ইশরাক্বের নামাজ

ইশরাক্বের নামায

সূর্য যখন গাছের উপর উঠিয়া যায় এবং সূর্যের রং পরিস্কার হইয়া যায়, তখন ইশরাক্বের ওয়াক্ত শুরু হয়। সূর্যোদয়ের ২৩ থেকে আধা ঘন্টা পর হইতে শুরু হয়। ২ বা ৪ রাক'আত নামাজ পড়া সুন্নাত। ইহাকে ইশরাক্বের নামাজ বলে।

এশরাক্বের নামাজ দিয়ে রাসূলুল্লাহ (সা.) দিন শুরু করতেন। এ নামাজের ওয়াক্ত ফজরের কমপক্ষে ২৩ থেকে আধা ঘন্টা পর হইতে শুরু হয়ে ২ ঘণ্টা অবধি থাকে। এ নামাজ পড়া সুন্নাত । নিয়ম হলো ফজরের নামাজের পর জায়নামাজ থেকে না ওঠে তাসবিহ-তাহলিল, দোয়া-দরুদ, জিকির-আজকার ইত্যাদিতে রত থাকা এবং ওয়াক্ত হলেই এ নামাজ পড়ে নেয়া। অবশ্য জায়নামাজ ছেড়ে ওঠে গেলেও এ নামাজ পড়া যায়, তবে সওয়াব আগের মতো হবে না। আসিম বলেন, আমরা আলী (রা.) কে রাসূলুল্লাহ (সা.) এর নফল নামাজ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) এর মতো কার শক্তি আছে? আমরা বললাম, আপনি তাঁর আমল সম্পর্কে আমাদের বলুন। আমরা আমল করতে চেষ্টা করব। তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ফজর পড়ে কিছু সময় অপেক্ষা করতেন। যখন সূর্য উপরে উঠত, উপরে ওঠার পরিমাণ ছিল আসরের ওয়াক্তের ন্যায়, তখন তিনি দুই রাকাত নামাজ পড়তেন। (বায়হাকি)। শাহ আবদুল আজিজ দেহলভি (রহ.) এর মতে, এশরাকের নামাজ দুই রাকাত। ২ বা ৪ রাক'আত নামাজ পড়া সুন্নাত ।

এশরাক্বের নামাজের মধ্যে দুই ধরনের ফজিলত নিহিত আছে

প্রথমত,

এ নামাজ পড়ার জন্য ফজরের পরে জায়নামাজে বসে থাকতে হয়। এ সময়টুকু অত্যন্ত বরকতময়।

দ্বিতীয়,

এশরাক্বের নামাজ

আলী (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ আদায় করে স্বীয় স্থানে বসে থাকে, তার জন্য ফেরেশতারা ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকেন। তারা এভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করেন, হে আল্লাহ, তাকে ক্ষমা করুন; হে আল্লাহ, তার প্রতি দয়া করুন। আর যে নামাজের অপেক্ষায় থাকে তার জন্যও ফেরেশতারা ক্ষমা প্রার্থনায় রত থাকেন। তারা এভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করেন, হে আল্লাহ, তাকে ক্ষমা করুন; হে আল্লাহ, তার প্রতি দয়া করুন। (মুসনাদে আহমদ)। হাদিস শরিফে বর্ণিত এশরাক্বের নামাজ আদায়ের বিভিন্ন ফজিলত।

একটি নফল হজ ও ওমরার সওয়াব, এ সম্পর্কে আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি জামাতের সঙ্গে ফজরের নামাজ আদায় করে এরপর বসে থেকেই সূর্য না ওঠা পর্যন্ত জিকির-আজকারে নিমগ্ন থাকে, অতঃপর দুই রাকাত নামাজ আদায় করে তার জন্য একটি হজ ও ওমরার সওয়াব রয়েছে। (তিরমিজি : ৫৮৬)।

জাহান্নাম থেকে নিষ্কৃতি। আলী (রা.) এর বর্ণিত অপর এক হাদিসে এসেছে, 'যে ব্যক্তি ফজরের সালাত আদায় করল এবং বসে বসে সূর্যোদয় পর্যন্ত আল্লাহর জিকির করল, অতঃপর দুই রাকাত বা চার রাকাত নামাজ আদায় করল, আগুন তাকে স্পর্শ করবে না। (বায়হাকি)।

মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে সেদিনের সব কাজের ফয়সালা করে দেয়া হয়। হাদিসে কুদসিতে এসেছে, আল্লাহ বলেন, হে আদম সন্তান, দিনের প্রথম ভাগে আমার জন্য চার রাকাত নামাজ নিশ্চিত করো, আমি দিনের শেষভাগে তোমার জন্য যথেষ্ট হয়ে যাব। (মুসনাদে আহমদ, খ- ২, পৃ. ৬১২)।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Thanks for your comment

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

নামাজের গুরুত্ব

নামায সব এবাদতের মধ্যে শ্রেষ্ঠ এবাদত হওয়ার পেছনে অনেক গুলো কারন রয়েছে । প্রথমতঃ নামাযরত অবস্থায় কোন পার্থিব কাজ করা যায় না । কেননা...

Popular Posts