আল্লাহতা'লার কাজের নেকীর বদলা দশ গুন। তাইত তিনি স্বয়ং ইরশাদ ফরমায়েছেন--
উচ্চারনঃ মান যা'আ বিল হাসানাতি ফালাহু আশারু আমসা'লেহা।
অর্থাৎ- যে ব্যক্তি একটি ছাওয়াবের কাজ করবে, তার জন্য এর দশগুণ বদলা রয়েছে । অতএব, নামায পড়ার বেলায় পাঁচ ওয়াক্ত হলেও সওয়াবে ক্ষেত্রে পঞ্চাশ ওয়াক্তের সমান ।
পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের সময় এই জন্য নির্দিষ্ট করা হয়েছে যে, মু'মিন ব্যক্তির প্রত্যেক অবস্থা আল্লাহ্বর যিকিরের মাধ্যমে আরম্ভ হওয়া প্রয়োজন । যার সূচনা ভাল আশা করা যায় তার সমাপ্তিও একই রকম হওয়া স্বাভাবিক । এ জন্য শিশু জন্ম গ্রহণ করলে তার কানে আযান দেয়া হয় । জন্ম একাটা জীবনের সূচনা । যেহেতু চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে মানুষের পাঁচ অবস্থা হয় । সকাল বেলা দিনের সূচনা । মনে হয় যেন নতুন জীবনের সূচনা, তাই প্রথমে ফজরের নামায পড়বে । যোহরের সময় খাওয়া-দাওয়া এবং আরাম ও অবকাশের সময় দিনের দ্বিতীয় অংশের সূচনা । তাই এ সময় যোহরের নামায পড়বে । আছরের সময় কর্মচারীরা তাদের কাজ কর্ম শেষে অবকাশ নেয় এবং ভ্রমণে বের হয় ও ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে অবকাশের সময় এসে যায় । তাই এ সময় নামায আদায় করা বাঞ্জনীয় । মাগরিবের সময় রাতের সূচনা । তাই এ সময় নামায আদায় করা কর্তব্য । এশার সময় জাগরণের সমাপ্তিকালীন সময় । ঘুম- যা এক ধরনের মৃত্যু । ইহার সূচনা হওয়ার সাথে সাথে নামায পড়ে শয়ন করবে । মনে হয় যেন এটাই শেষ নিদ্রা । এরপর কিয়ামতের সময় জাগরিত হবে ।
আমরা জানি বিজ্ঞ চিকিৎসকের ব্যবস্থা পত্রে ঔষধের ধরণ ও ভিন্ন ভিন্ন হয় । নামাযও ভিন্ন ভিন্ন ঔষধের ন্যায় । যে তালার মধ্যে তিন দাঁত বিশিষ্ট চাবির প্রয়োজন, ইহা চার দাঁত বিশিষ্ট চাবি দ্বারা খোলা যাবে না । এই নামায সমূহ বিভিন্ন পয়গাম্বরের স্মারক । হযরত আদম (আ.) পৃথিবীতে এসে রাত দেখতে পেলেন এবং ভয় পেয়ে গেলেন । সকাল হওয়ার সাথে সাথে শোক্রানা স্বরুপ দু'রাকাত নামায আদায় করেন । ইহা হচ্ছে ফজরের নামায । হযরত ইব্রাহীম (আ.) প্রিয় ছেলের কুরবানীর পরিবর্তে দুম্বা পেয়েছিলেন । ছেলের প্রান বেঁচে যাওয়ায় এবং কুরবানী আল্লাহর দরবারে গ্রহণীয় হওয়ায় চার রাকাত শোক্রানা নামায আদায় করেন । ইহা হচ্ছে যোহরের নামায । হযরত উযাইর (আ.) একশত বছর পর জীবিত হয়ে চার রাকাত শোক্রানা নামায পড়েন , এটা হচ্ছে আছরের নামায । কেননা, তিনি ঐ সময় জীবিত হয়েছিলেন । হযরত দাইদ (আ.)-এর তওবা কব্যল হওয়াতে শোক্রানা হিসেবে সূর্য অস্ত যাওয়ার পরে চার রাকাত নামাযের নিয়ত করেছেন, কিন্ত তিনি তিন রাকাত আদায় করে থেমে গেছেন; এটা মাগরিবের নামায । আমাদের প্রিয় নবী (স.) এশার নামায আদায় করেছেন । সফরের মধ্যে এই জন্য কসর পড়া হয় যে, মে'রাজের সফরে নামায দুই দু'রাকাত ফরজ হয়েছিল । কোন কোন নামায পরবর্তী সময়ে বর্ধিত করা হয়েছে (আল হাদীস) । যখন তোমরা সফর করবে, তখন মে'রাজের সফরের কথা স্মরণ করবে । এ জন্য পরবর্তী দু'রাকাতে কিরাত ফরয নয় এবং ইমাম এতে আস্তে আস্তে কিরাত পড়তে থাকেন যাতে একথা স্মরণ থাকে যে, পূর্ববর্তী দু'রাকাত প্রথমে ফরয হয়েছিল এবং পরবর্তীতে দু'রাকাত বাড়ানো হয়েছে । যেহেতু তিনের অর্হেক সঠিক হয় না, এ জন্য এতে কসরও হয় না ।
কেরাত আস্তে পড়া হয় এ জন্য যে, ইসলামের প্রাথমিক যুগে কাফিরদের আধিক্য ছিল । এরা কুরআন তেলাওয়াত শুনে আল্লাহ তা'আলা, হযরত জিব্রাইল (আ.) এবং হুজুর পাক (স.)- এর শানে বিদ্রপ করত । যোহর এবং আসরের নামাযের সময় এরা ঘুরা ফেরা করে থাকে । মাগরিবের সময় খাওয়া দাওয়ার লিপ্ত থাকে । এশার সময় শুনে শুয়ে পড়ে এবং ফজরের সময় নিদ্রাবিভূত থাকে । এ কারনে যোহর এবং আছরের নামাযে আস্তে আস্তে কুরআন পড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । আল্লাহ তা'আলা এরশাদ ফরমান-
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Thanks for your comment