত থাকা এবং ওয়াক্ত হলেই এ নামাজ পড়ে নেয়া। অবশ্য জায়নামাজ ছেড়ে ওঠে গেলেও এ নামাজ পড়া যায়, তবে সওয়াব আগের মতো হবে না। আসিম বলেন, আমরা আলী (রা.) কে রাসূলুল্লাহ (সা.) এর নফল নামাজ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) এর মতো কার শক্তি আছে? আমরা বললাম, আপনি তাঁর আমল সম্পর্কে আমাদের বলুন। আমরা আমল করতে চেষ্টা করব। তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ফজর পড়ে কিছু সময় অপেক্ষা করতেন। যখন সূর্য উপরে উঠত, উপরে ওঠার পরিমাণ ছিল আসরের ওয়াক্তের ন্যায়, তখন তিনি দুই রাকাত নামাজ পড়তেন। (বায়হাকি)। শাহ আবদুল আজিজ দেহলভি (রহ.) এর মতে, এশরাকের নামাজ দুই রাকাত। ২ বা ৪ রাক'আত নামাজ পড়া সুন্নাত ।

এশরাক্বের নামাজের মধ্যে দুই ধরনের ফজিলত নিহিত আছে

প্রথমত,

এ নামাজ পড়ার জন্য ফজরের পরে জায়নামাজে বসে থাকতে হয়। এ সময়টুকু অত্যন্ত বরকতময়।

দ্বিতীয়,

এশরাক্বের নামাজ

আলী (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ আদায় করে স্বীয় স্থানে বসে থাকে, তার জন্য ফেরেশতারা ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকেন। তারা এভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করেন, হে আল্লাহ, তাকে ক্ষমা করুন; হে আল্লাহ, তার প্রতি দয়া করুন। আর যে নামাজের অপেক্ষায় থাকে তার জন্যও ফেরেশতারা ক্ষমা প্রার্থনায় রত থাকেন। তারা এভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করেন, হে আল্লাহ, তাকে ক্ষমা করুন; হে আল্লাহ, তার প্রতি দয়া করুন। (মুসনাদে আহমদ)। হাদিস শরিফে বর্ণিত এশরাক্বের নামাজ আদায়ের বিভিন্ন ফজিলত।

একটি নফল হজ ও ওমরার সওয়াব, এ সম্পর্কে আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি জামাতের সঙ্গে ফজরের নামাজ আদায় করে এরপর বসে থেকেই সূর্য না ওঠা পর্যন্ত জিকির-আজকারে নিমগ্ন থাকে, অতঃপর দুই রাকাত নামাজ আদায় করে তার জন্য একটি হজ ও ওমরার সওয়াব রয়েছে। (তিরমিজি : ৫৮৬)।

জাহান্নাম থেকে নিষ্কৃতি। আলী (রা.) এর বর্ণিত অপর এক হাদিসে এসেছে, 'যে ব্যক্তি ফজরের সালাত আদায় করল এবং বসে বসে সূর্যোদয় পর্যন্ত আল্লাহর জিকির করল, অতঃপর দুই রাকাত বা চার রাকাত নামাজ আদায় করল, আগুন তাকে স্পর্শ করবে না। (বায়হাকি)।

মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে সেদিনের সব কাজের ফয়সালা করে দেয়া হয়। হাদিসে কুদসিতে এসেছে, আল্লাহ বলেন, হে আদম সন্তান, দিনের প্রথম ভাগে আমার জন্য চার রাকাত নামাজ নিশ্চিত করো, আমি দিনের শেষভাগে তোমার জন্য যথেষ্ট হয়ে যাব। (মুসনাদে আহমদ, খ- ২, পৃ. ৬১২)।

জানাযা নামাজের নিয়ম

জানাযা নামাজের নিয়ম

মৃত ব্যক্তির গোসলসম্পাদনা

জানাযার পূর্বে মৃত ব্যক্তিকে গোসল করানো হয়। মৃত ব্যক্তিকে গোসল দেওয়ানো ফরযে কেফায়া বা আবশ্যকীয় কর্তব্য। মুসলমান অধ্যুষিত এলাকায় কোন অপরিচিত মৃতদেহ পাওয়া গেলে এবং তাকে অমুসলিম বিবেচনা করার কারণ না থাকলে মুসলিম জ্ঞানে তাকে গোসল করাতে হবে। মৃত ব্যক্তি পুরুষ হরে তাকে গোসল করাবে কোন পুরুষ ব্যক্তি, একইভাবে মৃত ব্যক্তি নারী হলে তাকে গোসল করাবে আরেকজন নারী। গোসল সমাপনান্তে মৃত ব্যক্তিকে কাফন পরাতে হবে। গোসল করানোর জন্য প্রয়োজনীয় পরিমাণ পানি পাওয়া না গেরেতায়াম্মুমকরাতে হবে।কাফনসম্পাদনা

কোন মৃত মুসলমানকে মাটিতে দাফন করার পূর্বে যে কাপড় পরানো হয় তাকাফননামে অভিহিত। কাফন ব্যতিরেকে জানাযা পড়া যায় না।জানাযার পদ্ধতিসম্পাদনা

জামাতের সঙ্গে বা দলবদ্ধভাবে জানাযার নামায অনুষ্ঠিত হয়। তবে জামায়াতে জানাযা আদায় করা শর্ত নয়। নামাযে অংশগ্রহণকারীরা ইমামের পেছনে এক/তিন বা এরকম বেজোড় সংখ্যক কাতারে বা সারিতে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে এ নামায আদায় করেন। নামাযের আগেঅযুকরে পবিত্রতা অর্জন করা আবশ্যক। দাঁড়িয়ে এ নামাজ আদায় করতে হয় এবং সালাম ফেরানোর মধ্য দিয়ে এ নামায শেষ হয়। জানাযার নামাযে রুকু এবং সেজদা নাই। এটি ৪তাকবিরেরনামাজ।

নিয়ত পাঠের পর প্রথম তাকবির উচ্চারণের মধ্য দিয়ে জানাযার শুরু। প্রথম তাকবিরের পর বুকে হাত বাঁধতে হবে। তারপরসানাপড়তে হয় ও সানা পাঠ শেষে দ্বিতীয় তাকবির দিতে হয়। দ্বিতীয় তাকবিরের পরদরূদপাঠ করতে হবে। দরূদ পাঠান্তে তৃতীয় তাকবির দিতে হবে। তৃতীয় তাকবির উচ্চারণের পর মৃত ব্যক্তির জন্য নির্ধারিত দোয়া পাঠ করতে হয়। মৃত ব্যক্তি বালেগ বা পূর্ণবয়ষ্ক হলে একরকম আর নাবালেগ বা অপ্রাপ্তবয়ষ্ক পুরুষের ক্ষেত্রে আলাদা এবং অপ্রাপ্ত বয়ষ্ক নারীর ক্ষেত্রে আলাদা দোয়া রয়েছে। দোয়া পাঠ শেষে চতুর্থ তকবির দিতে হয় এবং তার পরপরই প্রথমে ডানে ও পরে বামে সালাম ফেরাতে হয়। ডান দিকে সালাম ফিরিয়ে ডান হাত ও বাম দিকে সালাম ফিরিয়ে বাম হাত ছাড়া যায়, তবে উভয় দিকে সালাম ফিরিয়ে উভয় হাত একসঙ্গে ছাড়াটাই উত্তম।গায়েবী জানাযাসম্পাদনা

মরদেহের অবর্তমানে যে জানাযা তাকে "গায়েবী জানাযা" বলা হয়। কিন্ত ইসলামী শরিয়তের বিধান মোতাবেক ইমামের অবস্থানের ঠিক আগে মরদেহ রেখে জানাযার নামায আদায় করতে হবে। সুতরাং মৃতদেহের সাক্ষাৎ উপস্থিতি ব্যতিরেকে জানাযার নামায আদাযের শরিয়তসম্মত সুযোগ নাই।

জানাযা নামাযের নিয়ত

نَوَيْتُ اَنْ اُؤَدِّىَ لِلَّهِ تَعَا لَى اَرْبَعَ تَكْبِيْرَاتِ

صَلَوةِ الْجَنَا زَةِ فَرْضَ الْكِفَايَةِ وَالثَّنَا ءُ لِلَّهِ

تَعَا لَى وَالصَّلَوةُ عَلَى النَّبِىِّ وَالدُّعَا ءُلِهَذَا

الْمَيِّتِ اِقْتِدَتُ بِهَذَا الاِْمَامِ مُتَوَجِّهًا اِلَى جِهَةِ

الْكَعْبَةِ الشَّرِ يْفَةِ اَللَّهُ اَكْبَرُ

উচ্চারণঃ

নাওয়াইতু আন উয়াদ্দিয়া লিল্লাহে তায়ালা আরবাআ তাকবীরাতে ছালাতিল জানাযাতে ফারযুল কেফায়াতে আচ্ছানাউ লিল্লাহি তায়ালা ওয়াচ্ছালাতু আলান্নাবীয়্যে ওয়াদ্দোয়াউ লেহাযাল মাইয়্যেতে এক্কতেদায়িতু বিহাযাল ইমাম মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতে আল্লাহু আকবার।

অনুবাদঃ

আমি আল্লাহর উদ্দেশ্যে জানাযা নামাজের চারি তাকবীর ফরযে কেফায়া কেবলামুখী হয়ে ইমামের পিছনে আদায় করার মনস্থ করলাম। ইহা আল্লাহু তায়ালার প্রশংসা রাসূলের প্রতি দরূদ এবং মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া (আর্শীবাদ) আল্লাহ মহান।

নিয়তের মধ্যে অন্যান্য জামাতের নামাযের নিয়তের ন্যায় ইমাম তাহার অতিরিক্ত খাছ কালাম (আনা ইমামুল লেহেজাল কউম) এবং মোক্তাদিগণ তাহাদের অতিরিক্ত খাছ কালামটি পাঠ করিলে। (একতেদাইতুল বেহাযালইমাম) আর নিয়তের ‘লেহাযাল মাইয়্যেতে’ শব্দটি কেবল পুরুষ লাশের বেলায় বলিতে হইবে, কিন্তু স্ত্রী লাশ হইলে ঐ শব্দটির স্থলে ‘লেহাযিহিল মাইয়্যেতে’ বলিতে হইবে।

নিয়তের পরে ছানা

سُبْحَا نَكَ اَللَّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ وَتَبَارَكَ اسْمُكَ وَتَعَا

لَى جَدُّكَ وَجَلَّ ثَنَاءُكَ وَلاَ اِلَهَ غَيْرُكَ

উচ্চারণঃ

সুবহা-নাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা, ওয়া তাবারা কাসমুকা ওয়া তায়ালা জাদ্দুকা, ওয়া জাল্লা ছানাউকা ওয়া লা-ইলাহা গাইরুকা।

অনুবাদঃ

হেআল্লাহআমরাতোমারপবিত্রতার গুণগান করিতেছি। তোমার নাম মংগলময় এবংতোমারস্তুতি অতি শ্রেষ্ঠ,তুমিব্যতীত আর কেহই উপাস্য নাই।

ছানার পরে তাকবীর বলিয়া তাশাহুদের পরের দরূদ পড়িতে হয়।

দুরুদ শরীফ

اَللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى اَلِ مُحَمَّدٍ كَمَا

صَلَّيْتَ عَلَى اِبْرَا هِيْمَ وَعَلَى اَلِ اِبْرَ اهِيْمَ اِنَّكَ

حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ- اَللَّهُمَّ بَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى

اَلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى اِبْرَا هِيْمَ وَعَلَى

اَلِ اِبْرَا هِيْمَ اِنَّكَ حَمِيْدٌمَّجِيْدٌ

উচ্চারনঃ

আল্লাহুম্মা সাল্লিআলা মুহাম্মাদিঁ ওয়া আলা আলি মুম্মাদিন কামা সাল্লাইতা আলাইব্রাহীমাওয়া আলা আলি ইব্রাহীমা ইন্নাকা হামিদুম্মাজীদ। আল্লাহুম্মা বারিক আলা মুহাম্মাদিঁ ওয়া আলা আলিমুহাম্মাদিনকামা বারাকতা আলা ইব্রাহীমা ওয়া আলা আলি ইব্রাহীমা ইন্নাকা হামীদুম্মাজীদ।

অনুবাদঃ

যেআল্লাহ!মুহাম্মদ(সাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং তাঁহার বংশধরগণের উপর ঐরূপ আশীর্বাদ অবতীর্ণ কর যেইরূপ আর্শীবাদহযরত ইব্রাহিম (আঃ)এবং তাঁহার বংশধরগণের উপর অবতীর্ণ করিয়াছ। নিশ্চয়ই তুমি প্রশংসা ভাজন এবংমহামহিম। হে আল্লাহ!মুহাম্মদ(সাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং তাঁহার বংশধরগণের উপর সেইরূপ অনুগ্রহ কর যে রূপ অনুগ্রহ ইব্রাহীম (আঃ) এবং তাঁহার বংশরগণের উপর করিয়াছ। নিশ্চয়ই তুমি প্রশংসা ভাজন এবংমহামহিম।

জানাযার দোয়া

اَلَّهُمَّ اغْفِرْلحَِيِّنَاوَمَيِّتِنَا وَشَاهِدِنَا وَغَائِبِنَا

وَصَغِيْرِنَا وَكَبِيْرِنَا وَذَكَرِنَا وَاُنْثَا نَا اَللَّهُمَّ مَنْ

اَحْيَيْتَهُ مِنَّا فَاَحْيِهِ عَلَى الاِْسْلاَمِ وَمَنْ

تَوَفَّيْتَهُ مِنَّا فَتَوَفَّهُ عَلَىالاِْيمَانِ بِرَحْمَتِكَ

يَاَارْ حَمَالرَّحِمِيْنَ

উচ্চারণঃ

আল্লাহুম্মাগফিরলি হাইয়্যেনা ওয়া মাইয়্যিতিনা ওয়া শাহীদিনা ওয়া গায়িবিনা ও ছাগীরিনা ও কাবীরিনা ও যাকারিনা ও উনছানা। আল্লাহুম্মা মান আহইয়াইতাহু মিন্না ফাআহয়িহি আলালইসলামীওয়া মান তাওয়াফ ফাইতাহু মিন্না ফাতাওয়াফ ফাহু আলাল ঈমান বেরাহমাতিকা ইয়া আর হামার রাহীমিন।

অনুবাদঃ

হেআল্লাহ্আমাদের জীবিত ও মৃত উপস্থিত ও অনুপস্থিত বালকও বৃদ্ধ পুরুষ ও স্ত্রীলোকদিগকে ক্ষমা কর। হে আল্লাহ আমাদের মধ্যে যাহাদিগকে তুমি জীবিত রাখ তাহাদিগকে মৃত্যুর মুখে পতিত কর। তাহাদিগকে ঈমানের সাথে মৃত্যু বরণ করাইও।

লাশ যদি নাবালক ছেলে হয় তবে নিচের দোয়া পড়তে হবে

اَللَّهُمَّ اجْعَلْهُ لَنَا فَرْطًاوْ اَجْعَلْهُ لَنَا اَجْرً

اوَذُخْرًا وَاجْعَلْهُ لَنَا شَا فِعًة وَمُشَفَّعًا-

উচ্চারণঃ

আল্লাহুম্মাজ আলহুলানা ফারতাঁও ওয়াজ আলহুলানা আজরাও ওয়া যুখরাঁও ওয়াজ আলহুলানা শাফিয়াও ওয়া মুশাফ্ফায়ান।

অনুবাদঃ

হে আল্লাহ! উহাকে আমাদের জন্য অগ্রগামী কর ও উহাকে আমাদের পুরস্কার ও সাহায্যের উপলক্ষ কর এবং উহাকেআমাদেরসুপারিশকারী ও গ্রহনীয় সুপারিশকারী বানাও।

লাশ যদি নাবালেগা মেয়ে হয় তবে নিচের দোয়া পড়তে হবে।

اَللَّهُمَّ اجْعَلْهَ لَنَا فَرْطًا وَاجْعَلْهَ لَنَا اَجْرً

اوَذُخْرًا وَاجْعَلْهَ لَنَا شَا فِعً وَمُشَفَّعًا

উচ্চারণঃ

আল্লাহুম্মাজ আলহা লানা ফারতাঁও ওয়াজ আলহা লানা আজরাঁও ওয়া যুখরাঁও ওয়াজ আলহা লানা শাফিয়াও ওয়া মুশাফ্ফায়ান।

অনুবাদঃ

হে আল্লাহ! ইহাকে আমাদের জন্য অগ্রগামী কর ও ইহাকেআমাদেরপুরস্কার ও সাহায্যের উপলক্ষ কর। এবং ইহাকেআমাদেরসুপারিশকারী ও গ্রহনীয় সুপারিশকারী বানাও। দুইহাত দুইপাশে ঝুলাইয়া ইমাম সাহেব ডানে এবং বামে ছালাম ফিরাইবে।

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

নামাজের গুরুত্ব

নামায সব এবাদতের মধ্যে শ্রেষ্ঠ এবাদত হওয়ার পেছনে অনেক গুলো কারন রয়েছে । প্রথমতঃ নামাযরত অবস্থায় কোন পার্থিব কাজ করা যায় না । কেননা...

Popular Posts